ফের মূল্যবৃদ্ধির ধারায় পুঁজিবাজার
ডিএসই-৩০ সূচক বাড়ে ৪ দশমিক ২৬ পয়েন্ট। দ্বিতীয় পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে সার্বিক মূল্যসূচক ও সিএসসিএক্স সূচকের যথাক্রমে ২৬ দশমিক ৭০ ও ১৬ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট উন্নতি ঘটে। এ দিকে সূচকের উন্নতি ঘটলেও গতকাল বাজারগুলোর লেনদেনে অবনতি ঘটে। ঢাকায় লেনদেন নেমে আসে ৪৬৮ কোটি টাকায়। আগের দিন সোমবার এ বাজারে লেনদেন হয় ৫২১ কোটি টাকা। চট্টগ্রামে ৪৪ কোটি টাকার স্থলে লেনদেন হয় ৪০ কোটি টাকা। গতকাল দুই পুঁজিবাজারের লেনদেনে টেক্সটাইল ও মূল্যবৃদ্ধিতে প্রাধান্য ধরে রাখে বীমা খাত। ডিএসই’র লেনদেনের শীর্ষ দু’টি কোম্পানি ছাড়াও বাজারটির শীর্ষ বিশে উঠে আসে এ খাতের ছয়টি কোম্পানি। চলতি সপ্তাহের শুরু থেকেই লেনদেনে প্রাধান্য ধরে রাখছে টেক্সটাইল খাত। প্রায় প্রতিদিনের লেনদেনের একটি বড় অংশ দখলে রাখার পাশাপাশি ডিএসই’র শীর্ষ কোম্পানির তালিকায় উঠে আসছে এ খাতের বেশ কয়েকটি কোম্পানি। অপর দিকে মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ দশে জায়গা করে নেয় বীমা খাতের ছয়টি। এ খাতের তালিকাভুক্ত ৪৬টি কোম্পানির মধ্যে একটি ছাড়া সব কোম্পানিরই শেয়ারের দাম বেড়েছে গতকাল। দীর্ঘ দিন মূল্যস্তর অনেকটা স্থির অবস্থায় কাটানোর পর সোম ও মঙ্গলবার এ দু’দিন উল্লেøখযোগ্য মূল্যবৃদ্ধি ঘটে এ খাতে। মঙ্গলবার মূল্যবৃদ্ধি দিয়েই শুরু হয় দুই পুঁজিবাজারের লেনদেন। প্রথম দিকে সূচকের বড় ধরনের উন্নতিও ঘটে। ঢাকায় ৪ হাজার ২১ পয়েন্ট থেকে লেনদেন শুরু করে আধঘণ্টায় ডিএসইএক্স সূচকটি ৪ হাজার ৬৪ পয়েন্টে পৌঁছে। এর পরই বিক্রয়চাপে পড়ে বাজার। পরবর্তী এক ঘণ্টায় সূচকটি আবার নেমে আসে ৪ হাজার ৪২ পয়েন্টে। দুপুর ১২টার দিকে বিক্রয়চাপ কমে গেলে আবার ঊর্ধ্বমুখী হয় বাজার সূচক। এক ঘণ্টার টানা মূল্যবৃদ্ধির পর বেলা ১টায় সূচকটি পৌঁছে যায় ৪ হাজার ৬৬ পয়েন্টে। লেনদেনের এপর্যায়েই আসে দিনের বড় বিক্রয়চাপটি। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত এ চাপ অব্যাহত থাকলে বৃদ্ধি পাওয়া সূচকের মাত্র ৯ পয়েন্ট উন্নতি ধরে রেখে লেনদেন শেষ করে ডিএসই। এ দিকে লেনদেন হওয়া খাতগুলোর মধ্যে বীমার পাশাপাশি মূল্যবৃদ্ধিতে এগিয়ে ছিল সিমেন্ট ও নন ব্যাংক আর্থিক প্রতিষ্ঠান। অপর দিকে সবচেয়ে খারাপভাবে দিন পার করে ব্যাংক ও মিউচুয়াল ফান্ড। জ্বালানি, রসায়ন, টেক্সটাইল, প্রকৌশল ও সিরামিক খাতে ছিল মিশ্র আচরণ। ঢাকায় লেনদেন হওয়া ২৯১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দাম বাড়ে ১৫১টির। ১১৬টি দরপতনের শিকার হয়। ২৪টির দর ছিল অপরিবর্তিত। অপর দিকে চট্টগ্রামে লেনদেন হওয়া ২২৩টি সিকিউরিটিজের মধ্যে ১০৪টির দাম বাড়লেও কমে ১০২টির। ১৭টির দর ছিল অপরিবর্তিত। দিনের বাজার আচরণে কিছুটা পরিবর্তন ঘটে গতকাল। কিছু দিন ধরে অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে দুই বাজারের শীর্ষ মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসা কয়েকটি কোম্পানির দরপতন কিছুটা কমেছে। গতকালও এ ধরনের কোম্পানিগুলোর কয়েকটি ডিএসই’র মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে উঠে এলেও কয়েকটি আবার দরপতনের শীর্ষ তালিকায় চলে আসে। এদের মধ্যে ছিল মডার্ন ডাইং, দেশ গার্মেন্ট, জেএমআই সিরিঞ্জ ও আনলিমা ইয়ার্ন ডাইং। আর এদের পরিবর্তে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায় উঠে আসে বীমা খাতের কোম্পানি। তারপরও রহিমা ফুড ও হাক্কানি পেপার মিলের মতো কোম্পানিগুলো গতকালও ডিএসই’র মূল্যবৃদ্ধির তালিকার শীর্ষে ছিল। বাজার আচরণের এ পরিবর্তনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এলেও তারা বিষয়টি নিয়ে নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্রুত হস্তক্ষেপ দাবি করেন। তাদের মতে, খাতওয়ারি মূল্যবৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাজারগুলোতে ভারসাম্য ফিরে আসবে। ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে লাভবান হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হবে। এর ম্যাধমে বিভিন্ন খাতের ভালো কোম্পানিগুলো উঠে আসবে মূল্যবৃদ্ধির তালিকায়। তাল্লøু স্পিনিংকে হটিয়ে গতকাল ডিএসই’র লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে একই খাতের সিএমসি কামাল। ১৭ কোটি ৯৫ লাখ টাকায় ৫০ লাখ ৪০ হাজার শেয়ার বেচাকেনা হয় কোম্পানিটির। ১৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা লেনদেন করে জেনারেশন নেশন ফ্যাশন্স ছিল দ্বিতীয় স্থানে। ডিএসই’র শীর্ষ লেনদেনকারী কোম্পানির মধ্যে আরো ছিল অ্যাকটিভ ফাইন কেমিক্যালস, বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলস, ইউনাইটেড এয়ারওয়েজ, এমআই সিমেন্ট, আর এন স্পিনিং, বঙ্গজ লিমিটেড, তাল্লøু স্পিনিং ও জেএমআই সিরিঞ্জ। গতকাল ডিএসই’র মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষে ছিল রহিমা ফুড। ৯ দশমিক ৫৭ শতাংশ দাম বাড়ে কোম্পানিটির। ৯.৫৩ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি পেয়ে এ তালিকায় দ্বিতীয় ছিল হাক্কানি পেপার অ্যান্ড পাল্প। এ ছাড়া উল্লেøখযোগ্য মূল্যবৃদ্ধি পাওয়া অন্য কোম্পানির মধ্যে অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স ৯.০৯, পিপলস ইন্স্যুরেন্স ৮.৬৩, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স ৭.৮৭, রূপালী ৭.০০, তাকাফুল ৬.৯৯ ও সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্সের ৬.৩৬ শতাংশ মূল্যবৃদ্ধি ঘটে। অপর দিকে দিনের সর্বোচ্চ দর হারায় মডার্ন ডাইং। ৯ দশমিক ৮৭ শতাংশ দর হারায় কোম্পানিটি।
Leave a Comment