Business News

Displaying 141-150 of 172 results.

অধিকারমূলক শেয়ার ছাড়বে বিডিফিন্যান্স

অধিকারমূলক শেয়ার ছাড়বে বিডিফিন্যান্স

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত আর্থিক খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্টকে (বিডিফিন্যান্স) অধিকারমূলক বা রাইট শেয়ার ইস্যুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। সভা শেষে বিএসইসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
বিএসইসি জানিয়েছে, বাংলাদেশ ফিন্যান্স অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট তাদের বিদ্যমান পাঁচটি শেয়ারের বিপরীতে তিনটি অধিকারমূলক শেয়ার ইস্যু করবে। কোম্পানিটি বাজারে তিন কোটি ৯০ লাখ আট হাজার ৫১৫টি শেয়ার ছেড়ে প্রায় ৩৯ কোটি ৮৫ হাজার টাকা সংগ্রহ করবে। প্রতিটি শেয়ারের বিক্রয়মূল্য নির্ধারিত হয়েছে ১০ টাকা, অর্থাৎ কোনো অধিমূল্য বা প্রিমিয়াম ছাড়া শুধু অভিহিত মূল্যে এই অধিকারমূলক শেয়ার ইস্যু করা হবে।
বিএসইসির তথ্য অনুযায়ী, বাজার থেকে সংগৃহীত অর্থে কোম্পানিটি মূলধনের পর্যাপ্ততা নিশ্চিত করবে। এটির শেয়ারের ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছে অ্যালায়েন্স ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস।
বিএসইসির গতকালের সভায় জ্বালানি খাতের তালিকাভুক্ত নয়, এমন একটি কোম্পানিকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। সেটি হলো প্রিমিয়ার এলপি গ্যাস।
বিএসইসি বলছে, কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন ছাড়াই ২০০১ ও ২০০২ সালে দুই দফায় মূলধন বাড়িয়ে সিকিউরিটিজ আইন ভঙ্গ করেছে।
সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্সের ২এ(২)(এ) অনুযায়ী, বাংলাদেশে অভ্যন্তরে গঠিত যেকোনো কোম্পানির মূলধন বৃদ্ধি করতে হলে বিএসইসির অনুমোদন লাগে। কিন্তু প্রিমিয়ার এলপি প্রথম দফায় নয় কোটি ৩৮ লাখ থেকে মূলধন বাড়িয়ে প্রায় ২৫ কোটি এবং দ্বিতীয় দফায় তা আরও বাড়িয়ে প্রায় ৪৪ কোটি টাকায় উন্নীত করে। কিন্তু মূলধন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে কোনোবারই কোম্পানিটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদন নেয়নি।
এ ছাড়া বিএসইসি তালিকাভুক্ত বিমা খাতের কোম্পানি জনতা ইনস্যুরেন্সের অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু পরিবর্তনের অনুমতি দিয়েছে। কোম্পানিটি সম্প্রতি তাদের অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা থেকে ১০ টাকায় রূপান্তরের অনুমোদন চেয়ে বিএসইসির কাছে আবেদন করে। নিয়ন্ত্রক সংস্থার সিদ্ধান্তে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সব প্রতিষ্ঠানের অভিহিত মূল্য ২০১১ সালের ৪ ডিসেম্বর থেকে অভিন্ন করা হয়। কিন্তু আইনি জটিলতার কারণে সে সময় জনতা ইনস্যুরেন্সের শেয়ারের অভিহিত মূল্য পরিবর্তন করা সম্ভব হয়নি।

prothom-alo: অক্টোবর ০৩, ২০১৩


তদন্তেও থামছে না কিছু কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি

তদন্তেও থামছে না কিছু কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি

 

পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে (বিএসইসি) নেয়া পদক্ষেপও কয়েকটি কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি থামাতে পারছে না। পাশাপাশি ডিএসই কর্তৃপক্ষের লেনদেন স্থগিত করাও কোনো ফল বয়ে আনছে না। গতকাল নিয়ে তৃতীয়বারের মতো লেনদেন স্থগিত করার পরও ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে আসে রহিমা ফুড। এরই মধ্যে কোম্পানির পক্ষ থেকেও বিনিয়োগকারীদের সাবধান করা হলেও তার কোনো প্রভাব নেই লেনদেনে। প্রতিদিনই টানা মূল্যবৃদ্ধি ঘটে চলেছে কোম্পানিটির। একইভাবে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় আরো রয়েছে লিগেসি ফুটওয়্যার। এ দিকে রোববার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জর (ডিএসই) প্রধান সূচকটি চার হাজার পয়েন্টের নিচে নামার পর এবার লেনদেন নেমে এসেছে ৩০০ কোটি টাকার নিচে। গতকাল দেশের প্রধান এ পুঁজিবাজারটিতে লেনদেন হয় ২৭১ কোটি টাকা। এটি ডিএসইর দেড় মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ লেনদেন। ১২ আগস্টের পর ডিএসইর লেনদেন আর এ পর্যায়ে নামেনি। চট্টগ্রামেও লেনদেন নেমে আসে ২৪ কোটি টাকায়। গত বৃহস্পতিবার ১২টি কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ ক্ষতিয়ে দেখতে ডিএসইকে নির্দেশ দেয় পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। পরবর্তী কার্যদিবসে এদের মধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানির মূল্যবৃদ্ধি থেমে গেলেও মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকে কয়েকটির। রোববার ডিএসই কর্তৃপক্ষ এ তালিকায় থাকা রহিমা ফুডের লেনদেন স্থগিত করে। এর পরও কোম্পানিটি সেদিন ডিএসইর শীর্ষ ১০ মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে। গতকাল সোমবার একই ঘটনা ঘটে। লেনদেনের মাঝপথে আবারো লেনদেন স্থগিত করা হয় কোম্পানিটির। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয়নি। গতকালও ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল কোম্পানিটি। এ তালিকায় আরো ছিল লিগেসি ফুটওয়্যার। এ ছাড়া চট্টগ্রাম স্টকে লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে লিগেসি। ইতোমধ্যে দু’টি কোম্পানিই ডিএসইর ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কোম্পানির কোনো সংবেদনশীল তথ্য না থাকার ঘোষণা দেয়। তার পরও থামছে না এদের লেনদেন ও মূল্যবৃদ্ধি। বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, পুঁজিবাজারের প্রভাবশালী মহলের কেউ এ কারসাজির সাথে জড়িত না থাকলে অন্যরা এ ধরনের সাহসী হতে পারত না। এ দিকে সূচকের চেয়েও লেনদেনের অবনতিকে গুরুত্বসহকারে নিচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। এর আগে বিভিন্ন সময় বাজারগুলোয় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এ বছরের শুরুতে ডিএসইর লেনদেন নেমে এসেছিল ১০১ কোটি টাকায়। একই সময় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে লেনদেন নেমে আসে ১১ কোটি টাকায়। বিনিয়োগকারীরা দীর্ঘদিন বাজার থেকে মুখ ফিরিয়ে ছিলেন। পরে এপ্রিল মাস থেকেই আবার লেনদেন বাড়তে শুরু করে বাজারগুলোতে। জুলাই মাসে ডিএসইর লেনদেন পৌঁছে প্রায় ১৩ শ’ কোটি টাকায়। অবশ্য সে সময় বাজেট ও সুদ মওকুফ স্কিমের মতো কিছু প্রণোদনা বাজারকে গতিশীল করে তোলে। এখন বাজার আবার সেদিকে এগিয়ে যাচ্ছে কি না তা নিয়ে শঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। কারণ এ পর্যায়ে অনেকটা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়ে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও। বাজার হয়ে পড়ে অভিভাবকহীন। তারা মনে করেন, আবার এ অবস্থা সৃষ্টি হলে বিনিয়োগকারীদের আবার বাজারে ফেরত আনা কঠিন হয়ে পড়বে। বিনিয়োগকারীদের সবচেয়ে বড় শঙ্কা সামনের দিনগুলোর রাজনৈতিক অবস্থা কেমন যাবে তা নিয়ে। আগামী ২৫ অক্টোবরের পর দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ কোন দিকে মোড় নেয় এটাই এখন পুঁজিবাজারে সবার আলোচনার বিষয়। আর বরাবরই রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করে থাকে। এখন কোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি ছাড়া যেখানে দিনের পর দিন বাজারগুলোতে মন্দা যাচ্ছে সেখানে অস্থির পরিস্থিতিতে তা কেমন যাবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন সংশ্লিষ্ট সবাই। রোববারের বড় ধরনের দরপতনের পর গতকাল বাজার পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে এমন প্রত্যাশা নিয়ে বিনিয়োগকারীরা লেনদেনে অংশ নিলেও লেনদেনের শুরুতেই হোঁচট খায় তাদের প্রত্যাশা। ঢাকায় ডিএসইএক্স সূচকের তিন হাজার ৯৬৮ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু হলেও প্রথম এক ঘণ্টায় সূচকটি নেমে আসে তিন হাজার ৯২৯ পয়েন্টে। এ সময় ৩৯ পয়েন্ট অবনতি ঘটে সূচকের। পরে দরপতন থেমে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার। বেলা ১টার দিকে সূচকটি আবার তিন হাজার ৯৫৮ পয়েন্টে উঠে যায়। কিন্তু এ অবস্থা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। লেনদেনের শেষপর্যায়ে বিক্রয়চাপ আবার বৃদ্ধি পেলে তিন হাজার ৯৩৭ পয়েন্টে স্থির হয় ডিএসই সূচক। এভাবে ঢাকা শেয়ারবাজারের প্রধান সূচকটির ৩১ পয়েন্ট অবনতি ঘটে। ডিএসই-৩০ সূচক কমে যায় ৮ পয়েন্ট। দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের যথাক্রমে ৮৮ ও ৫৬ পয়েন্ট অবনতি ঘটে। দুই বাজারে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানিই গতকাল দরপতনের শিকার হয়। ঢাকায় ২৮৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হলেও এদের মধ্যে দাম বাড়ে মাত্র ৫৭টির। ২১৫টি কোম্পানির ফান্ড এ বাজারে দর হারায়। অপরিবর্তিত ছিল ১৭টির দর। অপর দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২১৩টি সিকিউরিটিজের মধ্যে মাত্র ৩১টির দাম বাড়লেও দর হারায় ১৬৬টি। ১৬টির দর ছিল অপরিবর্তিত। ডিএসইর মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল রহিমা ফুড। ৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ দাম বাড়ে কোম্পানিটির। এ ছাড়া এলআর গ্লোবাল ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৯.৫৮, ফাইন ফুড ৭.৫৬ ও লিগেসি ফুটওয়্যারের ৪.২০ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অপর দিকে দিনের সর্বোচ্চ দর হারায় মডার্ন ডাইং। ৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ দরপতন ঘটে কোম্পানিটির। এ ছাড়া ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক ৯.৭০, জুট স্পিনার্স ৮.৫৪, দেশ গার্মেন্টস ৮.৩৪ ও মুন্নু স্টাফলারের ৮.০৫ শতাংশ দরপতন হয়।

dailynayadiganta:  অক্টোবর ০১, ২০১৩


রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় বাড়ল

ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় এক মাস বাড়িয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)।

এর ফলে আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রিটার্ন জমা দেওয়া যাবে।
 
সোমবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানায় এনবিআর।
 
নিয়ম অনুযায়ী, সোমবার ছিল রিটার্ন (আয়কর বিবরণী) জমা দেওয়ার  শেষ দিন।
 
ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ সংশ্লিষ্ট মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সময় বাড়ানো হলো।
 
রাজস্ব বোর্ডের আয়কর নীতি বিভাগের সদস্য সৈয়দ আমিনুল করিম সমকালকে জানান, ঈদ-পূজা মিলিয়ে বেশ কিছু দিন ছুটি থাকবে। এ ছাড়া কর বিভাগের সম্প্রসারণ ও পুনর্গঠনের কারণে বেশির ভাগ কর অফিসের স্থান বা অধিক্ষেত্র পরিবর্তন হয়েছে। রিটার্ন জমার জন্য করদাতাদের প্রস্তুতির বিষয় রয়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় রেখেই এক মাস সময় বাড়ানোর নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে।
 
সোমবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, এনবিআরের আয়কর অনুবিভাগের  সাম্প্রতিক পুনর্গঠনের কারণে অধিকাংশ করদাতার আয়করসংক্রান্ত অধিক্ষেত্র পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি করদাতাদের সুবিধার্থে ই-টিআইএন কার্যক্রম চালু করা হয়েছে। অনলাইনে নতুন এ পদ্ধতি সম্পর্কে অভ্যস্ত হতে আরও সময়ের প্রয়োজন হবে করদাতাদের। এসব বিষয় বিবেচনা করে করদাতাদের সুবিধার্থে ব্যক্তিশ্রেণীর আয়কর রিটার্ন জমার সময় আগামী ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
 
এনবিআরের এক কর্মকর্তা জানান, সোমবার পর্যন্ত ২ লাখেরও কম রিটার্ন জমা পড়েছে, যা মোট রিটার্নের মাত্র ১০ শতাংশ। গত করবর্ষে রিটার্ন জমা পড়েছিল প্রায় ১২ লাখ। এর বিপরীতে সরকারি কোষাগারে কর আদায় হয়েছে ১ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। এ বছর রিটার্নের সংখ্যা বাড়বে বলে আশা করছে এনবিআর। কারণ, অনলাইন পদ্ধতি সম্পর্কে করদাতাদের আগ্রহ ক্রমাগত বাড়ছে।
 
১ জুলাই চালু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত ৫ লাখের বেশি করদাতা অনলাইনে নিবন্ধন নিয়েছেন। এর মধ্যে নতুন ৯০ হাজার।

samakal:  অক্টোবর ০১, ২০১৩


শেয়ারবাজারে দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

শেয়ারবাজারে দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন লেনদেন

শেয়ারবাজারে লেনদেন কমছেই। সোমবার দেশের দুই শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই) মিলে ২৯৫ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এরমধ্যে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ২৭১ কোটি টাকা এবং সিএসইতে ২৪ কোটি টাকা। ডিএসইর এ লেনদেন গত দেড় মাসের মধ্যে সর্বনিু। এর আগে গত ১২ আগস্ট ডিএসইতে ১৬২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। এছাড়া উভয় শেয়ারবাজারেই সোমবার মূল্যসূচক ও বাজারমূলধন কমেছে। এরমধ্যে ডিএসইর সূচক কমেছে ৩১ পয়েন্ট এবং সিএসইর সূচক কমেছে ৫৬ পয়েন্ট। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বাজারে তারল্য প্রবাহ কমছে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে- সূচকের নিুমুখী প্রবণতা দিয়ে সোমবার ঢাকার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয়। আর দিনের শেষ সময় পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল। দিনশেষে সোমবার ২৮৯টি প্রতিষ্ঠানের ৬ কোটি ৯৬ লাখ ২৪ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৭১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা। আগের দিনের চেয়ে যা ৬০ কোটি ১৭ লাখ টাকা কম। এরমধ্যে দাম বেড়েছে ৫৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের, কমেছে ২১৫টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। ডিএসইর ব্রডসূচক আগের দিনের চেয়ে ৩১ দশমিক ১০ পয়েন্ট কমে ৩ হাজার ৯৩৭ দশমিক ৬৮ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএস-৩০ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৮ দশমিক ২৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৪০ দশমিক ৫২ পয়েন্টে নেমে এসেছে। ডিএসইর বাজারমূলধন আগের দিনের চেয়ে কমে দুই লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে। খাতভিত্তিক বিবেচনায় সোমবার জীবন বীমার শেয়ারের দাম ২ দশমিক ১৮ শতাংশ কমেছে। এছাড়া সাধারণ বীমার শেয়ারের দাম কমেছে ২ দশমিক ১০ শতাংশ, বস্ত্র খাতের ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং প্রকৌশল খাতের শেয়ারের দাম কমেছে ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য ও সমজাতীয় খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৯৩ শতাংশ এবং টেলিকম খাতের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ। শীর্ষস্থানীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির মতে, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বিনিয়োগকারীদের আস্থা সংকট রয়েছে। ফলে তারা নতুন করে বিনিয়োগ করছেন না। এছাড়া কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ বাজার থেকে টাকা তুলছেন। ফলে বাজারে কিছু তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
সিএসই : চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সোমবার ২১৩টি প্রতিষ্ঠানের ৭৪ লাখ ৯ হাজার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার মোট মূল্য ২৪ কোটি ৯ লাখ টাকা। আগের দিনের চেয়ে যা ৬ কোটি টাকা কম। এরমধ্যে দাম বেড়েছে ৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের, কমেছে ১৬৬টি এবং অপরিবর্তিত ছিল ১৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে ৫৬ দশমিক ৪১ পয়েন্ট কমে ৭ হাজার ৬৭৪ দশমিক ৬ পয়েন্টে নেমে এসেছে। সিএসই-৩০ মূল্যসূচক আগের দিনের চেয়ে কমে এক লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকায় নেমে এসেছে।
শীর্ষ দশ কোম্পানি : সোমবার ডিএসইতে যেসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার বেশি লেনদেন হয়েছে সেগুলো হল- স্কয়ার ফার্মা ২০ কোটি ৬১ লাখ টাকা, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল ১০ কোটি ১৫ লাখ টাকা, আরগন ডেনিমস ১০ কোটি ২ লাখ টাকা, সিএমসি কামাল ৮ কোটি ৫১ লাখ টাকা, গ্রামীণফোন ৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা, কন্টিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স ৬ কোটি ৫৫ লাখ টাকা, আরএন স্পিনিং ৫ কোটি ৪৩ লাখ টাকা, পদ্মা অয়েল ৪ কোটি ৯৫ লাখ টাকা, বাংলাদেশ শিপিং কর্পোরেশন ৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা এবং ইউনাইটেড এয়ারওয়েজের ৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।
ডিএসইতে সোমবার যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি বেড়েছে সেগুলো হল- রহিমা ফুড, এলআর গ্লোবাল মিউচুয়াল ফান্ড ১, ফাইন ফুডস, লিগেসি ফুটওয়্যার, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, তাক্কাফুল ইন্স্যুরেন্স, এনএলআই প্রথম মিউচুয়াল ফান্ড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, এফবিএফ আইএফ এবং এনসিসি ব্যাংক মিউচুয়াল ফান্ড। অন্যদিকে যে সব প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বেশি কমেছে সেগুলো হল- মডার্ন ডায়িং, আইএসএন লিমিটেড, জুট স্পিনার্স, দেশ গার্মেন্টস, মুন্নু স্টাফলার, ইনটেক অনলাইন, এপেক্স স্পিনিং, সাভার রিফ্রেক্টরিজ, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স এবং পূরবী জেনারেল ইন্স্যুরেন্স।

যুগান্তর: ০১ অক্টোবর, ২০১৩

নতুন নোট ২ অক্টোবর থেকে

নতুন নোট ২ অক্টোবর থেকে

আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহা ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২ থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের সব অফিসের কাউন্টার থেকে জনসাধারণের মাঝে নতুন নোট বিনিময় করা হবে।
এ ছাড়া ঢাকা শহরের বাণিজ্যিক ব্যাংকের নির্দিষ্ট কয়েকটি শাখা থেকেও ওই সময়ে বিশেষ ব্যবস্থায় নতুন নোট বিনিময় করা হবে।
ব্যাংকগুলো হলো অগ্রণী ব্যাংক প্রেসক্লাব শাখা; সোনালী ব্যাংক রমনা শাখা; জনতা ব্যাংক নিউমার্কেট শাখা; অগ্রণী ব্যাংক এলিফ্যান্ট রোড শাখা; পূবালী ব্যাংক সদরঘাট শাখা; সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক বসুন্ধরা সিটি মার্কেট শাখা; জনতা ব্যাংক বঙ্গবন্ধু এভিনিউ শাখা; ডাচ্-বাংলা ব্যাংক গুলশান শাখা; সাউথইস্ট ব্যাংক কারওয়ান বাজার শাখা; প্রাইম ব্যাংক মালিবাগ ও মিরপুর-১ শাখা এবং ন্যাশনাল ব্যাংক যাত্রাবাড়ী শাখা। বিজ্ঞপ্তি।

prothom-alo: অক্টোবর ০১, ২০১৩


দেশীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে লবন আমদানি হচ্ছে

দেশীয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে লবন আমদানি হচ্ছে

চলতি বছরে দেশের মোট চাহিদার চেয়ে বেশি লবন উত্পাদন হয়েছে। কিন্তু তার পরও বিদেশ থেকে প্রচুর পরিমাণে লবন আমদানি হচ্ছে। এমনকি দেশিয় বাজারের চেয়ে বেশি দামে লবন আমদানি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে দেখা গেছে, প্রতিকেজি কাঁচা লবণ আমদানিতে ঋণপত্র (এলসি) খুলতে তিন টাকা লেগেছে। আর এর সঙ্গে জাহাজীকরণ ও অন্যান্য আনুসঙ্গিক খরচ মিলিয়ে তা কেজি প্রতি সাড়ে তিন টাকা হয়ে যাবে। অন্যদিকে একই মানের লবণ দেশ থেকে কিনলে তা আড়াই টাকায় পাওয়া সম্ভব ছিল।

জানা গেছে, গতমাসের পাঁচ তারিখে কাঁচা লবণ আমদানির উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয় সরকার। এরপর (২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) দুই লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা লবণ আমদানির জন্য ৭২ লাখ ৪২ হাজার মার্কিন ডলারের এলসি খোলা হয়েছে। সে হিসেবে প্রতিকেজি লবণের দাম পড়েছে প্রায় তিন টাকা। লবণ চাষিরা বলছেন, জমির খাজনা, পলিথিনের ব্যয় ও শ্রমিকের মজুরি পরিশোধ করার পর প্রতিমণ লবণের খরচ পড়ে ৯০ টাকা। মিল মালিকরা মণপ্রতি ১০০ টাকা পর্যন্ত দর দিয়ে থাকে। এতে প্রতিকেজি লবণের দাম পড়ে সর্বোচ্চ আড়াই টাকা। অন্যদিকে চলতি বছরে আট লাখ মেট্রিক টন কাঁচা লবণ উত্পাদন করা হয়েছে, যেখানে বছরে চাহিদা থাকে ৭ লাখ মেট্রিক টনের মতো।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্যে জানা যায়, ইসলামী ব্যাংক ৮০ হাজার, এনসিসি ব্যাংক ৩০ হাজার, সাউথইস্ট ব্যাংক ২৫ হাজার, কমার্শিয়াল ব্যাংক সিলন ৬ হাজার, শাহজালাল ইসলামী ব্যাংক ১০ হাজার, মার্কেন্টাইল ২০ হাজার, আল-আরাফা ইসলামী ব্যাংক এক হাজার, অগ্রণী ৪ হাজার, ডাচ-বাংলা ব্যাংক ১০ হাজার, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ১৫ হাজার, এক্সিম ব্যাংক ২০ হাজার, পূবালী ব্যাংক ১০ হাজার এবং ইউসিবিএল ৩০ হাজার মেট্রিক টন কাঁচা লবণ আমদানিতে ঋণপত্র খুলেছে।

ইত্তেফাক: 30 সেপ্টেম্বর, ২০১৩


লোকসান ঠেকাতে বহুমুখী হচ্ছে ব্যাংকের ব্যবসা

লোকসান ঠেকাতে বহুমুখী হচ্ছে ব্যাংকের ব্যবসা

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে বিনিয়োগের পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম সেবা, অনলাইন ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন পণ্যের প্রসার করছে ব্যাংকগুলো।

এক সময় শুধু বড় শিল্পেই ঋণ দিতে আগ্রহ দেখাত ব্যাংকগুলো। গ্রামে শাখা খুলতেও তেমন আগ্রহ ছিল না তাদের। 

তবে এখন সেই মনোভাব বদলেছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ব্যাংক যেসব শাখা খুলেছে তার বেশিরভাগ খোলা হয়েছে গ্রামে।
 
আর বড় শিল্পের তুলনায় এখন ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে তারা বিনিয়োগ করছে বেশি। এর বাইরে মোবাইল ব্যাংকিং, এটিএম সেবা, অনলাইন ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন ধরনের নতুন নতুন পণ্যের প্রসার করছে ব্যাংকগুলো। মূলত লোকসান ঠেকাতে বহুমুখী হচ্ছে তাদের ব্যবসা।
 
গত ১৫ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যাংকগুলোর ২০১২ সালের আর্থিক সক্ষমতার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা গেছে, ব্যাংকগুলোর প্রতি ১০০ টাকা সম্পদের বিপরীতে আয় হয়েছে মাত্র ৬০ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ১ টাকা ৩০ পয়সা। আর ১০০ টাকা ইক্যুইটির বিপরীতে আয় দাঁড়িয়েছে মাত্র ৭ টাকা ৮০ পয়সা। আগের বছর যা ছিল ১৪ টাকা ৩০ পয়সা।
 
গত বছর ব্যাংকগুলোর নিট মুনাফা হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকা। এর আগের বছর যা ৯ হাজার ১২১ কোটি টাকা ছিল। এতে এক বছরের ব্যবধানে তাদের নিট মুনাফা কমেছে ৪ হাজার ৬৫৬ কোটি টাকা বা ৫১ শতাংশ।
 
চলতি বছরের জুনের তথ্যে দেখা গেছে, পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। জুন শেষে বেশিরভাগ ব্যাংকের মুনাফা আগের তুলনায় আরও কমেছে।
 
ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও বেসরকারি এনসিসি ব্যাংকের এমডি নুরুল আমিন সমকালকে বলেন, ভালো ব্যবসা করা সব ব্যাংকেরই অন্যতম লক্ষ্য থাকে। এক্ষেত্রে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিনিয়োগের ধারায় পরিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাওয়াতে এখন বড় শিল্পের তুলনায় এসএমই খাতে সব ব্যাংকেরই ঋণ বাড়ছে।
 
এ ছাড়া সময়ের চাহিদা অনুযায়ী এটিএম বুথ, মোবাইল ব্যাংকিং, অনলাইন ব্যাংকিংসহ বিভিন্ন সেবা দেওয়া হচ্ছে।

samakal: ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৩


আবার ৪ হাজারের নিচে ডিএসই সূচক

আবার ৪ হাজারের নিচে ডিএসই সূচক

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক


প্রায় দেড় মাস পর আবার চার হাজার পয়েন্টের নিচে নেমেছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক। গতকাল দিনশেষে ডিএসই সূচক স্থির হয় তিন হাজার ৯৬৮ পয়েন্টে। এর আগে সর্বশেষ ১৪ আগস্ট সূচক এ পর্যায়ে অবস্থান করছিল। পরে তা সর্বোচ্চ চার হাজার ১৬৩ পয়েন্টে ওঠার পর আবার নেতিবাচক প্রবণতার শিকার হয় বাজার। সেই থেকে গত বেশ কিছুদিন সূচকের বড় ধরনের ওঠানামা ছাড়া অনেকটা স্থবির অবস্থায় পার করছে পুঁজিবাজারগুলো। গতকাল সপ্তাহের শুরুতেই নেতিবাচক প্রবণতার শিকার হয় বাজারগুলো। ঢাকা শেয়ারবাজারের প্রধান সূচক ৪৪ দশমিক ৫৮ পয়েন্ট হ্রাস পায়। ১৫ দশমিক ৫২ পয়েন্ট কমে ডিএসই-৩০ সূচক। অন্য দিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক মূল্যসূচক ১৭১ দশমিক ২৯ ও সিএসসিএক্স সূচকের ১০৭ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট অবনতি ঘটে। এ দিকে গতকাল মিউচুয়াল ফান্ডের প্রায় সবগুলোই মূল্যবৃদ্ধির ধারায় ফিরে আসে। মাঝখানে বেশ কিছু দিন টানা দরপতনের পর গতকাল আবার ঘুরে দাঁড়াল ফান্ডগুলো। তালিকাভুক্ত ৪৩টি ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয় ৪১টির যার মধ্যে ৩৪টিরই মূল্যবৃদ্ধি ঘটে গতকাল। এ ছাড়া দিনের মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশের তালিকার ৯টিই ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। বাজারসংশ্লিষ্টরা মনে করছেন বেশ কিছু দিন টানা পতনের কারণে মূল্যস্তর ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় এ খাতে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ হঠাৎ করে বেড়ে যায়। ঘটে মূল্যবৃদ্ধি। অন্য দিকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক ডিএসই কর্তৃপক্ষকে ১২টি কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিষয়টি অনুসন্ধান করে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে জানানোর সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়েছে গতকালের বাজারে। তালিকায় থাকা ১২টি কোম্পানির মধ্যে ১০টিই গতকাল বড় ধরনের দরপতনের শিকার হয়। এদের বেশির ভাগই দিনের সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন দরে লেনদেন হয়েছে গতকাল। তবে লেনদেন শুরুর পর থেকে মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে ডিএসই কর্তৃপক্ষ গতকাল আবারো রহিমা ফুডের লেনদেন স্থগিত করে। তবে এরি মধ্যে আট দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্য বেড়ে গেছে কোম্পানিটির শেয়ারের। অন্য কোম্পানি মডার্ন ডায়িং আগের দিনের দরই ধরে রাখে। গতকাল বিভিন্ন মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকার হাউজগুলোতে গিয়ে দেখা যায় বিনিয়োগকারীদের একটি বড় অংশই বিএসইসির নেয়া সিদ্ধান্তে সন্তুষ্ট। তাদের ভাষায় দেরিতে হলেও নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে তারা মনে করেন, অতীতেও এ ধরনের অনেক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল যার কোনো ফল বাজার পায়নি। এবার যাতে বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত করে জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া হয় এমন দাবি তাদের। কয়েকজন বিনিয়োগকারী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বারবার এ ধরনের তদন্ত কমিটি করা হলেও তার শেষটা জানতে পারেন না তারা। আর তাই এ ধরনের পদক্ষেপে সাময়িক এদের তৎপরতা কমলেও সুযোগ বুঝে আবার এ মহলটি সক্রিয় হয়। এর আগেও বিএসইসি তাল্লু স্পিনিং, মিথুন নিটিং, চিটাগাং ভেজিটেবল ও জেএমআই সিরিঞ্জের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করলেও পরে এর কোনো রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়নি। ফলে ক’দিন নীরব থেকে আবার এ গ্রুপটিই নতুন করে কারসাজি শুরু করে। তাদের অভিযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও পুঁজিবাজার কর্তৃপক্ষের যোগসাজশ ছাড়া এটি সম্ভব নয়। গতকাল দুই বাজারে লেনদেন হওয়া কোম্পানির বেশির ভাগই দরপতনের শিকার হয়। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ২৯১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৮১টির মূল্যবৃদ্ধি পেলেও দর হারায় ১৯৫টি। ১৫টি এ বাজারে দর হারায়। অন্য দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২১৪টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ৫২টির দর বাড়লেও দর হারায় ১৫২টি। দর অপরিবর্তিত থাকে ১০টির। লেনদেন হওয়া খাতগুলোর মধ্যে কমপক্ষে চারটি খাতের শত ভাগ কোম্পানি দরপতনের শিকার হয় গতকাল। এগুলো হলো সিমেন্ট, সিরামিকস, জ্বালানি ও বিবিধ। বাকি খাতগুলোর অবস্থা কিছুটা ভালো হলেও এ গুলোতেও মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানি ছিল হাতে গোনা কয়েকটি। ব্যতিক্রম ছিল মিউচুয়াল ফান্ড। লেনদেন হওয়া ৪১টি ফান্ডের মধ্যে ৩৪টিই উঠে আসে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায়। ডিএসইর মোট মূল্যবৃদ্ধির অর্ধেকটাই ছিল এ খাতের। লভ্যাংশ ঘোষণার রেকর্ড পরবর্তী লেনদেনে গতকাল ডিএসইর লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিযোগাযোগ খাতের কোম্পানি বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস। ২৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকায় ১১ লাখ ৩১ হাজার শেয়ার বেচাকেনা হয় কোম্পানিটির। ১২ কোটি ৮৩ রাখ টাকা লেনদেন করে সিএমসি কামাল দ্বিতীয় স্থানটি ধরে রাখে। ডিএসইর শীর্ষ লেনদেনকারী দশ কোম্পানির তালিকায় আরো ছিল আরগন ডেনিমস, জেএমআই সিরিঞ্জ, কনটিনেন্টাল ইন্স্যুরেন্স, জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশনস, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, রহিমা ফুড, তাল্লু স্পিনিং ও ফার্স্ট প্রাইম মিউচুয়াল ফান্ড। মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল ফার্স্ট প্রাইম মিউচুয়াল ফান্ড। ৯ দশমিক ৯৫ শতাংশ দাম বাড়ে এ ফান্ডটির। এ ছাড়া পিএফআই ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৯.৬১, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড ৯.৫২, রিলায়েন্স ফার্স্ট ৮.৭৫, রহিমা ফুড ৮.৫৬ ও এনসিসিবি ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ডের ৮.১৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অন্য দিকে দিনের সর্বোচ্চ দর হারায় বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস। রেকর্ড পরবর্তী মূল্য সমন্বয়ে ১০ দশমিক ২২ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি। এ ছাড়া দেশ গার্মেন্ট ৯.৯৭, বিডি অটোকার ৯.৯০, ইনফরমেশন সার্ভিসেস নেটওয়ার্ক ৯.৮৮, ইনটেক অনলাইন ৯.৭৬, আনোয়ার গ্যালভেনাইজিং ৯.৬৪, জুট স্পিনার্স ৯.৫৭, হাক্কানি পেপার অ্যান্ড পাল্প ৯.৫৫, আলহাজ টেক্সটাইল ৯.৪৩ ও লিগেসী ফুটওয়্যার ৯.৩২ শতাংশ দর হারায়।
 

dailynayadiganta: রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩


সরকারের কাছে আরও অর্থ চায় হল-মার্ক!

সরকারের কাছে আরও অর্থ চায় হল-মার্ক!

ফন্দি-ফিকির করে ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া বিপুল পরিমাণ অর্থ পরিশোধের খবর নেই, উল্টো সরকারের কাছে আরও অর্থ চেয়ে একের পর এক আবেদন করে যাচ্ছে রাষ্ট্রীয় অর্থ লুণ্ঠনের দায়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়িক গোষ্ঠী হল-মার্ক। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের কাছে হল-মার্ক গত ছয় মাসে একই দাবিতে অন্তত তিন দফা আবেদন করেছে।
যে ব্যাংক থেকে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছে হল-মার্ক, এমনকি সেই সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষও হল-মার্ককে আরও অর্থ দেওয়ার পক্ষে। কেন দেওয়া দরকার, সেই যুক্তি তুলে ধরে অর্থ মন্ত্রণালয়ে শিগগিরই সোনালী ব্যাংক একটি চিঠি দেবে বলেও জানা গেছে।
হল-মার্কের তিন আবেদনের মধ্যে দুইটি অর্থমন্ত্রীর কাছে এসেছে হল-মার্কের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নামে। আরেকটি আবেদন করেছেন হল-মার্ক গ্রুপের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
যোগাযোগ করলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মসংস্থানের স্বার্থে কারখানা চালুর জন্য আরও অর্থ চেয়ে হল-মার্কের পক্ষ থেকে কয়েকটি আবেদন এসেছে। কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো উপায় বের করা যায়নি।’
মূলত গত ২৭ মার্চ সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী ‘হল-মার্কের কারখানাগুলো চালু করতে এদের আরও ঋণের দরকার’—এমন বক্তব্য দেওয়ার পর থেকেই হল-মার্ক আরও অর্থ চেয়ে অর্থমন্ত্রীরই শরণাপন্ন হচ্ছে।
জানা গেছে, হল-মার্কের সব আবেদনেরই ভাষা প্রায় একই রকম। এতে বলা হচ্ছে, হল-মার্ক গ্রুপের বিভিন্ন কারখানা চালু করার জন্য তাদের আরও অর্থ দরকার। আর তা দরকার মূলত ৪০ হাজার সাধারণ মানুষের কর্মসংস্থান ও জীবিকার জন্য। কারখানাগুলো চালু করা গেলে টাকা পরিশোধ তাদের জন্য কঠিন হবে না বলেও আবেদনপত্রে উল্লেখ করা হয়।
হল-মার্কের চেয়ারম্যান জেসমিন ইসলাম, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাঁর স্বামী তানভীর মাহমুদ, ব্যবস্থাপক (কমার্শিয়াল), তাঁর ভাই তুষার আহমেদ এবং কেলেঙ্কারির সঙ্গে জড়িত ব্যাংক-কর্মকর্তাসহ মোট ২৭ জনের বিরুদ্ধে ১১টি মামলা রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। তবে, দুদক সম্প্রতি গঠিত অভিযোগপত্রে ২৫ জনকে দায়ী করে, যাঁদের মধ্যে একজনও সরকারের নিয়োগ করা সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সদস্য নেই।
যদিও গভর্নর আতিউর রহমান গত বছর এ কেলেঙ্কারির জন্য সোনালী ব্যাংকের পর্ষদ সদস্যরাও দায় এড়াতে পারেন না বলে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদনসংবলিত একটি চিঠি পাঠিয়েছিলেন।
জেসমিন ইসলামসহ মামলার কয়েকজন আসামি জেলে থাকা অবস্থায় গত ৪ আগস্ট জেসমিন ইসলামকে মাসে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের শর্তে জামিন দেন ঢাকার দায়রা জজ জহুরুল হক। তবে, ওই আদেশের বিরুদ্ধে জেসমিন ইসলামের জামিন বাতিল চেয়ে আবেদন করে দুদক।
পরে জামিন কেন অবৈধ হবে না, জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ। তার পর থেকে অর্থ পরিশোধ করা তো দূরের কথা, জেসমিন ইসলামই ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়েছেন।
হল-মার্ক গ্রুপের ৪৮ কারখানার মধ্যে বর্তমানে চালু রয়েছে ২০টি। এগুলো সাব-কন্ট্রাক্টে চলছে বলে জানা গেছে।
সোনালী ব্যাংক সূত্র জানায়, কেলেঙ্কারির ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর হল-মার্কের কাছ থেকে মোট ৪১০ কোটি টাকা দায়কমাতে পেরেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।
সূত্রমতে, হল-মার্কের দায়দেনার পরিমাণ এখনো দুই হাজার কোটি টাকার বেশি। তবে, দায়দেনার বিপরীতে সহায়ক জামানত হিসেবে সাভারের নন্দখালী, কালামপুর, বারবাড়িয়া ও চারিপাড়া মৌজায় প্রায় দুই হাজার ৫০০ শতাংশ জমি বন্ধক রয়েছে। তবে এসব জমির মালিকানা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে খোদ সোনালী ব্যাংকেরই কাছে।
জানা গেছে, হল-মার্কের মোট জমি থেকে জেসমিন ইসলামের নিজের নামের জমি মাত্র ১২২ শতাংশ। এ থেকে রাজধানীর কাফরুল ও সাভারের কিছু জমি ছেলে কলেজপড়ুয়া ইরফান ইসলামের নামে তিনি হেবা (দান) করে দিয়েছেন।
গত এপ্রিলে হল-মার্কের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে একটি প্রতিবেদন উপস্থাপন করেছিলেন ব্যাংকের এমডি প্রদীপ কুমার দত্ত। এতে দায়দেনা নিয়মিত করে হল-মার্কের সঙ্গে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুরও সুপারিশ করা হয়েছিল।
সোনালী ব্যাংকের এমডি প্রদীপ কুমার দত্ত হল-মার্ক থেকে টাকা আদায়ের জন্য এ সুপারিশ করা হয়েছিল বলে প্রথম আলোকে জানান। সম্প্রতি তিনি এ বিষয়ে বলেন, ‘মন্ত্রণালয় থেকে টাকা আদায়ের ব্যাপারে করণীয় জানতে চেয়ে একটি চিঠি এসেছিল। শিগগির আমরা এর জবাব দিচ্ছি।’
অর্থমন্ত্রী এর আগে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, হল-মার্কের বিভিন্ন ব্যবসা আছে, যেগুলো চালু হওয়া প্রয়োজন। হল-মার্ক যে টাকা নিয়ে গেছে, তা জনগণের টাকা। এ টাকা উদ্ধার করতে হবে। উদ্ধারের জন্য দরকার কারখানা চালু। আর সে জন্যই ওদের দরকার আরও ঋণ।
ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব এম আসলাম আলম প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি বর্তমানে আদালতের এখতিয়ারাধীন বলে মন্ত্রণালয়ের দিক থেকে প্রকৃতপক্ষে তেমন কিছু করার নেই।

prothom-alo: সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৩

মার্জিন ঋণই পুঁজিবাজার মন্দার প্রধান কারণ

মার্জিন ঋণই পুঁজিবাজার মন্দার প্রধান কারণ

সাম্প্রতিক সময়ে বারবার ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হচ্ছে পুঁজিবাজার। বিভিন্ন ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেয়া বড় আকারের মার্জিন ঋণই এর জন্য দায়ী। ২০১০ সালে পুঁজিবাজার বিপর্যয়ের আগে শেয়ারবাজারে দেয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকার মার্জিন লোন আটকে রয়েছে। প্রতিনিয়তই বাড়ছে এ ঋণের সুদ। এতে এক দিকে প্রতিষ্ঠানগুলো সক্ষমতা হারাচ্ছে অন্য দিকে তাদের বিপুলসংখ্যক গ্রাহক হিসাব দীর্ঘদিন ধরে নিষ্ক্রিয় হয়ে আছে। ফলে বাজারে এসব প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ বলতে গেলে শূন্যের কোটায়। এর মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য সরকারের নেয়া মার্জিন ঋণের বিপরীতে সুদ মওকুফ স্কিম কিছুটা আশার আলো ছড়ালেও তা বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রতা হতাশ করে বিনিয়োগকারীদের। এ স্কিমের নয় শ’ কোটি টাকা প্রতিষ্ঠান তথা বিনিয়োগকারীদের হিসাবে যোগ হলে তা সাময়িক হলেও যে প্রণোদনার কাজ করত সরকারের সুদ মওকুফ স্কিম ঘোষণার সাথে সাথে তা প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এ টাকা ছাড়ে বিলম্ব ঘটায় বাজারে তার বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে মনে করছেন পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা। বিভিন্ন ব্রোকার হাউজ ও মার্চেন্ট ব্যাংকের দেয়া বিপুল মার্জিন ঋণ পুরো পুঁজিবাজার ব্যবস্থাকে বিপন্ন করে তুললেও দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীল প্রতিষ্ঠানের প থেকে এ বিষয়ে কোনো কার্যকর পদপে না নেয়ায় বিগত বছরগুলোতে ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি পুঁজিবাজার। সংশ্লিষ্টদের মতে, দীর্ঘ মন্দা ও মার্জিন লোন আটকে থাকা পোর্টফোলিওগুলো সক্রিয় করতে তারল্যপ্রবাহ বাড়ানো না গেলে স্থিতিশীল বাজার সৃষ্টি কঠিন হয়ে পড়বে। এ বিষয়ে একাধিক ব্রোকারেজ হাউজের কর্মকর্তা জানান, বাজারে মূল সমস্যা মার্জিন ঋণ। কারণ ২০১০ সালে ব্যাংকগুলো শেয়ারবাজার ও আবাসন খাতে মাত্রাতিরিক্ত বিনিয়োগ করেছিল। পরে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চাপে ব্যাংকগুলো ঘোষণা দিয়ে পুঁজিবাজার থেকে তাদের বিনিয়োগ প্রত্যাহার করে নিলে বাজার তার ধারণ মতা হারিয়ে ফেলে এবং সব বিনিয়োগকারী বড় ধরনের ঋণের জালে আটকে যায়। শোনা যায়, আইসিবিসহ মার্চেন্ট ব্যাংক, ব্রোকারেজ হাউজ ও অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা ঋণের জালে আটকা পড়ে। দুই থেকে আড়াই বছর এভাবে স্থবির অবস্থায় থাকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, এক সময় যারা পুঁজিবাজারের উত্থানের পেছনে বড় ভূমিকা পালন করেছিল। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে এ নিয়ে নানা সময় নানা উদ্যোগের কথা শোনা গেলেও বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। সঙ্কট উত্তরণে সরকারের নেয়া সুদ মওকুফ স্কিমের সর্বশেষ উদ্যোগটিও এখন অনেকটা ব্যর্থ। সংশ্লিষ্টদের মতে, যত দ্রুত সম্ভব বিনিয়োগকারীদের এবং সংশ্লিষ্ট মার্চেন্ট ব্যাংক ও ব্রোকারেজ হাউজগুলো সক্ষমতা ফেরাতে হবে। এর জন্য প্রয়োজন বাজারে বড় ধরনের তারল্যপ্রবাহ নিশ্চিত করা। সুষ্ঠু পরিকল্পিনার মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকেই তা করতে হবে। সাধারণ বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগের সক্ষমতা ফিরে পেলে তৈরি হবে লেভেল প্লেইং ফিল্ড। পর্যবেক্ষক মহলের মতে, সাম্প্রতিক সময়ে নির্দিষ্ট কিছু সক্ষম বিনিয়োগকারী আসল বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে তাদের অনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে চলেছে যার খেসারত দিতে হচ্ছে পুঁজিবাজারকে। দেরিতে হলেও এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ১২টি কোম্পানির অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ খতিয়ে দেখতে ডিএসইকে তদন্ত কমিটি গঠন করে অনুসন্ধানপূর্বক ১৫ দিনের মধ্যে তা নিয়ন্ত্রক সংস্থায় জমা দিতে বলেছে। তবে নির্দেশ অনুযায়ী ডিএসই কর্তৃপক্ষ যথাযথ তদন্তের উদ্যোগ নিলে সাম্প্রতিক সময়ে উদ্ভূত একটি সমস্যার সমাধান হলেও তাতে বাজারের স্থবিরতার অবসান হবে না। বাজারকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে তারল্যপ্রবাহ বৃদ্ধি করার কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। এ বিষয়ে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের একজন পরিচালক বলেছেন, বাজারের মূল সমস্যা মার্জিন ঋণ। এ ঋণের বেড়াজাল থেকে বাজারকে বের করে আনতে হবে। যে পরিমাণ মার্জিন লোন রয়েছে এর বিপরীতে তারল্য সরবরাহ বাড়ানো ছাড়া বাজারকে স্বাভাবিক ও গতিশীল করা সম্ভব হবে না। সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে সরকারি উদ্যোগে রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাজারে সক্রিয় করার মাধ্যমে সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হলেও তা ববাবরই ব্যর্থ হয়েছে। কারণ এ সময় প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরা শেয়ার কিনে বাজারকে সাময়িক ঊর্ধ্বমুখী করতে সক্ষম হলেও যখনই এসব প্রতিষ্ঠান শেয়ার কেনা বন্ধ করেছে তখনই মন্দায় আক্রান্ত হয়েছে বাজারগুলো। কারণ বাজারের মন্দার মূল কারণ যে আস্থাহীনতা তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। বিনিয়োগকারীদের নিষ্ক্রিয় হিসাবগুলো সক্রিয় করা না গেলে এ আস্থাহীনতা কাটবে না। বাড়বে না অংশগ্রহণ। আর যতক্ষণ বাজারে ুদ্র বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ বাড়বে না ততক্ষণ কাটবে না বাজারের চলমান মন্দা। আর যত দ্রুত এ উদ্যোগ নেয়া হবে তত দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠবে পুঁজিবাজার।
 

dailynayadiganta: 29 সেপ্টেম্বর ২০১৩,