পোশাকশিল্পে নৈরাজ্য ঠেকাতে পাঁচ ঘোষণা

পোশাকশিল্পে নৈরাজ্য ঠেকাতে পাঁচ ঘোষণা

টানা আট দিন শ্রমিক বিক্ষোভের পর অবশেষে গতকাল শনিবার বিজিএমইএর নেতারা পোশাকশ্রমিক নেতাদের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বৈঠক করেছেন। পরে পোশাকশিল্পের বর্তমান নৈরাজ্য ঠেকাতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার যৌথ ঘোষণা দেয় উভয় পক্ষ।

এদিকে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক শ্রমিকনেতা বর্তমান শ্রমিক-অসন্তোষকে উসকে দেওয়ার জন্য নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানকে দায়ী করে বক্তব্য দেন। এ সময় নৌমন্ত্রীর পক্ষের কয়েকটি শ্রমিক সংগঠনের নেতারা এর প্রতিবাদ করেন। উত্তপ্ত বাক্যবিনিময়ের একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটে।

বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ)র কার্যালয়ের সভাকক্ষে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটায় বৈঠকটি শুরু হয়। সভাপতিত্ব করেন সমিতির সভাপতি আতিকুল ইসলাম। এতে ৪০টির মতো শ্রমিক সংগঠনের নেতারা অংশ নেন।

প্রায় আড়াই ঘণ্টা বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে যৌথ ঘোষণা পড়ে শোনান আতিকুল ইসলাম। এতে যত দ্রুত সম্ভব নিম্নতম মজুরি বোর্ডকে নতুন মজুরিকাঠামো ঘোষণার অনুরোধ জানানো হয়। একই সঙ্গে ওই মজুরিকাঠামো ঘোষণার পর পরই তা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে বিজিএমই। এ ছাড়া আগামী ঈদের আগেই শ্রমিকদের বেতন-বোনাস দেওয়ার জন্য কারখানার মালিকদের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

বাকি তিন ঘোষণা হচ্ছে—দেশের ৭৯ শতাংশ রপ্তানি আয় অর্জনকারী পোশাকশিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করবেন মালিক ও শ্রমিকনেতারা। বহিরাগত ব্যক্তিদের গুজবে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনার বিরুদ্ধে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করবেন তাঁরা। এ ছাড়া নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে সরকারের প্রতি অনুরোধ জানানো হয়।

বৈঠকে সম্মিলিত গার্মেন্ট শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি নাজমা আক্তার, নিম্নতম মজুরি বোর্ডের শ্রমিকপক্ষের প্রতিনিধি ও জাতীয় গার্মেন্ট শ্রমিক কর্মচারী লীগের সভাপতি সিরাজুল ইসলাম, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মো. বাহারানে সুলতান, বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন ও সহসভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, বর্তমান সহসভাপতি শহিদুল্লাহ আজিম, রিয়াজ-বিন-মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা ছিল। তবে সভা শুরুর আধা ঘণ্টা পরই সভাকক্ষের বাইরে থেকে হট্টগোলের শব্দ শোনা যায়। নৌমন্ত্রীর পক্ষের দু-তিনজন শ্রমিকনেতা এ সময় উচ্চস্বরে কথা বলতে বলতে সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন। এ সময় তাঁরা সভা বয়কটের হুমকি দিলেও বিজিএমইএর নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।

এ প্রসঙ্গে বৈঠক শেষে এক শ্রমিকনেতা বলেন, আনুষ্ঠানিক সভা শুরুর আগেই উভয় পক্ষের শ্রমিকনেতাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। সভা শুরুর পর তা ব্যাপক আকার নেয়। মূলত শ্রমিক অসন্তোষের জন্য শ্রমিকনেতাদের একটি পক্ষ শাজাহান খানকে দায়ী করলে সভায় হট্টগোল হয়।

নাজমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, বৈঠকে বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কীভাবে শান্ত করা যায়, সেসব নিয়েই মূলত আলোচনা হয়েছে। মজুরি নিয়ে তেমন আলোচনা হয়নি। তবে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়ে বিজিএমইএর নেতারা ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছেন।

prothom-alo: সেপ্টেম্বর ২৯, ২০১৩

About Author

Profile Picture

Golden Bangladesh

Golden Bangladesh is a point of access to information.We present information from diverse sources in a unified way. It is the leading web portal, e-Directory and business guide in Bangladesh.

Leave a Comment