উন্নয়ন ব্যয়ের কার্যকর বাস্তবায়নে জোর দিতে হবে

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন অন্বেষণ বেসরকারি বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সরকারি বিনিয়োগের কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো উন্নয়নে সরকারি বিনিয়োগের গুণগত মান অসন্তোষজনক। পাশাপাশি অবকাঠামোর ঘাটতি এবং ব্যবসায়িক আস্থার অভাবে বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতিও মন্থর।
একই সঙ্গে গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি সামাজিক খাতে পর্যাপ্ত বিনিয়োগ করারও আহ্বান জানিয়েছে। কেননা, তা মানব উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে। ‘বাংলাদেশ অর্থনৈতিক পর্যালোচনা ২০১৬ ’-এর জানুয়ারি সংখ্যায় এসব কথা বলা হয়েছে। সংগঠনটির মতে, চলমান মন্থর বেসরকারি বিনিয়োগ পরিস্থিতি এবং সরকারি বিনিয়োগ বাস্তবায়নে অদক্ষতার কারণে দেশের মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।
উন্নয়ন অন্বেষণ বিশ্লেষণের জন্য সরকারি বিনিয়োগের পাঁচটি অন্যতম প্রধান খাতকে বেছে নিয়েছে। যেমন, সড়ক ও মহাসড়ক, সেতু, স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ। এ খাতগুলোতে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাস্তবায়নের হার গত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ের তুলনায় চলতি ২০১৫-১৬ এর অর্থবছরের একই সময়ে অসন্তোষজনক। ছয় মাসে সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের বরাদ্দের ২৯ শতাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে, আগের অর্থবছরের একই সময়ে ৯ শতাংশই ছিল। অন্যদিকে, সেতু বিভাগে বাস্তবায়নের হার মাত্র ১৮ শতাংশ, আগের অর্থবছরের একই সময়ে ছিল ২৮ শতাংশ। আবার চলতি অর্থবছরে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে এডিপি বাস্তবায়নের হার হচ্ছে যথাক্রমে ১৬ শতাংশ, ২৬ শতাংশ এবং ২৮ শতাংশ। আগে যা ছিল যথাক্রমে ২২ শতাংশ, ৩২ শতাংশ এবং ৩৪ শতাংশ। সব মিলিয়ে এ প্রবণতা থেকে বলা যায়, এবার প্রধান ভৌত অবকাঠামোগত উন্নয়ন প্রকল্পগুলো নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ না হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পদ্মা সেতু নিয়ে উন্নয়ন অন্বেষণের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে নির্মাণকাজের ১২ শতাংশ সম্পন্ন হওয়ার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়েছিল মাত্র ১০ শতাংশ। আবার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে ৩৫ শতাংশ লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে হয়েছে মাত্র ২০ শতাংশ। নির্মাণকাজের অগ্রগতির এ ধারা বিবেচনায় নিয়ে বলা যায়, ২০১৭-১৮ অর্থবছরে পদ্মা সেতু নির্মাণকাজের ৯০ শতাংশ শেষ করা প্রায় অসম্ভব। একইভাবে, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণকাজের ৫ শতাংশ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে কোনো অগ্রগতিই হয়নি। আবার ২০১৪-১৫ অর্থবছরে নির্মাণকাজ ৪০ শতাংশ সম্পন্ন করার লক্ষ্যমাত্রা সংশোধন করে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। সুতরাং ২০১৭-১৮ অর্থবছরে কাজটি শেষ করাটাও অসম্ভব।
স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সামাজিক নিরাপত্তা ও কল্যাণ খাতে উন্নয়ন ব্যয় বরাদ্দের হ্রাসমান প্রবণতার কথা উল্লেখ করে সবশেষে উন্নয়ন অন্বেষণ বলেছে, সামাজিক খাতসমূহে উন্নয়ন ব্যয় বরাদ্দ কমার এ হার বজায় থাকলে দেশে সামাজিক উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হতে পারে।

তথ্যসূত্র : প্রথমআলো

About Author

Profile Picture

Golden Bangladesh

Golden Bangladesh is a point of access to information.We present information from diverse sources in a unified way. It is the leading web portal, e-Directory and business guide in Bangladesh.

Leave a Comment