বাংলাদেশ এখন ট্রানজিট দেশ

Picture
 

বাংলাদেশ–ভারত বাণিজ্য সেমিনারে অর্থমন্ত্রী

বাংলাদেশ এখন ট্রানজিট দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক | আপডেট: ০১:০৫, আগস্ট ০৯, ২০১৫ | প্রিন্ট সংস্করণ
 

০ Like

     

অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত গতকাল শনিবার ঢাকায় এক সেমিনারে বলেছেন, বাংলাদেশ এখন ট্রানজিট দেশ। বাংলাদেশের এই ট্রানজিট দেশ হওয়া নিয়ে সর্বদলীয় ঐকমত্য রয়েছে। খালেদা জিয়াও এ বিষয়ে পূর্ণ সমর্থন দিয়েছেন।
তবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ট্রানজিটের পূর্ণ সুবিধা পেতে হলে অবকাঠামো উন্নয়নে গুরুত্ব দিতে হবে। আবার অবকাঠামো উন্নয়নে জোর দিতে হবে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি)। ভারত ও বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের ব্যবসায়ীদের বিনিয়োগ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকার সহায়তা করবে।
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য আলোচনা: সামনে এগোনোর উপায়’ শীর্ষক এই সেমিনারে অর্থমন্ত্রী প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। যৌথভাবে সেমিনারটির আয়োজন করে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও ইন্ডিয়ান চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি)।
অর্থমন্ত্রী দেশের উন্নয়নের জন্য আঞ্চলিক যোগাযোগকে গুরুত্বপূর্ণ বলে উল্লেখ করেন এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে একটি অভিন্ন বাজার তৈরিরও তাগিদ দেন। তিনি মনে করেন, এটি হলে বিনিয়োগ, লেনদেন, অবকাঠামো উন্নয়নসহ সব ধরনের উন্নয়নে সহায়ক হবে।
আইসিসির মহাসচিব রাজীব সিংয়ের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতিবিষয়ক উপদেষ্টা মসিউর রহমান, ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন ও এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।
পঙ্কজ সরন বলেন, ‘আশা করি ভারতের যে ধরনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল বাংলাদেশে এসেছে, বাংলাদেশ থেকেও একই রকমের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল ভারতে যাবে।
আবদুল মাতলুব আহমাদ বলেন, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনতে হলে ভারতের বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি করে এ দেশে বিনিয়োগ করতে হবে।
দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হয় এফবিসিসিআই ও আইসিসি আয়োজিত এই সেমিনার। প্রথম পর্বে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য সম্পর্ক এবং ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে আঞ্চলিক সংযোগ বাড়াতে সড়ক যোগাযোগসহ নৌপথে ও উপকূলীয় অঞ্চল দিয়ে জাহাজ পরিবহনের বিভিন্ন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয়। এই পর্ব শেষে চলে যান অর্থমন্ত্রী।
দ্বিতীয় পর্বে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা মসিউর রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ভারতের সাবেক জ্বালানিসচিব অনিল রাজদান। অনুষ্ঠানের এই পর্বে তিনটি আলাদা বিষয়ের ওপর আলোচনা হয়। যে তিনটি বিষয়ে আলোচনা হয় সেগুলো হলো, ‘সংযোগ-প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি’; ‘বাংলাদেশের উন্নয়নে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের ভূমিকা’ এবং ‘সেবা খাতে পারস্পরিক সহযোগিতা’।
জ্বালানি পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন অনিল রাজদান। তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন অনেকাংশে প্রাকৃতিক গ্যাসনির্ভর আর ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদন মূলত কয়লানির্ভর। বিদ্যুৎ উৎপাদনে বাংলাদেশকে প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে আনার পরামর্শ দেন তিনি।
মাথাপিছু বিদ্যুৎ ব্যবহারে বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে আছে উল্লেখ করে অনিল রাজদান বলেন, গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ-সংযোগ এখনো অনেক কম। তিনি মনে করেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনে সরকারের চেয়ে বেসরকারি খাতের ভূমিকা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এ ক্ষেত্রে সরকার অবকাঠামো তৈরি করে সহায়তা করতে পারে।
মসিউর রহমান বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ উভয় দেশের রয়েছে বিশাল মানবসম্পদ। প্রয়োজন অনুযায়ী মানবসম্পদ বিনিময়ে দুই দেশের এগিয়ে আসা উচিত বলে তিনি মনে করেন।
মসিউর রহমান আরও বলেন, ভারতকে মংলায় ও ভেড়ামারায় দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে মংলায় ভারত-বাংলাদেশ মৈত্রী বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করবে ভারত।
ভারতের কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা সেই দেশে চিকিৎসা নিতে আগ্রহী বাংলাদেশি নাগরিকদের স্বল্প খরচে এই সুবিধা নেওয়ার আহ্বান জানান। এ জন্য তাঁরা বাংলাদেশি নাগরিকদের ভিসা পাওয়ার ব্যাপারে সহায়তা করবেন বলে উল্লেখ করেছেন।

তথ্যসূত্র: প্রথমআলো

About Author

Profile Picture

Golden Bangladesh

Golden Bangladesh is a point of access to information.We present information from diverse sources in a unified way. It is the leading web portal, e-Directory and business guide in Bangladesh.

Leave a Comment