Business News

Displaying 91-100 of 172 results.

আয়কর দিবসের র‌্যলিতে গোল্ডেন বাংলাদেশের অংশগ্রহণ

Picture

২০১৪ সালের আয়কর দিবস উপলক্ষ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক আয়েজিত ‌‌র‌্যলিতে গোল্ডেন বাংলাদেশ অংশ গ্রহণ করে। র‌্যলিতে তারা ব্যানার ও বিভিন্ন স্লোগান সংবলিত ফেসটুন ব্যবহার করে। ফেসটুনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, আয়করের বিভিন্ন স্লোগান, দেশের জন্য ১০ মিনিট ও সমাজ বৃক্ষ। র‌্যলিতে গোল্ডেন বাংলাদেশের কর্মকর্তা কর্মচারী ও স্বেচ্ছাসেবক বৃন্দ অংশগ্রহণ করে। এছাড়াও গোল্ডেন বাংলাদেশ নিজস্ব ওয়েব সাইট ও নিয়মিত প্রকাশনার মাধ্যমে আয়কর সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে শুরু থেকেই।  

তৈরি পোশাক শিল্পে ঘাড়ে ভিয়েতনামের নিশ্বাস

Picture

দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বে পোশাক রপ্তানিতে দ্বিতীয় অবস্থানে বাংলাদেশ। তবে সেই মুকুট আর কত দিন থাকবে, তা নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। কারণ বাংলাদেশের ঘাড়ে ভিয়েতনাম নিশ্বাস ফেলতে শুরু করেছে। যেকোনো সময়ে দেশটি বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যেতে পারে।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) ওয়ার্ল্ড ট্রেড স্ট্যাটিসটিকস রিভিউ ২০১৯–এর রিপোর্ট অনুযায়ী, গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) এবং চীন, বাংলাদেশ, ভিয়েতনাম, ভারত, তুরস্ক, হংকং, ইন্দোনেশিয়া, কম্বোডিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র—এই শীর্ষ দশটি অঞ্চল ও দেশ ৪২ হাজার কোটি মার্কিন ডলার মূল্যের তৈরি পোশাক রপ্তানি করেছে, যা বিশ্বের মোট রপ্তানির ৮৩ দশমিক ৩ শতাংশ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার ৮০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে চীন। বৈশ্বিক বাজারে দেশটির হিস্যা ৩১ দশমিক ৩ শতাংশ।

পোশাক রপ্তানিতে চীনের পেছনেই এক এক করে আছে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও ভিয়েতনাম। ২০১৮ সালে বাংলাদেশ ৩ হাজার ২৯২ কোটি এবং ভিয়েতনাম ৩ হাজার ২০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। উভয় দেশের বাজার হিস্যা এখন প্রায় কাছাকাছি পর্যায়ে রয়েছে। গত বছর ১০ শীর্ষ রপ্তানিকারকের মধ্যে বাংলাদেশের বাজার হিস্যা ছিল ৬ দশমিক ৪ শতাংশ। অন্যদিকে ভিয়েতনামের বাজার হিস্যা বেড়ে হয়েছে ৬ দশমিক ২ শতাংশ।

ডব্লিউটিওর গত দুই বছরের তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভিয়েতনাম পোশাক রপ্তানিতে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। যেমন ২০১৭ সালে দেশটি ২ হাজার ৭০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছিল। তখন তাদের বাজার হিস্যা ছিল ৫ দশমিক ৯ শতাংশ। মাত্র এক বছরের ব্যবধানেই তাদের রপ্তানির পরিমাণ ৫০০ কোটি ডলার বেড়েছে। বদৌলতে দেশটির বাজার হিস্যা ৬ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আর বাংলাদেশের বাজার হিস্যা কমেছে। ২০১৭ সালে ২ হাজার ৯২১ কোটি ডলারের রপ্তানির বিপরীতে বাজার হিস্যা ছিল ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। রপ্তানি ৩৭১ কোটি ডলার বাড়লেও গত বছরের চেয়ে বাজার হিস্যা দশমিক ১ শতাংশ কমেছে।

বৈশ্বিক পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশের হিস্যা এখন ৬ দশমিক ৪ শতাংশ
আর ভিয়েতনামের ৬ দশমিক ২ শতাংশ

বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি গত আগস্ট ও সেপ্টেম্বর মাসে যথাক্রমে ১১ দশমিক ৪৬ ও ৪ দশমিক ৭০ শতাংশ কমেছে। অক্টোবর মাসেও পোশাক রপ্তানি কমার আশঙ্কা প্রবল। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) পণ্য রপ্তানির তথ্য দিলেই বিষয়টি স্পষ্ট হয়ে যাবে বলে জানান পোশাকশিল্পের একাধিক উদ্যোক্তা।

জানতে চাইলে তৈরি পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি রুবানা হক বলেন, ‘ভিয়েতনাম যে গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে, তাতে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে গেলে অবাক হব না।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৈশ্বিক চাহিদায় একধরনের পরিবর্তন এসেছে। বিদেশের ক্রেতারা বেছে বেছে কিনছেন, কম কিনছেন। তাঁরা ভ্যালু অ্যাডেড পোশাক চাচ্ছেন। সেটির জন্য হয়তো আমরা এখনো প্রস্তুত না।’

নিট পোশাক শিল্পমালিকদের সংগঠন বিকেএমইএর প্রথম সহসভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, ‘ভিয়েতনামে প্রচুর চীনা বিনিয়োগ আছে। সে জন্য তারা বহুমুখী পোশাক উৎপাদনে বেশ এগিয়ে গেছে। তাই আমাদেরও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনে চীনা বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে হবে।’

ডব্লিউটিওর তথ্যানুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ) দেশগুলো গত বছর সম্মিলিতভাবে ১৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। এ ছাড়া ভারত ১ হাজার ৭০০ কোটি, তুরস্ক ১ হাজার ৬০০ কোটি, হংকং ১ হাজার ৪০০ কোটি, ইন্দোনেশিয়া ৯০০ কোটি, কম্বোডিয়া ৮০০ কোটি এবং যুক্তরাষ্ট্র ৬০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

পোশাক আমদানিতে শীর্ষস্থানে আছে ইইউ। গত বছর ইইউর সদস্য ২৮টি দেশ ২০ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ৯ হাজার ২০০ কোটি, জাপান ৩ হাজার কোটি, হংকং ১ হাজার ৩০০ কোটি, কোরিয়া ও কানাডা প্রতিটি ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার, চীন, রাশিয়া ও সুইজারল্যান্ড প্রতিটি ৮০০ কোটি ডলার এবং অস্ট্রেলিয়া ৭০০ কোটি ডলারের পোশাক আমদানি করেছে।

জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম গত বৃহস্পতিবার বলেন, ‘ভিয়েতনামের বার্ষিক পণ্য রপ্তানির পরিমাণ ২২ হাজার কোটি ডলার। তার মধ্যে তৈরি পোশাক তাদের ষষ্ঠ শীর্ষ রপ্তানি পণ্য। তারপরও ভিয়েতনাম যদি পোশাক রপ্তানিতে বাংলাদেশকে ছাড়িয়ে যায়, তাহলে সেটি হবে দুঃখজনক। কারণ তৈরি পোশাক আমাদের প্রধান রপ্তানি পণ্য।’ তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশে কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে অনেক কাজ হলেও বহুমুখী পণ্য উৎপাদনের ক্ষমতায় ও প্রযুক্তিতে উন্নয়ন হয়নি। এই জায়গায় দ্রুত উন্নতি করতে হবে। না হলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশকে অনেক পেছনে ফেলে এগিয়ে যাবে ভিয়েতনাম।’


সূত্র : প্রথম আলো , https://www.prothomalo.com/economy/article/1622277/%E0%A6%A4%E0%A7%88%E0%A6%B0%E0%A6%BF-%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%B6%E0%A6%BE%E0%A6%95-%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A7%87-%E0%A6%98%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A7%87-%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87%E0%A6%A4%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8

NBR defines production input to check VAT rebate claim

The National Board of Revenue has excluded a number of goods and services under six categories from the definition of input required for production of goods to avoid complexities in giving VAT rebate to businesses, mainly manufacturers.

Value-added tax wing of the revenue board on Saturday issued a general order containing the names of goods and services that would not be considered for giving VAT rebate.

The board issued the order as traders were claiming higher amounts of refund against some unusual inputs, commonly known as raw materials or components for producing finished goods, in absence of definition of inputs required for production of goods in the law.

According to the order, the goods and services that would not be included in the list of inputs include land, building, office equipment and fixture, machinery, construction, retrofitting, modernisation, replacement, expansion, remediation and maintenance of infrastructure, building and plant, furniture, office supply, stationary items, refrigerator, freezer, air conditioner, fan, lighting equipment and generator purchase and maintenance.

Interior design, architectural plan and drawing, renting vehicle and lease, travelling, refreshment, workers’ welfare, development works and related goods and services, rent of premises of business entity, office and showroom have also been excluded from the list of inputs eligible for VAT rebate.

The order, however, said the goods procured by a trader for sales, exchange or transfer would be considered as inputs.

Officials of the revenue board said that the VAT law allowed manufacturers to get refunds or adjust the VAT they paid while procuring or sourcing inputs to produce finished goods.

But field-level VAT offices were facing difficulties in determining the inputs eligible for refund as the new VAT and Supplementary Duty Act-2012 did not give any definition of inputs.

A section of businesses were also claiming some unusual items as raw materials and components as inputs to get refund, they said.

For example, a multinational cement company claimed refunds on unusual items claiming them inputs which included hotel and restaurant, printing stationary and office supply, furniture, event management, building construction or architect, interior, engineering firm and graphic design, they added.

They said these items were also not included in the list of eligible inputs in the previous VAT act of 1991.

They also said though the components like plant, building, property, machinery equipment, vehicles and furniture were necessary for production of goods, these were capital goods, not direct raw materials.


context : The new Age > http://www.newagebd.net/article/89005/nbr-defines-production-input-to-check-vat-rebate-claim

শীর্ষ ধনীর আসন পুনরুদ্ধার করলেন বেজোস

আবারও মাইক্রোসফটের প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটসের কাছে শীর্ষ ধনীর আসন হারানোর পর তা ফিরে পেয়েছেন আমাজনের প্রতিষ্ঠাতা জেফ বেজোস। ফোর্বস ম্যাগাজিনের ধনীর তালিকায় গতকাল সন্ধ্যায় বেজোসের সম্পদের পরিমাণ ছিল ১০৯ দশমিক ৯ বিলিয়ন ডলার। আর দ্বিতীয় শীর্ষ ধনী বিল গেটসের সম্পদ ছিল ১০৫ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলার।

নানা কারণে সময়টা ভালো যাচ্ছে না জেফ বেজোসের। স্ত্রীর সঙ্গে বিবাহবিচ্ছেদের কারণে বিপুল পরিমাণ শেয়ার বেজোসের হাতছাড়া হয়ে গেছে। এর সঙ্গে বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে আমাজনের আয় কমে যাওয়ায় শেয়ারের দাম তরতর করে পড়েছে। আমাজনের নিট আয় কমেছে ২৬ শতাংশ। বৃহস্পতিবার আমাজনের শেয়ারের দাম ৭ শতাংশ কমে গেলে ক্ষণিকের জন্য তিনি শীর্ষ ধনীর আসন হারান। তবে শুক্রবার আবারও শীর্ষ স্থান ফিরে পান বেজোস। সিএনএন ও টাইমস অব ইন্ডিয়া সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।

সামগ্রিকভাবে এ বছরটা আমাজনের জন্য ভালো যাচ্ছে না। বিবাহবিচ্ছেদের কারণে বেজোসের গাঁট থেকে প্রায় ১ হাজার ৪০০ কোটি ডলার বেরিয়ে গেছে। আমাজনে বেজোস দম্পতির যে শেয়ার ছিল, বিচ্ছেদের বন্দোবস্তের কারণে বেজোসের স্ত্রী ম্যাকেঞ্জি তাঁর ২৫ শতাংশ পেয়েছেন। এতে আমাজনে ম্যাকেঞ্জির শেয়ারের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪ শতাংশ। তাঁর সম্পদের পরিমাণ এখন ৩ ৮ বিলিয়ন ডলার।

এদিকে আমাজন পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা উন্নত করতে ৮০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করেছে। বিশ্লেষকেরা অবশ্য এটাকে ঝুঁকিপূর্ণ মনে করছেন।

অন্যদিকে ব্লুমবার্গের হিসাব অনুসারে এ বছর বিল গেটসের শেয়ারের দাম বেড়েছে ১৭ শতাংশ। মাইক্রোসফটে তাঁর শেয়ারের পরিমাণ ১ শতাংশ। ২০১৯ সালে তাঁর শেয়ারের দাম বেড়েছে ৪০ শতাংশ।

ফরাসি ধনী ও বিলাসদ্রব্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান এলভিএমএইচের প্রধান নির্বাহী বের্নার্ড আর্নো ১০২ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার নিয়ে ফোর্বস-এর তালিকায় তৃতীয় স্থানে আছেন।

ফোর্বস-এর তালিকায় ৮৩ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে চতুর্থ স্থানে ছিলেন মার্কিন বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট। ৭০ বিলিয়ন ডলার নিয়ে পাঁচ নম্বরে ছিলেন আমানিকো ওরতেগা। ষষ্ঠ স্থানে আছেন ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গ। তাঁর সম্পদের পরিমাণ ৬৯ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার। ৬৬ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলার নিয়ে সপ্তম স্থানে ছিলেন ল্যারি এলিসন। অষ্টম স্থানে থাকা কার্লোস স্লিম হেলুর সম্পদের পরিমাণ ৬১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার।

ফোর্বস-এর তালিকার নবম স্থানে থাকা ল্যারি পেজের সম্পদের পরিমাণ ৫৭ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার এবং দশম স্থানে থাকা সের্জেই ব্রিনের সম্পদের পরিমাণ ৫৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।


সূত্র : প্রথম আলো

প্রণোদনা ছাড়া টিকিয়ে রাখা যাবে না ব্যবসা

Picture

প্রণোদনা ছাড়া টিকিয়ে রাখা যাবে না ব্যবসা

 

 

আবদুল কাদের খান সভাপতি, বিজিএপিএমইএ

আবদুল কাদের খান সভাপতি, বিজিএপিএমইএ

সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ উপখাতের কারণে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন বেড়েছে। পোশাকশিল্পের সহযোগী শিল্প হলেও সরকারের নীতি-সহায়তা পাচ্ছে না। এসব বিষয় নিয়ে প্রথম আলোর সঙ্গে কথা বলেছেন বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ অ্যান্ড প্যাকেজিং ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএপিএমইএ) সভাপতি আবদুল কাদের খান। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন শুভংকর কর্মকার। 

প্রথম আলো: সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্য রপ্তানির ব্যবসা কেমন যাচ্ছে?

আবদুল কাদের খান: রপ্তানিমুখী তৈরি পোশাকশিল্পের সহযোগী হিসেবে সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ উপখাত গড়ে উঠেছে। তবে গত কয়েক মাসে পোশাকের ক্রয়াদেশ কমে যাওয়ায় আমাদের ব্যবসায়ও ভাটার টান পড়েছে। সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্যের চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। যখন চাহিদা কমে যায়, ক্রেতারা তখন আরও কম দামে পণ্য কিনতে চান। অন্যদিকে কারখানায় কাজ না থাকলে আমাদের ব্যবসায়ীরাও অস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতায় নেমে পড়েন। সব মিলিয়ে বাজারের অবস্থা ভালো না। অনেক কারখানা দিনের পুরো সময় উৎপাদন করার মতো কাজ পাচ্ছে না। কিছু কারখানা তো বসে গেছে। অবশ্য আমরা আশা করছি, আগামী মৌসুমে ক্রয়াদেশ বাড়বে। তবে বিষয়টি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তারা ভালো বলতে পারবেন। কারণ, তাঁরাই ক্রেতাদের কাছ থেকে সরাসরি ক্রয়াদেশ আনেন। তাঁদের কাছ থেকে আমরা ক্রয়াদেশ আনি। আরেকটি বিষয় হচ্ছে, গত ডিসেম্বরে শ্রমিকের মজুরি ৩৮ শতাংশ বেড়ে গেছে। কিন্তু ক্রেতারা আমাদের পণ্যের বাড়তি দাম দিচ্ছেন না।

প্রথম আলো: ক্রয়াদেশ কেমন কমেছে?

আবদুল কাদের খান: সাধারণত বছরের এই সময়ে ক্রয়াদেশ কিছুটা কম থাকে। তবে গত বছরের চেয়ে অবস্থা খুবই খারাপ। ছোট-মাঝারি কারখানার ক্রয়াদেশ কমেছে প্রায় ২০-২৫ শতাংশ। তবে বড় কারখানাগুলো, যারা সরাসরি ক্রেতাদের কাছ থেকে ক্রয়াদেশ আনছে, তারা মোটামুটি ভালো আছে। তারা তাদের উৎপাদন সক্ষমতাও বাড়াচ্ছে। তবে সেই সংখ্যাটি খুবই কম। সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্য উৎপাদনের কারখানা আছে ১ হাজার ৭০০টি। বর্তমানে চালু আছে ১ হাজার ২০০টি। তার মধ্যে অর্ধেকই ছোট কারখানা। ২৫-৩০ শতাংশ মাঝারি। বাকিগুলো অপেক্ষাকৃত বড় কারখানা।

প্রথম আলো: বর্তমান পরিস্থিতিতে টিকে থাকতে হলে কী দরকার?

আবদুল কাদের খান: সর্বশেষ অর্থবছরে ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছিল। তার মধ্যে সরঞ্জাম ও মোড়কীকরণ পণ্যের অবদান প্রায় ৬০০ কোটি ডলার। আমাদের জন্য পোশাক রপ্তানিতে মূল্য সংযোজন বেড়েছে। রপ্তানিকারকেরা লিড টাইম (উৎপাদন থেকে জাহাজীকরণের সময়) মেনে ক্রেতাদের পোশাক সরবরাহ করতে পারছেন। বর্তমানে পোশাকশিল্পের ব্যবসা খারাপ মানে হচ্ছে, তার সঙ্গে সম্পর্কিত সবাই কষ্টে আছেন। পোশাকশিল্পের দুরবস্থার কথা ভেবে সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেটে পোশাক রপ্তানিতে বাড়তি ১ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। এটিকে আমরা সাধুবাদ জানাই। তবে আমরা পোশাকশিল্পের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হওয়ার পরও সেটি পাচ্ছি না। এই বৈষম্য কেন? অন্যদিকে দীর্ঘদিন চেষ্টা করার পরও করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ রয়ে গেছে। অথচ পোশাকশিল্পের মালিকদের করপোরেট কর ৩৫ শতাংশ ছিল। তবে সেটি নামতে নামতে বর্তমানে
১০-১২ শতাংশে চলে এসেছে। পোশাকশিল্প যদি কঠিন সময় পার করে, তাহলে সহযোগী শিল্পকারখানা একই অবস্থার মধ্য দিয়ে যায়। তাহলে একজন সুবিধা পাবে বাকিরা পাবে না, সেটি তো যথাযথ বিচার হতে পারে না। বর্তমানে ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে প্রণোদনা ছাড়া কোনো বিকল্প উপায় নেই।

প্রথম আলো: পণ্যের মান নিশ্চিতে পরীক্ষাগার স্থাপনে কত দূর এগোলেন?

আবদুল কাদের খান: বিদেশি ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে হলে আমাদের পণ্যের মান পরীক্ষা করাতে হয়। বিদেশি প্রতিষ্ঠান থেকে প্রচুর অর্থ খরচ করে সেই পরীক্ষা করাতে হয়। অথচ সরকারিভাবে দেশে পরীক্ষাগার থাকলে অনেক অর্থ সাশ্রয় হতো। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে সাত-আটটি পরীক্ষাগার আছে। আমরা ইইউর সহযোগিতায় ছোট পরিসরে একটি পরীক্ষাগার করেছি। তবে শুধু মোড়কীকরণ পণ্যের কয়েকটি পরীক্ষা করা যায় সেখানে। পূর্বাচলে গবেষণাগার ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র করার জন্য সরকার আমাদের এক একর জমি দিয়েছে। সেই জমির দাম পরিশোধের জন্য আমাদের প্রত্যেক সদস্যকে বছরে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। তবে ব্যবসা ভালো যাচ্ছে না। ফলে দুই বছরে অর্ধেক টাকাও ওঠেনি।


সূত্র : প্রথম আলো : https://www.prothomalo.com/economy/article/1621155/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A3%E0%A7%8B%E0%A6%A6%E0%A6%A8%E0%A6%BE-%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A7%9C%E0%A6%BE-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE-%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%96%E0%A6%BE-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%A8%E0%A6%BE

১১টি সেবা নিয়ে ওয়ান স্টপের যাত্রা শুরু

Picture

১১টি সেবা নিয়ে ওয়ান স্টপের যাত্রা শুরু

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) এক দরজায় সেবা বা ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার (ওএসএসসি) ১১টি সেবা নিয়ে যাত্রা শুরু করছে। আজ সোমবার এটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে। অবশ্য বেজা বেশ আগে থেকেই কয়েকটি সেবা অনলাইনে দিয়ে আসছিল।

 

বেজা জানিয়েছে, আগামী জুনের মধ্যে মোট ১২৫টি সেবা ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের আওতায় আসবে। ফলে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সংশ্লিষ্ট অনুমোদন পেতে আর বিভিন্ন সরকারি সংস্থায় দৌড়াতে হবে না। বেজা কোন সেবা কত দিনে দেবে, তাও নির্দিষ্ট করে বিধিমালায় বলে দেওয়া হয়েছে। ফলে বিনিয়োগকারীদের অনিশ্চয়তার মধ্যে থাকতে হবে না। 

সবচেয়ে বড় বিষয় হলো, ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আইনে সরকারি বিভিন্ন সংস্থার কর্মচারীদের দ্রুত সেবা দেওয়ার জন্য ক্ষমতায়ন করা হয়েছে। পাশাপাশি তাঁরা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা না দিলে সেটা তাঁর অদক্ষতা ও চাকরির অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। 

জানতে চাইলে বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উদ্বোধনের দিন তিনটি সংস্থার সঙ্গে বেজার সমঝোতা স্মারক সই হবে। এতে পরের এক মাসের মধ্যে আমরা ৪২টি সেবা অনলাইনে দিতে পারব।’ তিনি বলেন, এর বাইরে বিনিয়োগকারীদের বেশির ভাগ সেবা বেজার ওয়ান-স্টপ সার্ভিস সেন্টার থেকে দেওয়া হয়। যদিও অনলাইনে নয়। বিনিয়োগকারীদের অন্য সংস্থায় যেতে হয় না। 

ওয়ান-স্টপ সার্ভিসের আওতায় বিনিয়োগকারীদের ভিসা সুপারিশপত্র, বিনিয়োগ ছাড়পত্র, কাজের অনুমতি বা ওয়ার্ক পারমিট, আমদানি অনুমোদন, রপ্তানি অনুমোদন, প্রকল্প অনুমোদন, প্রকল্প নিবন্ধন, স্থানীয় বিক্রিতে অনুমতি, স্থানীয় ক্রয়ের অনুমতি ও নমুনা আমদানি অনুমতি অনলাইনে দিচ্ছে বেজা। সংস্থাটি জানিয়েছে, আজ জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), পরিবেশ অধিদপ্তর এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের পরিদপ্তরের (আরজেএসসি) সঙ্গে সমঝোতা স্মারক সই হবে।

জুনের মধ্যে ব্যবসাসংক্রান্ত মোট ১২৫টি সেবা অনলাইনে মিলবে
বিনিয়োগকারীদের অন্য কোনো সংস্থায় যেতে হবে না
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সেবা না দিলে সেটা চাকরির অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে

 কোন সেবা কত দিনে

বিশ্বব্যাংকের সহজে ব্যবসাসূচক বা ইজ অব ডুয়িং বিজনেস অনুযায়ী দেশে কিছু কিছু সেবা পেতে বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘ সময় লাগে। যেমন কারখানার ভবন নির্মাণের অনুমতি পেতে সময় লাগে ২৮১ দিন। বেজার ওয়ান-স্টপ সার্ভিসে ভবন নির্মাণসংক্রান্ত পাঁচ ধরনের অনুমোদন মিলবে ৭ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে। একইভাবে বিদ্যুৎ-সংযোগ পেতে ১৪৮ দিন লাগে। বেজা বলছে, তারা বিদ্যুৎ-সংযোগ সংক্রান্ত তিনটি অনুমোদন দেবে ৭ থেকে ১৪ দিনে। 

কারখানা বন্ড লাইসেন্স ২২ দিনে, গ্যাস-সংযোগ ৭ দিনে, বিস্ফোরক লাইসেন্স ২১ দিনে, জমির নামজারি ১৫ দিনে ও পরিবেশ ছাড়পত্র ৭ থেকে ৩০ দিনে দেবে বেজা। এর বাইরে বিনিয়োগ নিবন্ধন, নামের ছাড়পত্র, কর-সংক্রান্ত নিবন্ধন, ভিসার সুপারিশ, কাজের অনুমতি বা ওয়ার্ক পারমিট ইত্যাদি সাধারণ সেবা কত দিনে দেওয়া হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আইনের বেজার বিধিমালায়। সব মিলিয়ে ১২৫টি সেবারই সময় উল্লেখ আছে। 

বিনিয়োগকারীদের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুসরণ করে সেবা প্রদান করা হয়। বেজা জানিয়েছে, ১২৫টির মধ্যে বেজা নিজে দেবে ৩৭টি সেবা, যার ২২টির এসওপি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সরকারের অন্যান্য দপ্তর দেবে ৮৮টি সেবা, যার ৫২টির এসওপির অনুমোদন পাওয়া গেছে। 

অনীহা দূর করার চ্যালেঞ্জ

বিনিয়োগকারীদের জন্য ওয়ান-স্টপ সার্ভিস বিলুপ্ত বিনিয়োগ বোর্ডেও ছিল। তবে সেখানে নির্দিষ্ট সময়ে সেবা পাওয়া কঠিন ছিল। কারণ, বিনিয়োগ বোর্ড চাইলেও বাকি সংস্থাগুলো নানা অজুহাতে দ্রুত সেবা দিত না। দ্রুত সেবা দিতে বাধ্য করতে বেজা ২০১৫ সালে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস আইন করার প্রস্তাব দেয়। পরে বেজার পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থায় এ সেবা দিতে সার্বিকভাবে আইন করার উদ্যোগ নেয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এখন বেজার পাশাপাশি বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষ ও রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) এ আইনের অধীনে ওয়ান-স্টপ সার্ভিস নিয়ে কাজ করছে। 

বেজার নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরী বলেন, ওয়ান–স্টপ সার্ভিস বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে ভূমিকা রাখবে, এটাই বড় কথা। বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়লে বাংলাদেশ আরও দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ পাবে। তিনি আরও বলেন, অন্যান্য সংস্থার সেবা বেজার মাধ্যমে অনলাইনে দিতে হলে ওই সব সংস্থাকে সংযুক্ত বা ইন্টিগ্রেটেড করতে হবে। 

বেজায় ওয়ান–স্টপ সার্ভিস চালু করতে সহযোগী হিসেবে ভূমিকা রেখেছে জাপানের উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা)। সংস্থাটির বিনিয়োগ উৎসাহ ও শিল্পসক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের আওতায় এ সহায়তা দেওয়া হচ্ছে।

সার্বিক বিষয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রথম আলোকে বলেন, বেজায় ওয়ান-স্টপ সার্ভিস উদ্বোধন একটি ইতিবাচক ঘটনা। তবে সাধারণ কয়েকটি সেবার বাইরে গুরুত্বপূর্ণ সেবাগুলো তাড়াতাড়ি চালু করাটা জরুরি। তিনি বলেন, যেহেতু সময়মতো সেবা না দিলে জবাবদিহি করতে হবে, সেহেতু অন্যান্য সরকারি সংস্থায় ওয়ান স্টপ সার্ভিসে যুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অনীহা থাকতে পারে। তাদের কত তাড়াতাড়ি যুক্ত করে সেবার আওতা বাড়ানো যায়, সেটাই দেখার বিষয়।


সূত্র : প্রথম আলো > https://www.prothomalo.com/economy/article/1620336/%E0%A7%A7%E0%A7%A7%E0%A6%9F%E0%A6%BF-%E0%A6%B8%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE-%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A7%9F%E0%A7%87-%E0%A6%93%E0%A7%9F%E0%A6%BE%E0%A6%A8-%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%AA%E0%A7%87%E0%A6%B0-%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE-%E0%A6%B6%E0%A7%81%E0%A6%B0%E0%A7%81

৫ মিনিটেই খুলবে ব্যাংক হিসাব

Picture

৫ মিনিটেই খুলবে ব্যাংক হিসাব


মিনিটে ব্যাংক হিসাব খোলেন নরসিংদীর বেলাব উপজেলার রানু রানী মদদ। সম্প্রতি ই-কেওয়াইসি চালুর পাইলট প্রকল্পের সময় পাটুলি ইউনিয়ন কেন্দ্রে তোলা। ছবি: এনআরবিসি

 
 

৩৫ বছর বয়সী মায়া বেগম ব্যাংক হিসাবের কিছুই বোঝেন না। থাকেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে। গত মাসে তিনি এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে একটি হিসাব খুলেছেন। এ জন্য তাঁর কোনো কাগজপত্র লাগেনি। পুরো বিষয়টি অবাকই লেগেছে প্রত্যন্ত গ্রামের লেখাপড়া না জানা এই হতদরিদ্র নারীর।

মায়া বেগম আমিরগঞ্জ ইউনিয়নে ওই ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং কেন্দ্রে গিয়ে আঙুলের ছাপ দিয়েছিলেন। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নির্বাচন কমিশনের তথ্যভান্ডার থেকে তাঁর পরিচিতি-তথ্য চলে আসে এজেন্টের কাছে। মাত্র পাঁচ মিনিটেই খুলে গেছে তাঁর ব্যাংক হিসাব।

মায়া বেগম মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলছিলেন, ‘ব্যাংক হিসাবের কিছুই বুঝি না। সরকারি ভাতা নিতে ব্যাংক হিসাব লাগবে। এজেন্টের কাছে গেছি। আঙুলের ছাপ দিছি। হিসাব নাকি খুইলা গেছে।’

বর্তমানে ব্যাংক হিসাব খুলতে বাধ্যতামূলক নো ইওর কাস্টমার (কেওয়াইসি) ফরম পূরণ বা গ্রাহককে বিস্তারিত তথ্য জমা দিতে হয়। ব্যাংকভেদে এই ফরমে ৫০ থেকে ৭০টি প্রশ্নের জবাব দিতে হয়। এতে ৩০ মিনিট পর্যন্ত সময় লেগে যায়। ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের যাচাই-বাছাই শেষে কয়েক দিন পর চালু হয় হিসাব। এবার সেই পরিস্থিতির অবসান হতে যাচ্ছে।

আগামী জানুয়ারিতে ইলেকট্রনিক কেওয়াইসি বা ই-কেওয়াইসি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর ফলে ব্যাংকগুলো তাদের শাখা, এজেন্ট ও বুথগুলোতে হিসাব খুলতে এই সুবিধা পাবে। এরই মধ্যে পাইলট প্রকল্প হিসেবে ৩৩ জেলার ৫০ এলাকায় ব্যাংক হিসাব খুলতে ই-কেওয়াইসি ব্যবহৃত হয়েছে। এতেই এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংকে হিসাব খুলেছেন নরসিংদীর মায়া বেগম।

ব্যাংকটির আমিরগঞ্জ ইউনিয়নের এজেন্ট নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাইলট প্রকল্প হিসেবে আমরা আঙুলের ছাপের মাধ্যমে গ্রাহকের তথ্য (কেওয়াইসি) সংগ্রহ করেছি। এর মাধ্যমে পাঁচ মিনিটেই হিসাব খুলছে।’

জানা যায়, বর্তমানে ভারত, মালয়েশিয়া, থাইল্যান্ডসহ বিভিন্ন দেশে চালু আছে ডিজিটাল এ সেবা। ২০১৬ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ ব্যাংক ই-কেওয়াইসি বিষয়ে কমিটি গঠন করে। মূলত সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির ভাতা প্রদানের জন্য হিসাব খুলতে ই-কেওয়াইসির বিষয়টি সামনে আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি বিভাগের মহাব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, নতুন এ সেবার ফলে পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী সহজেই ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসবে। এতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে বাংলাদেশ আরও এগিয়ে যাবে। ধাপে ধাপে এই সেবা সবার জন্য উন্মুক্ত করা হবে।

বর্তমানে ব্যাংক হিসাবের ফরম পূরণ করতে লাগে ৩০ মিনিট
আর হিসাব চালু হতে লেগে যায় কয়েক দিন
জানুয়ারিতে ই-কেওয়াইসি চালু করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক
ই-কেওয়াইসি চালু হলে ব্যাংক হিসাব খোলা সহজ হয়ে যাবে

বাংলাদেশে সামাজিক নিরাপত্তাবেষ্টনীর আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচির ভাতা এখন ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চলতি অর্থবছরে এ খাতে বরাদ্দ ৭৪ হাজার ৩৬৭ কোটি টাকা। আগে থেকে এ কর্মসূচির সুবিধাভোগী ছিল প্রায় ৭৬ লাখ মানুষ। এবার তা বেড়ে হবে ৮৯ লাখ।

যেভাবে চলবে ই-কেওয়াইসি
মূলত চারটি ধাপে সম্পন্ন হবে পুরো ই-কেওয়াইসি প্রক্রিয়া। প্রথমে হিসাব খুলতে আসা ব্যক্তিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, জন্মতারিখ বায়োমেট্রিকের (আঙুলের ছাপ, মুখমণ্ডলের ছবি বা আইরিশ) মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করা হবে। এ প্রক্রিয়া কোনো ব্যাংকের শাখায় বা এজেন্টদের কাছে থাকা ট্যাবে বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে সম্পন্ন করা হবে। তখন নির্বাচন কমিশনের তথ্যভান্ডার থেকে তাৎক্ষণিক যাচাই হবে গ্রাহকের পরিচিতি।

পরিচয় নিশ্চিত হলে গ্রাহকের নাম, মা-বাবার নাম, লিঙ্গ, পেশা, মোবাইল ফোন নম্বর, ঠিকানা, মনোনীত ব্যক্তির (নমিনি) পরিচয় উল্লেখ করতে হবে। জাতীয় পরিচয়পত্রে থাকা তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবে কেওয়াইসি ফরমে চলে আসবে। পরে গ্রাহকের ছবি তোলা হবে। এরপর হিসাব খোলার বিষয়ে গ্রাহককে মোবাইল ফোনে খুদে বার্তা পাঠাবে ব্যাংক। গ্রাহক বার্তা পাওয়া মানেই হিসাব খোলা সম্পন্ন। কাগজপত্র ছাড়াই পুরো কাজটি হবে অনলাইনে।

যেসব সেবা পাওয়া যাবে
ই-কেওয়াইসি দিয়ে হিসাব খোলা হলেও প্রথম পর্যায়ে বড় অঙ্কের লেনদেন করা যাবে না। বড় অঙ্কের লেনদেন করতে প্রচলিত নিয়মে কেওয়াইসি ফরম পূরণ করতে হবে। ই-কেওয়াইসি দিয়ে মোবাইলে আর্থিক সেবা তথা বিকাশ, রকেট সেবা নেওয়া যাবে। এজেন্ট ব্যাংকিং হিসাবে বছরে সর্বোচ্চ লেনদেন হবে এক লাখ টাকা। ঋণ নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ টাকা। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা জমা রাখা যাবে। পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র ও অন্যান্য সরকারি বন্ডে বিনিয়োগও করা যাবে।

ব্যাংক এশিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আরফান আলী প্রথম আলোকে বলেন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য ই-কেওয়াইসির বিকল্প নেই। কারণ, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীর পক্ষে এত বড় কেওয়াইসি ফরম পূরণ করা সম্ভব নয়। ধীরে ধীরে ই-কেওয়াইসির পরিধি বাড়াতে হবে।


খোলা হয়েছে ১ হাজার ৭৫০টি হিসাব
গত সেপ্টেম্বরে ১৬টি ব্যাংক, একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, বিকাশ ও রকেট মিলে ১ হাজার ৭৫০টি ব্যাংক হিসাব ই-কেওয়াইসির মাধ্যমে খুলেছে। এতে দেখা যায়, প্রতিটি ই-কেওয়াইসি সম্পন্ন করতে সময় লেগেছে পাঁচ মিনিট। মূলত এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ব্যবহার করে এসব হিসাব খোলে ব্যাংকগুলো।

হিসাব খোলা ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সোনালী, অগ্রণী, জনতা, রূপালী, ব্যাংক এশিয়া, এনআরবি কমার্শিয়াল, ইসলামী, মার্কেন্টাইল, ট্রাস্ট, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, ওয়ান, ব্র্যাক, ফার্স্ট সিকিউরিটি, ইউসিবিএল, দি সিটি, আইএফআইসি ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসি।

সিটি ব্যাংকের এমডি মাসরুর আরেফিন প্রথম আলাকে বলেন, ‘আমরা পাইলট ভিত্তিতে ১০০ হিসাব খুলেছি। আগের চেয়ে অনেক কম সময়ে হিসাব খোলা যাচ্ছে। গণমানুষকে ব্যাংকিং সেবায় আনতে এর বিকল্প নেই।’

এরই মধ্যে মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা প্রতিষ্ঠান বিকাশ ও নগদ ই-কেওয়াইসি সুবিধা চালু করেছে। বিকাশের করপোরেট কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিম প্রথম আলোকে বলেন, আগে হিসাব খুলতে সাত দিন পর্যন্ত সময় লেগে যেত। সব ফরম প্রধান কার্যালয়ে আসত, যাচাই-বাছাই শেষে হিসাব খোলা হতো। এখন কয়েক মিনিটেই খুলে যাচ্ছে। বিকাশে হিসাব খুলতে কাউকে এজেন্টদের কাছেও যেতে হচ্ছে না। নিজেই নিজের হিসাব খুলতে পারছেন।

কমবে অবৈধ লেনদেন
সারা বিশ্বে কতসংখ্যক মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় আছে, তা নিয়ে গত বছর গ্লোবাল ফিনডেক্স সূচক-২০১৭ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিশ্বব্যাংক। প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১ সালে বাংলাদেশের প্রাপ্তবয়স্ক ৩০ শতাংশ মানুষের ব্যাংক হিসাব ছিল। ২০১৭ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৪০ শতাংশ। তবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার কারণে সব মিলিয়ে ৫০ শতাংশ মানুষ আর্থিক সেবার আওতায় এসেছে।

ই-কেওয়াইসি চালু হলে আরও বিপুলসংখ্যক মানুষ ব্যাংকিং সেবার আওতায় আসবে বলে মনে করছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। এতে ব্যাংকের বাইরে থাকা টাকা ব্যাংকিং চ্যানেলে চলে আসবে। ফলে টাকার অবৈধ ব্যবহারও কমবে। কারণ, অবৈধ লেনদেনের বড় অংশই নগদে হয়। ব্যাংকিং চ্যানেলে এসব টাকা এলে বাড়বে অর্থনীতির গতিও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ প্রথম আলোকে বলেন, যত বেশি মানুষকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনা যাবে, দেশের অর্থনীতির জন্য তত ভালো হবে। এতে অনানুষ্ঠানিক লেনদেন কমে আসবে। অর্থের অবৈধ ব্যবহারও কমবে।


সূত্র: প্রথম আলো > https://www.prothomalo.com/economy/article/1621106/%E0%A7%AB-%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%87-%E0%A6%96%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A7%87-%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%95-%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AC

 

বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি

Picture

 বাংলাদেশ ব্যাংকে ঋণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি

  • ঋণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি
  • সুদহার বেড়ে যাওয়ায় ও সঞ্চয়পত্র কেনায় কড়াকড়ি আরোপের ফলে ব্যাংকে আমানত বাড়ছে

বাংলাদেশ ব্যাংকবাংলাদেশ ব্যাংকগত বছরের শুরুতেও ব্যাংক খাতে আমানতের চেয়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল প্রায় দ্বিগুণ। এ সময় ব্যাংক খাতে দেখা দিয়েছিল তারল্যসংকট। তবে পরিস্থিতি এখন ভিন্ন। ব্যাংক খাতে এখন আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধি প্রায় সমান হয়ে গেছে। মূলত সুদহার বাড়ায় আমানতের প্রবৃদ্ধি বেড়েছে। এতে কেটে গেছে তারল্যসংকটও। আর ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোর সতর্কতার কারণে কমে গেছে ঋণের প্রবৃদ্ধিও। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য পর্যালোচনা করে এমন চিত্র পাওয়া গেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৭ সালের আগস্টে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি ছিল ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। একই সময়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। গত বছরের শুরু থেকেই ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট দেখা দেয়। আর সেই সংকট দূর করতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিভিন্ন নীতিমালায় পরিবর্তন আনে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোর আমানত পেতে সরকারও নীতিমালা পরিবর্তন করে। বেসরকারি ব্যাংকগুলোকে সরকারি আমানতের ৫০ শতাংশ নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়। ফলে ২০১৮ সালের আগস্টে ব্যাংক খাতে আমানতের প্রবৃদ্ধি কিছুটা বেড়ে হয় ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ। একই সময়ে ঋণের প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয় ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

তবে এখন পরিস্থিতি ভিন্ন। ব্যাংকগুলোর আমানত ও ঋণের প্রবৃদ্ধি এখন প্রায় সমান। সর্বশেষ গত আগস্টে আমানতের প্রবৃদ্ধি বেড়ে হয়েছে ১১ দশমিক ৪ শতাংশ। আর সরকারি-বেসরকারি খাত মিলিয়ে ঋণের মোট প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১২ দশমিক ৩২ শতাংশ।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা এ বি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, সঞ্চয়পত্র কেনার ক্ষেত্রে নিয়মের কড়াকড়ি আরোপের ফলে ব্যাংকে আমানত কিছুটা বাড়ছে। তবে সেটা খুব বেশি মাত্রায় নয়। আর বড় অঙ্কের খেলাপি ঋণের কারণে ব্যাংক খাতে তারল্যসংকট এখনো রয়ে গেছে।

মির্জ্জা আজিজ আরও বলেন, ব্যবসায়ীরা ঋণ নিতে খুব বেশি আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, ঋণের সুদহার দুই অঙ্কের ওপরে। এ ছাড়া বৈশ্বিক অর্থনীতির গতিও মন্থর হয়ে গেছে। তাতে কমছে রপ্তানি আয়ও। এ কারণে ব্যাংক খাতে ঋণের চাহিদা কিছুটা কমে গেছে।

ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, সুদহার বেড়ে যাওয়ায় আগের চেয়ে বেশি আমানত পাওয়া যাচ্ছে। আর ব্যাংকগুলোর সতর্কতার কারণে ঋণের গতি কমছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত আগস্টে বেসরকারি খাতের ঋণ প্রবৃদ্ধি কমে হয় ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ, গত জুন ও জুলাইয়ে যা ছিল যথাক্রমে ১১ দশমিক ২৯ ও ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ।

এদিকে চলতি বছরের শুরু থেকেই আমানত ও ঋণের সুদহার ধীরে ধীরে বাড়ছে। গত জানুয়ারিতে আমানতের গড় সুদহার ছিল ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ, গত জুলাইয়ে যা বেড়ে হয়েছে ৫ দশমিক ৬০ শতাংশ। আর ঋণের সুদহার জানুয়ারিতে ছিল ৯ দশমিক ৪৯ শতাংশ, গত আগস্টে যা বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৬০ শতাংশ। গড় সুদহার ১০ শতাংশের মধ্যে হলেও অনেক ব্যাংক এখন ১২ থেকে ১৫ শতাংশ সুদে আমানত নিচ্ছে, আর ঋণ দিচ্ছে সর্বোচ্চ ১৮ শতাংশ সুদেও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকগুলো গ্যাস, বিদ্যুৎ ও পোশাক খাতের ভালো প্রকল্পগুলোতে ৯ শতাংশ সুদে ঋণ দিচ্ছে। সরকারি চার ব্যাংক মিলে দুই মাসে একটি প্রকল্পেই সাড়ে তিন হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে। তবে অন্য খাতে ঋণের সুদহার এখনো অনেক বেশি।

জানতে চাইলে অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) চেয়ারম্যান সৈয়দ মাহবুবুর রহমান বলেন, ঋণের প্রবৃদ্ধি কমে আমানতের সমান হয়ে গেছে। মনে হচ্ছে দেশের ব্যবসার গতি কিছুটা মন্থর হয়ে গেছে। মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি কমেছে। আবার গ্রাহকেরা নানা ধরনের সুবিধা পেতে সরকারি ব্যাংকের দিকে বেশি ছুটছেন।ঋণ ও আমানতের প্রবৃদ্ধি


সূত্র : প্রথম আলো

ব্যবসা সহজ করার সূচকে ৮ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

Picture

ব্যবসা সহজ করার সূচকে ৮ ধাপ এগিয়েছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশে ব্যবসা করা কিছুটা সহজ হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ইজ অব ডুয়িং বিজনেস রিপোর্টে ২০২০ বা সহজে ব্যবসা করার সূচক অনুযায়ী এ বছর ১৯০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৬৮তম। গতবার যা ছিল ১৭৬তম।


বাংলাদেশের এতটা এগিয়ে আসার কারণ হিসেবে বিশ্বব্যাংক বলছে, ব্যবসা শুরু করতে আগের চেয়ে খরচ কমেছে বাংলাদেশে। রাজধানী ঢাকাসহ শহর এলাকায় বিদ্যুৎ প্রাপ্তি সহজ হয়েছে। এ ছাড়া ঋণপ্রাপ্তির যাবতীয় তথ্য এখন সহজে, আরও বিস্তারিত আকারে পান উদ্যোক্তারা।

এবারের প্রতিবেদনে শীর্ষ স্থানে আছে নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর ও হংকং।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে আছে। প্রতিবেদনে আফগানিস্তানের অবস্থান ১৭৩ তম। ভারত দক্ষিণ এশিয়ায় শীর্ষস্থানে আছে। ভারত সারা বিশ্বে ৬৩তম স্থানে আছে।

ব্যবসায় শুরু করা, ঋণপ্রাপ্তি, বিদ্যুৎ প্রাপ্তি, কর প্রদান, চুক্তির বাস্তবায়ন ইত্যাদি সূচক দিয়ে ১৯০টি দেশের ব্যবসা করার পরিস্থিতি নিয়ে এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়।


সূত্র : প্রথম আলো


আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২১০১ কোটি টাকা

Picture

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ বেড়ে ২১০১ কোটি টাকা

ব্যাংকের মতো ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানেও বেড়েছে খেলাপি ঋণ। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে মোট ২ হাজার ১০১ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক শেষে এ পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে এসব প্রতিষ্ঠানে খেলাপি ঋণ বেশি হয়েছে ৪১৯ কোটি টাকা, যা প্রায় ২৫ শতাংশ। আর গত ৯ মাসের ব্যবধানে বেড়েছে ৭২৯ কোটি টাকা, যা ৫৩ দশমিক ১৩ শতাংশ। গত বছরের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৩৭২ কোটি টাকা। রাজনৈতিক অস্থিরতার প্রভাবে আগে বিতরণ করা ঋণের আদায় কমে যাওয়ায় এমন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশনের (বিএলএফসিএ) চেয়ারম্যান আসাদ খান সমকালকে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ৩ থেকে ৫ বছর মেয়াদি ঋণ দিয়ে থাকে। এক বছর ধরে চরম রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং দীর্ঘদিন ধরে বিদ্যুৎ-গ্যাসের সংযোগ বন্ধ থাকায় মেয়াদি ঋণ গ্রহণকারী অনেক ভালো উদ্যোক্তা যথাসময়ে ঋণের অর্থ ফেরত দিতে পারছেন না। আবার অনেকে পণ্য উৎপাদন করে তা বিক্রি করতে পারছেন না। এসব কারণে ঋণের আদায় একেবারে কম। এতে বাড়ছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। এই পরিস্থিতি স্থায়ী হলে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ব্যবসা চালানোই কঠিন হয়ে পড়বে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, ব্যাংকের তুলনায় তুলনামূলকভাবে ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে খেলাপি ঋণ বেশি বেড়েছে। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। এর আগের প্রান্তিক শেষে খেলাপি ঋণ ছিল ৫২ হাজার ৩০৯ কোটি টাকা। আর গত বছরের ডিসেম্বর শেষে ছিল ৪২ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৪ হাজার ৪১১ কোটি টাকা, যা ৮ দশমিক ৪৩ শতাংশ। আর ৯ মাসে বেড়েছে ১৩ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। হার দাঁড়িয়েছে ৩২ দশমিক ৭৫ শতাংশ। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর বেশিরভাগ ঋণ মেয়াদি হওয়ায় তাদের আদায় কমেছে। এ কারণে তুলনামূলক পরিস্থিতি বেশি খারাপ বলে সংশ্লিষ্টরা জানান।
প্রতিবেদনে দেখা গেছে, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ঋণ স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার ১৮ কোটি টাকা। জুন শেষে ছিল ২৭ হাজার ৩৬১ কোটি টাকা।
এ হিসাবে তিন মাসে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ২ হাজার ৬৫৭ কোটি টাকা, যা ৯ দশমিক ৭১ শতাংশ। ৯ মাস আগে তথা গত ডিসেম্বরে ঋণ স্থিতি ছিল ২৫ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা। এতে করে ৯ মাসে বেড়েছে ৪ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা, যা ১৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণ শ্রেণীকরণের তিনটি পর্যায় রয়েছে। তা হলো_ সাব স্ট্যান্ডার্ড বা নিম্নমান, সন্দেহজনক এবং মন্দ বা ক্ষতিজনক। এই তিনটি পর্যায় বিবেচনায় নিয়ে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তা সঞ্চিতি (প্রভিশন) সংরক্ষণ করতে হয়। সেপ্টেম্বর প্রান্তিকের মোট খেলাপি ঋণের মধ্যে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মন্দ বা ক্ষতি মানে শ্রেণীকৃত ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৯১ কোটি টাকা। জুনে ছিল ৮৮৯ কোটি টাকা। সন্দেহজনক মানে শ্রেণীকরণ করা হয়েছে ৩০৯ কোটি টাকা। আগের প্রান্তিক শেষে ছিল ৩৩৮ কোটি টাকা। আর নিম্নমানে শ্রেণীকরণ করা হয়েছে ৮০১ কোটি টাকা, যা গত জুনে ছিল ৪৫৫ কোটি টাকা। ব্যাংকগুলোতে নতুন নীতিমালার আলোকে ঋণ শ্রেণীকরণ করতে হলেও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগের নিয়মেই শ্রেণীকরণ করছে। এতে করে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তিনটি পর্যায়ের শ্রেণীকৃত ঋণই খেলাপি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

তথ্যসূত্র : দৈনিক সমকাল