Paripatra 2013-2014

Displaying 1-1 of 1 result.

Paripatra 2013-2014

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড
রাজস্ব ভবন
সেগুনবাগিচা, ঢাকা।

নথি নং-০৮.০১.০০০০.০৩০.০৩.০০৫.২০১৩/৪৪  তারিখঃ ১২/০৮/২০১৩

পরিপত্র-১ (আয়কর)/২০১৩

বিষয়ঃ অর্থ বছর ২০১৩-২০১৪ এর বাজেট কার্যক্রমের আওতায় আয়কর আইন ও বিধির পরিবর্তন সম্পর্কিত স্পষ্টীকরণ।

অর্থ আইন, ২০১৩ প্রবর্তন ও বিভিন্ন প্রজ্ঞাপন জারীর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এবং আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এ কতিপয় সংশোধনী আনা হয়েছে। নব প্রবর্তিত ও সংশোধিত আইন, বিধি ও প্রজ্ঞাপনসমূহের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিতকল্পে ও করদাতাদের জ্ঞাতার্থে উক্ত পরিবর্তন/ সংশোধনসমূহ নিম্নরূপে উপস্থাপন করা হলোঃ

১। ২০১৩-২০১৪ কর বছরের জন্য প্রযোজ্য আয়কর হারঃ

(ক) ব্যক্তি শ্রেণীর কর হারঃ

(১) অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে ব্যক্তি করদাতা, হিন্দু অবিভক্ত পরিবার, অংশিদারী ফার্ম, ব্যক্তি সংঘ এবং আইনের দ্বারা সৃষ্ট কৃত্রিম ব্যক্তির করমুক্ত আয়ের সীমা ২,০০,০০০/- টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২,২০,০০০/- টাকা করা হয়েছে। ২০১৩-২০১৪ কর বছরের জন্য এরূপ করদাতাদের আয়ের উপর প্রযোজ্য কর হার নিম্নরূপঃ


মোট আয়

হার       

প্রথম ২,২০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর .........

শূন্য

পরবর্তী ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ......

১০%     

পরবর্তী ৪,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ......

১৫%     

পরবর্তী ৩,০০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর ....

২০%

অবশিষ্ট মোট আয়ের উপর ...................................... 

২৫%

(২) মহিলা করদাতা এবং ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের পুরম্নষ করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ২,২৫,০০০/- টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ২,৫০,০০০/- টাকা করা হয়েছে।

(৩) প্রতিবন্ধী করদাতার করমুক্ত আয়ের সীমা ২,৭৫,০০০/- টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ৩,০০,০০০/- টাকা করা হয়েছে।

(৪) করমুক্ত সীমার উর্ধ্বের আয়ের ক্ষেত্রে প্রদেয় ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ এলাকাভেদে নিম্নরূপভাবে বিন্যস্ত করা হয়েছেঃ


এলাকার বিবরণ

ন্যূনতম করের হার

সিটি কর্পোরেশন এলাকায় অবস্থিত করদাতা

৩,০০০/-টাকা      

জেলা সদরের পৌরসভায় অবস্থিত করদাতা

২,০০০/-টাকা      

অন্যান্য এলাকায় অবস্থিত করদাতা

১,০০০/-টাকা       

  • ন্যূনতম আয়করের এ বিধানের ফলে একজন করদাতার আয় যে কোন স্থানেই অর্জিত হউক না কেন তিনি যেখানে অবস্থান করবেন তাঁর সে অবস্থানের ভিত্তিতেই ন্যূনতম করের হার নির্ধারণ হবে। তবে কোন করদাতা যদি একই আয় বছরে একাধিক স্থানে অবস্থান করে থাকেন তাহলে যে স্থানে তিনি সর্বাধিককাল অবস্থান করেছেন সে অবস্থানস'লের জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম কর হার তাঁর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
  • ব্যবসা আয়ের ক্ষেত্রে ব্যবসা পরিচালনার মূখ্য স্থানই ন্যূনতম করের জন্য একজন করদাতার অবস্থানস'ল হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • একজন চাকুরীজীবি করদাতা আয়বছরে একাধিক স্থানে কর্মরত থাকলে যে স্থানে তিনি অধিক কাল কর্মরত ছিলেন ন্যূনতম করের জন্য সে স্থানই তাঁর অবস্থানস'ল বলে বিবেচিত হবে।
  • করদাতা অনিবাসী হলে বাংলাদেশে তিনি যে ঠিকানা ব্যবহার করেন সে ঠিকানাই তাঁর অবস্থানস'ল হিসেবে বিবেচিত হবে।
  • করমুক্ত সীমার উর্ধ্বে আয় আছে এমন করদাতার প্রদেয় আয়করের পরিমাণ হিসাব অনুযায়ী তাঁর জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়করের পরিমাণ অপেক্ষা কম হলে বা বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত বিবেচনার পর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়করের কম বা ঋণাত্মক হলেও তাঁকে তাঁর জন্য প্রযোজ্য ন্যূনতম আয়কর পরিশোধ করতে হবে।

(খ) ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তি করদাতাদের উপর সারচার্জ আরোপঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে ব্যক্তি করদাতাদের প্রদেয় আয়করের সারচার্জ আরোপের বিধানে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পূর্বের ন্যায় আয়কর রিটার্নের সাথে দাখিলকৃত পরিসম্পদ ও দায় বিবরণীতে প্রদর্শিত নীট সম্পদের পরিমাণ ২ (দুই) কোটি টাকার উর্ধ্বে হলে সারচার্জ আরোপিত হবে। তবে প্রদর্শিত নীট সম্পদের পরিমাণ ২ (দুই) কোটি টাকার অধিক কিন্তু ১০ (দশ) কোটি টাকার মধ্যে হলে ১০% এবং নীট সম্পদের পরিমাণ ১০ (দশ) কোটি টাকার উর্ধ্বে হলে প্রদেয় আয়করের ১৫% সারচার্জ আরোপিত হবে। সারচার্জ কিভাবে আরোপিত হবে তা নিচের উদাহরণগুলোর সাহায্যে স্পষ্ট করা হলোঃ-

(1)        একজন করদাতার নীট সম্পদ                         টাঃ ১,৯০,০০,০০০/-
মোট আয়-                                               টাঃ ১০,০০,০০০/-
আয়ের উপর আরোপযোগ্য আয়করের পরিমাণ     টাঃ ১,০৬,০০০/-
          প্রদেয় সারচার্জের পরিমাণ                            শূন্য।

(2)        একজন করদাতার নীট সম্পদ                                     টাঃ ২,১০,০০,০০০/-
আয়ের উপর প্রদেয় আয়করের পরিমাণ                         টাঃ ১,০৬,০০০/-
          প্রদেয় সারচার্জের পরিমাণ (১০%)           টাঃ ১০,৬০০/-

(৩)        একজন করদাতার নীট সম্পদ                                     টাঃ ১১,০০,০০,০০০/-
মোট আয়-                                               টাঃ ১০,০০,০০০/-
আয়ের উপর আরোপযোগ্য আয়করের পরিমাণ     টাঃ ১,০৬,০০০/-
          প্রদেয় সারচার্জের পরিমাণ (১৫%)          টাঃ ১৫,৯০০/-

            (৪)        একজন করদাতার নীট সম্পদ                         টাঃ ১২,০০,০০,০০০/-
মোট আয়-                                               টাঃ ১০,০০,০০০/-
আয়ের উপর আরোপযোগ্য আয়করের পরিমাণ     টাঃ  ১,০৬,০০০/-
বিনিয়োগজনিত আয়কর রেয়াত                       টাঃ ২০,০০০/-
                    বিনেয়োগজনিত আয়কর রেয়াত বাদে প্রদেয় আয়কর টাঃ ৮৬,০০০/-
অগ্রিম আয়কর পরিশোধ                              টাঃ ৭৫,০০০/-
অবশিষ্ট প্রদেয় আয়কর                                টাঃ ১১,০০০/-
                    প্রদেয় সারচার্জের পরিমান ৮৬,০০০/- টাকার ১৫% টাঃ  ১২,৯০০/-

ব্যক্তি (individual) শ্রেণীর করদাতা ভিন্ন অন্য কারো উপর এ সারচার্জ আরোপিত হবে না।

(গ) অনিবাসী ব্যক্তির করহার: বাংলাদেশী নয় এমন অনিবাসী ব্যক্তিদের কর হার ২৫%। তবে বাংলাদেশী অনিবাসী হলে তাদের আয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশী নিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য হারে (০%, ১০%, ১৫%, ২০%, ২৫%) কর প্রদেয় হবে।

 (ঘ) ক্ষেত্রবিশেষে ক্ষুদ্র বা কুটির শিল্প থেকে উদ্ভূত আয়ের উপর আয়কর রেয়াতঃ
কোন ব্যক্তি শ্রেনীর করদাতা যদি স্বল্প উন্নত এলাকা (less developed area) বা সবচেয়ে কম উন্নত এলাকায় (least developed area) অবস্থিত কোন ক্ষুদ্র বা কুটির শিল্পের মালিক হন এবং উক্ত কুটির শিল্পের দ্রব্যাদি উৎপাদনে নিয়োজিত থাকেন,তাহলে তিনি উক্ত ক্ষুদ্র বা কুটির শিল্প থেকে উদ্ভূত আয়ের উপর নিম্নবর্ণিত হারে আয়কর রেয়াত লাভ করবেন, যথা :-


বিবরণ

রেয়াতের হার

যেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বৎসরের উৎপাদনের পরিমাণ পূর্ববর্তী বৎসরের উৎপাদনের পরিমাণের তুলনায় ১৫% এর অধিক, কিন্তু ২৫% এর অধিক নয়;

প্রদেয় আয়করের ৫%;        

যেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট বৎসরের উৎপাদনের পরিমাণ পূর্ববর্তী বৎসরের উৎপাদনের পরিমাণের তুলনায় ২৫% এর অধিক হয়।

প্রদেয় আয়করের ১০%

(ঙ) কোম্পানীর করহারঃ

কোম্পানীর আয়করের হার (প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয় ব্যতীত) নিম্নরূপঃ


কোম্পানীর ধরণ

কর হার

মন্তব্য

নন-পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানী

৩৭.৫%

ন্যূনতম ২০% শেয়ার ওচঙ এর মাধ্যমে পুঁজিবাজারে হস্তান্তর করা হলে হস্তান্তর সংশ্লিষ্ট কর বছরে প্রদেয় করের ১০% কর রেয়াত প্রাপ্য।    

পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানী (স্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভুক্ত কোম্পানী)

২৭.৫%

শর্তঃ
২০% এর বেশী লভ্যাংশ প্রদান করলে কর হার ২৪.৭৫%; ১০% এর কম লভ্যাংশ প্রদান করলে কর হার ৩৭.৫%;

  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে লভ্যাংশ প্রদান না করলে কর হার ৩৭.৫%।

ব্যাংক, বীমা, অর্থলগ্নীকারী প্রতিষ্ঠান

৪২.৫%  

 

মার্চেন্ট ব্যাংক       

৩৭.৫%  

 

সিগারেট প্রস্তুতকারক কোম্পানী

৪৫%

পাবলিকলি ট্রেডেড কোম্পানী হলে কর হার ৪০%।

মোবাইল ফোন অপারেটর কোম্পানী

৪৫%

ন্যূনতম ১০% শেয়ার পুঁজিবাজারে হস্তান্তর করা হলে কর হার ৪০%।

তাছাড়া কোন কোম্পানী কর্তৃক প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয়ের ক্ষেত্রে আয়করের হার ২০%।

  • অর্থ আইন, ২০১৩ অনুযায়ী ১ জুলাই, ২০১৩ তারিখে আরব্ধ কর বৎসরের জন্য আয়করের হার পরিশিষ্ট-১১ এ দেখানো হয়েছে।

২। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা 16CCC সংশোধন [ফার্মের ন্যূনতম কর সংক্রান্ত]:

আয়কর অধ্যাদেশের 16CCC ধারায় কোম্পানীর পাশাপাশি ফার্মের উপরও ন্যূনতম কর প্রদানের বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়েছে। ফলে ফার্মকেও মোট প্রাপ্তির উপর ০.৫০% ন্যূনতম কর প্রদান করতে হবে। তবে যে ফার্মের মোট প্রাপ্তি ৫০ লক্ষ টাকার অধিক হবে শুধুমাত্র সে ফার্মের ক্ষেত্রেই এই ন্যূনতম কর প্রদানের বিধান প্রযোজ্য হবে।
মোট প্রাপ্তি বলতে উক্ত ধারার ব্যাখ্যায় বর্ণিত গ্রস প্রাপ্তিকেই বুঝাবে।

২০১৩-২০১৪ কর বছর থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

৩। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ তে ধারা 19BBBBB এর সন্নিবেশ [আবাসিক বাড়ী/এ্যাপার্টমেন্ট নির্মাণ/ক্রয়ে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা প্রদান]ঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এ নতুন ধারা 19BBBBB সন্নিবেশ করা হয়েছে। এ ধারার বিধান অনুযায়ী একজন করদাতা যদি আবাসিক প্রয়োজনে বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে/নির্মাণে বিনিয়োগ করেন এবং সংশ্লিষ্ট বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্টের পরিমাপের উপর নির্দিষ্ট হারে কর প্রদান করেন তাহলে কর বিভাগ কর্তৃক বিনিয়োগের উৎস সম্পর্কে কোন প্রশ্ন উত্থাপন করা হবে না। নিম্নের সারণীতে বাড়ী/এ্যাপার্টমেন্টের অবস্থানভেদে করের হার দেখানো হলোঃ

বাড়ী/ এ্যাপার্টমেন্ট এর অবস্থান

কর হার

১। গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল বাণিজ্যিক এলাকা, দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকায়               
(ক) ২০০ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে হলে
(খ) ২০০ বর্গমিটার এর অধিক আয়তনের ক্ষেত্রে        

প্রতি বর্গমিটারে ৫ হাজার টাকা           
প্রতি বর্গমিটারে ৭ হাজার টাকা

২। ঢাকার ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি, উত্তরা মডেল টাউন, বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কারওয়ান বাজার, বিজয়নগর, সেগুনবাগিচা এবং নিকুঞ্জ; চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ, খুলশি, আগ্রাবাদ এবং নাসিরাবাদ এলাকায়                    
(ক) ২০০ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে হলে  
(খ) ২০০ বর্গমিটার এর অধিক আয়তনের ক্ষেত্রে       

প্রতি বর্গমিটারে ৪ হাজার টাকা           
প্রতি বর্গমিটারে ৫ হাজার টাকা

৩। ক্রমিক নং ১ ও ২ এ বর্ণিত এলাকা ব্যতীত ঢাকা ও চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের অন্যান্য এলাকা এবং অপরাপর সিটি কর্পোরেশনভূক্ত এলাকায়                 
(ক) ২০০ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে হলে              
(খ) ২০০ বর্গমিটার এর অধিক আয়তনের ক্ষেত্রে      

প্রতি বর্গমিটারে ২ হাজার টাকা
প্রতি বর্গমিটারে ৩ হাজার টাকা;

৪। জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভায়
(ক) ২০০ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে হলে    
(খ) ২০০ বর্গমিটার এর অধিক আয়তনের ক্ষেত্রে      

প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার টাকা           
প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার ৫’শ টাকা     

৫। অন্যান্য এলাকায়
(ক) ২০০ বর্গমিটার আয়তনের মধ্যে হলে    
(খ) ২০০ বর্গমিটার এর অধিক আয়তনের ক্ষেত্রে           

প্রতি বর্গমিটারে ৭’শ টাকা    
প্রতি বর্গমিটারে ১ হাজার টাকা

এ পদ্ধতিতে বিনিয়োগ প্রদর্শনের ক্ষেত্রে নিম্নবর্ণিত শর্ত পরিপালন করতে হবেঃ

  • যে বছর নির্মাণ সমাপ্ত হয়েছে অথবা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশন/পজেশন হস্তান্তর সমাপ্ত হয়েছে সে বছরের সাথে সংশ্লিষ্ট কর বছরে এরূপ বিনিয়োগ প্রদর্শন/ঘোষণা করতে হবে।
  • কোন করদাতা যদি ইতোপূর্বে দেশের যে কোন সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এক বা একাধিক এ্যাপার্টমেন্ট বা বাড়ির মালিক হন তাহলে এ পদ্ধতিতে নতুন কোন বিনিয়োগের ঘোষণা প্রদান করলে ঐ করদাতাকে বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে/ নির্মাণে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উপরোক্ত সারণী অনুযায়ী প্রদেয় করের অতিরিক্ত ২০% কর প্রদান করতে হবে। একইভাবে কোন করদাতা যদি একই সাথে একাধিক বাড়ী অথবা এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে/ নির্মাণে বিনিয়োগ এ পদ্ধতিতে ঘোষণা প্রদান করতে চান তাহলে ঐ করদাতাকেও এরূপ একাধিক বাড়ী অথবা এ্যাপার্টমেন্ট প্রত্যেকটির জন্য প্রযোজ্য হারের অতিরিক্ত ২০% কর প্রদান করতে হবে।

উদাহরণঃ জনাব বি আলম ঢাকা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় একটি এ্যাপার্টমেন্ট এর মালিক। তিনি ২০১২-২০১৩ আয় বছরে ঢাকার বারিধারা এলাকায় ১৯০ বর্গমিটার আয়তন বিশিষ্ট আরো একটি এপার্টমেন্ট ক্রয় করেছেন। তিনি ২০১৩-১৪ কর বছরে এই বিনিয়োগ 19BBBBB  ধারায় ঘোষণা করতে চাইলে তাঁকে কর মামলা নিষ্পত্তির পূর্বেই নিম্নরূপ অংকের কর পরিশোধ করতে হবে ঃ

  1. ঢাকার বারিধারায় অবস্থিত ১৯০ বর্গ মিটার বিশিষ্ট এপার্টমেন্টের বিপরীতে প্রতি বর্গ মিটারে করের হার ৫০০০ টাকা
  2. ১৯০ বর্গ মিটার আয়তনের এপার্টমেন্ট ক্রয়ে বিনিয়োগ বাবদ করের পরিমাণ দাড়ায়- ১৯০ বর্গমিটার ঢ ৫০০০ টাকা = ৯,৫০,০০০ টাকা
  3. তিনি ইতোপূর্বে একটি এ্যাপার্টমেন্টের মালিক বিধায় তাঁকে আরো ২০% অতিরিক্ত কর প্রদান করতে হবে। ফলে 19BBBBB ধারায় এ্যাপার্টমেন্টের বিনিয়োগ প্রদর্শন করতে চাইলে তাঁকে অতিরিক্ত ১,৯০,০০০ টাকা ( ৯,৫০,০০০ X ২০%) কর প্রদান করতে হবে। অর্থাৎ এ্যাপার্টমেন্ট ক্রয়ে তাঁকে মোট কর প্রদান করতে হবে ( ৯,৫০,০০০ টাকা + ১,৯০,০০০ টাকা ) = ১১,৪০,০০০ টাকা।
  • অবৈধ উপায়ে বা অপরাধ সংঘটনের মাধ্যমে অর্জিত অর্থ এক্ষেত্রে বিনিয়োগ করা যাবে না।
  • বিনিয়োগ সংক্রান্ত কর প্রদানের এ বিধানটি ঐচ্ছিক। অর্থাৎ যে কোন করদাতা ইচ্ছা করলেই 19BBBBB ধারায় এরূপ কর প্রদান ছাড়াই প্রচলিত নিয়মে বিনিয়োগের ব্যাখ্যা প্রদান করতে পারবেন।
  • অনাবাসিক বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্ট অর্থাৎ বাণিজ্যিক বাড়ী বা এ্যাপার্টমেন্টের ক্ষেত্রে এ পদ্ধতিতে বিনিয়োগ প্রদর্শন করা যাবে না।
  • কর মামলা অনিষ্পন্ন থাকলে পূর্ববর্তী বিনিয়োগ সংশ্লিষ্ট যে কোন কর বছরের কর নির্ধারণের পূর্বে কর পরিশোধের মাধ্যমে এ পদ্ধতিতে বিনিয়োগ প্রদর্শনের সুযোগ গ্রহণ করা যাবে।
  • কোন কর মামলা যদি একবার নিষ্পত্তি হয়ে যায় তাহলে পরবর্তীতে কোন কার্যক্রমের (যেমন ৯৩ ধারা, ১২০ধারা, ১৫৬ ধারা, ১৫৯ ধারা বা অন্য কোন ধারার অধীন চালু কার্যক্রম) মাধ্যমে কর মামলা পুনঃনিষ্পত্তির পূর্বে 19BBBBB ধারায় বিনিয়োগ প্রদর্শনের সুযোগ থাকবে না।

৪। ব্যবসা বা পেশার আয় হতে লাইসেন্স ফি বাবদ প্রদত্ত অর্থ অনুমোদনযোগ্য খরচ হিসেবে বিয়োজনের লক্ষে Amortization  এর বিধান সংযোজন [Section 29 (1) (viiia)/Third Schedule Para 10A]ঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা ২৯ এর উপ-ধারা (1) এ একটি নতুন ক্লজ (viiia) এবং Third Schedule এ একটি নতুন Para 10A সংযোজন করা হয়েছে। নতুন সংযোজিত এই ধারা ও ক্লজ অনুযায়ী কোন আবাসিক করদাতা কোম্পানী যদি লাইসেন্স ফি বাবদ কোন অর্থ প্রদান করে তাহলে উক্ত ফি বাবদ প্রদত্ত অর্থ ব্যবসা বা পেশার আয় হতে বিয়োজন করতে পারবে।

            নব প্রবর্তিত এ বিধানের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

  • দুই বা ততোধিক বছরের জন্য ব্যবসা পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রদত্ত লাইসেন্স ফি এর জন্য এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
  • যত বছরের জন্য লাইসেন্স প্রদান করা হবে তত বৎসরের অনুপাতে মেয়াদকাল পর্যন্ত প্রত্যেক বৎসর সমান হারে খরচ অনুমোদন যোগ্য হবে।
  • Third Schedule এর Para 10A  এর ব্যাখ্যা অনুযায়ী কেবল মোবাইল ফোন অপারেটর কর্তৃক প্রদত্ত Spectrum Assignment Fee এর ক্ষেত্রেই এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
  • ১ জুলাই, ২০১২ বা তৎপরবর্তী সময়ে প্রদত্ত লাইসেন্স ফি এর ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

৫। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 44 [বিনিয়োগ রেয়াত সম্পর্কিত] এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৪৪ ধারার উপধারা (2) এর ক্লজ (b) এবং উপধারা (3) এর ক্লজ (a) এ সংশোধনী আনা হয়েছে। কয়েকটি নির্ধারিত খাতে বিনিয়োগের প্রেক্ষিতে একজন বাংলাদেশী নিবাসী/অনিবাসী ব্যক্তি করদাতা বিনিয়োগ জনিত যে আয়কর রেয়াত পেয়ে থাকেন তার হার ও সর্বোচ্চ অনুমোদনযোগ্য সীমা নিম্নরূপ সংশোধন করা হয়েছেঃ

  • কররেয়াতযোগ্য বিনিয়োগ সীমা সর্বোচ্চ ১ কোটি টাকা থেকে বর্ধিত করে ১ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
  • কররেয়াতযোগ্য বিনিয়োগ সীমা মোট আয়ের ২০% এর স'লে ৩০% বিনিয়োগ সীমা পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।
  • অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের উপর ১০% এর স'লে ১৫% হারে বিনিয়োগ জনিত কর রেয়াত সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

উদাহরণ-০১ ঃ

জনাব আর আমিন একজন বেতনভোগী করদাতা। ২০১৩-২০১৪ কর বছরে তাঁর মোট আয় ৫,৫০,০০০/-টাকা। অনুমোদিত ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা ৩৬,০০০/-টাকা এবং তিনি নিজে ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা প্রদান করেছেন ৩৬,০০০/-টাকা। এছাড়া বিবেচ্য ২০১৩-২০১৪ কর বছরের জন্য তিনি ১,০০,০০০/- টাকা সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ করেছেন। তিনি বেতন খাতের আয়ের বিপরীতে উৎসে আয়কর পরিশোধ করেছেন ১১,০০০/- টাকা। তাঁর বিনিয়োগ রেয়াত এবং প্রদেয় আয়করের পরিমাণ নিম্নরূপঃ
মোট আয়                         ৫,৫০,০০০/-টাকা
মোট আয়ের উপর আরোপযোগ্য কর                 ৩৪,৫০০/- টাকা
বাদঃ বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত
মোট আয়                                     ৫,৫০,০০০/-টাকা
(-) ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তার চাঁদা  ৩৬,০০০/- টাকা
নিয়োগকর্তার চাঁদা ব্যতীত আয়           ৫,১৪,০০০/-টাকা
৫,১৪,০০০/- টাকার ৩০% = ১,৫৪,২০০/-টাকা
প্রকৃত বিনিয়োগ
ভবিষ্য তহবিলে চাঁদা ৩৬,০০০/-X ২ = ৭২,০০০/-টাকা
সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ               = ১,০০,০০০/-টাকা
প্রকৃত বিনিয়োগ = ১,৭২,০০০/-টাকা
সুতরাং কর রেয়াতের জন্য অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের
পরিমান দাঁড়ায়-
মোট আয়ের ৩০% হিসেবে ১,৫৪,২০০/-টাকা, প্রকৃত বিনিয়োগ ১,৭২,০০০/-টাকা এবং সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা ১,৫০,০০,০০০/-টাকা, এর মধ্যে যেটি কম অর্থাৎ এক্ষেত্রে
১,৫৪,২০০/-টাকা। ফলে আয়কর রেয়াতের পরিমাণ দাঁড়ায়
১,৫৪,২০০/-টাকার ১৫%                                           ২৩,১৩০/-টাকা
প্রদেয় কর ১১,৩৭০/-টাকা
                        বেতন থেকে উৎসে কর্তিত কর                        ১১,০০০/-টাকা
                                                অবশিষ্ট প্রদেয় কর    ৩৭০/-টাকা

উদাহরণ-০২ ঃ

জনাব প্রামাণিক এর ২০১২-১৩ আয় বছরে গৃহ সম্পত্তি খাতে আয়ের পরিমাণ ৫,০০,০০০/- টাকা। তাঁর অন্য কোন আয়ের উৎস নেই। বিবেচ্য বছরে তিনি ৮,০০০/-টাকা অগ্রিম কর পরিশোধ করেছেন। এছাড়াও তিনি জীবন বীমার কিসিত্ম পরিশোধ করেছেন ২৫,০০০/-টাকা এবং সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ করেছেন ১,০০,০০০/- টাকা। তাঁর বিনিয়োগ রেয়াত ও প্রদেয় আয়করের পরিমাণ নিম্নরূপঃ

                        মোট আয়                           ৫,০০,০০০/-টাকা
মোট আয়ের উপর আরোপযোগ্য কর                    ২৮,০০০/- টাকা
বাদঃ বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত
জীবন বীমার কিসিত্ম প্রদান                               ২৫,০০০/-টাকা
সঞ্চয়পত্র বিনিয়োগ                                         ১,০০,০০০/-টাকা
প্রকৃত বিনিয়োগ = ১,২৫,০০০/-টাকা

সুতরাং কর রেয়াতের জন্য অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগের
পরিমান দাঁড়ায়-
মোট আয়ের ৩০% হিসেবে ১,৫০,০০০/-টাকা, প্রকৃত বিনিয়োগ ১,২৫,০০০/-টাকা এবং সর্বোচ্চ বিনিয়োগ সীমা ১,৫০,০০,০০০/-টাকা, এর মধ্যে যেটি কম অর্থাৎ এক্ষেত্রে
১,২৫,০০০/-টাকা । ফলে আয়কর রেয়াতের পরিমাণ দাঁড়ায়
১,২৫,০০০/-টাকার ১৫%                                          ১৮,৭৫০/-টাকা
প্রদেয় কর             ৯,২৫০/-টাকা
৬৪ ধারায় অগ্রিম কর প্রদান  ৮,০০০/-টাকা
                                                অবশিষ্ট প্রদেয় কর    ১,২৫০/-টাকা

  • বিনিয়োগ রেয়াত সংক্রান্ত এ বিধান ২০১৩-১৪ কর বছর থেকে প্রযোজ্য হবে।

৬। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 46B [শিল্প প্রতিষ্ঠানের কর অবকাশ সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

  
আয়কর অধ্যাদেশের 46B ধারায় কর অবকাশের মেয়াদ জুন, ২০১৩ এ উত্তীর্ণ হওয়ায় বিদ্যমান 46B ধারায় নিম্নরূপ সংশোধন করা হয়েছেঃ

  • ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কর অবকাশের সুবিধা অব্যাহত থাকবে।
  • পূর্বের মত ঢাকা, গাজীপুর, নারায়নগঞ্জ ও চট্টগ্রাম জেলায় প্রতিষ্ঠিত কোন শিল্প প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এ কর অবকাশ সুবিধা প্রযোজ্য হবে না। তবে ঢাকা, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ বা চট্টগ্রাম জেলায় অবস্থিত জৈব সার বা পেট্রো কেমিক্যাল শিল্প কর অবকাশ সুবিধা প্রাপ্তির যোগ্য বলে গণ্য হবে।
  • ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগে (উপরোক্ত জেলাসহ তিন পার্বত্য জেলা বাদে) প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৫ বছরের জন্য এ ধারার আওতায় প্রাপ্য বছরওয়ারী কর অব্যাহতির হার নিম্নরূপ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছেঃ

কর অব্যাহতির সময়কাল

অব্যাহতির হার

প্রথম ও দ্বিতীয় বছর

আয়ের ১০০%

তৃতীয় বছর

আয়ের ৬০%

চতুর্থ বছর

আয়ের ৪০%

পঞ্চম বছর

আয়ের ২০%

  • রাজশাহী, খুলনা, সিলেট ও বরিশাল বিভাগ এবং তিন পার্বত্য জেলায় প্রতিষ্ঠিত শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৭ বছরের জন্য এ ধারার আওতায় প্রাপ্য বছরওয়ারী কর অব্যাহতির হার নিম্নরূপ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছেঃ

কর অব্যাহতির সময়কাল

অব্যাহতির হার

প্রথম ও দ্বিতীয় বছর            আয়ের

আয়ের ১০০%

তৃতীয় বছর

আয়ের ৭০%

চতুর্থ বছর

আয়ের ৫৫%

পঞ্চম বছর

আয়ের ৪০%

ষষ্ঠ বছর

আয়ের ২৫%

সপ্তম বছর

আয়ের ১০%

  • পরিবর্তিত বিধানাবলী ১ জুলাই, ২০১৩ বা তৎপরবর্তীতে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্ন করলে এবং শিল্প প্রতিষ্ঠায় প্রযোজ্য হবে।
  • 46B ধারার অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত থাকবে।

৭। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 46C [ভৌত অবকাঠামোর কর অবকাশ সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

আয়কর অধ্যাদেশের 46C ধারায় কর অবকাশের মেয়াদ মেয়াদ জুন, ২০১৩ এ উত্তীর্ণ হওয়ায় পূর্ববর্তী 46C ধারায় নিম্নরূপ সংশোধন করা হয়েছেঃ

  • এই খাতে কর অবকাশের মেয়াদ ৩০ জুন ২০১৫ পর্যন্ত স্থাপিত ও চালু ভৌত অবকাঠামোর জন্য সমপ্রসারিত করা হয়েছে।
  • সারা দেশের জন্য এ কর অবকাশ সুবিধা প্রযোজ্য হবে।
  • কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ ভৌত-অবকাঠামো চালুর ( ঈড়সসবৎপরধষ ঙঢ়বৎধঃরড়হ ) মাস হতে পরবর্তী ১০ বছর পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।
  • ভৌত অবকাঠামোর বছরওয়ারী কর অব্যাহতির হার নিম্নরূপ পুনর্বিন্যাস করা হয়েছেঃ

কর অব্যাহতির সময়কাল

অব্যাহতির হার

প্রথম ও দ্বিতীয় বছর

আয়ের ১০০%

তৃতীয় বছর

আয়ের ৮০%

চতুর্থ বছর

আয়ের ৭০%

পঞ্চম বছর

আয়ের ৬০%

ষষ্ঠ বছর

আয়ের ৫০%

সপ্তম বছর

আয়ের ৪০%

অষ্টম বছর

আয়ের ৩০%

নবম বছর

আয়ের ২০%

দশম বছর

আয়ের ১০%

  • পরিবর্তিত বিধানাবলী ১ জুলাই,২০১৩ থেকে ৩০ জুন, ২০১৫ সময়কালে চালু ( Commercial Operation) হবে এরূপ ভৌত অবকাঠামোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
  • 46C ধারার অন্যান্য শর্ত অপরিবর্তিত রয়েছে।

৮। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 50 এ উৎসে আয়কর কর্তন সংক্রান্ত নতুন উপধারা সংযোজনঃ

আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 50 অনুযায়ী করযোগ্য সীমার বেশী বেতন-ভাতা পরিশোধকালে বেতন-ভাতা পরিশোধকারী কর্তৃপক্ষ বেতন আয়ের উপর গড় হারে উৎসে কর কর্তন করে থাকে। অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে বেতনভোগী কর্মকর্তা/কর্মচারীগণকে উৎস পর্যায়ে অতিরিক্ত কর প্রদান থেকে অব্যাহতি প্রদানের লক্ষ্যে নতুন উপধারা (2A)  সন্নিবেশ করা হয়েছে।

নতুন সংযোজিত এ বিধানের বৈশিষ্ট্য নিম্নরূপঃ

  • নতুন সন্নিবেশিত উপ-ধারার বিধান অনুযায়ী একই বছরে কোন বেতনভোগী করদাতা থেকে যদি আয়কর অধ্যাদেশের অধীন উৎস পর্যায়ে কোন কর কর্তন বা সংগ্রহ করা হয়ে থাকে এবং এ কারণে রিফান্ড সৃষ্টি পরিহারের জন্য যদি উক্ত বেতনভোগী করদাতার বেতন হতে উৎসে কর কর্তন না করার অথবা কম হারে কর কর্তনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয় তাহলে বেতন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ কোন কর কর্তন না করে অথবা কম হারে কর কর্তনপূর্বক বেতন প্রদান করতে পারবেন।
  • তবে এ ক্ষেত্রে বেতন হতে উৎসে কর কর্তন না করা অথবা কম হারে উৎসে কর কর্তনের প্রত্যয়নপত্রের জন্য একজন বেতনভোগী করদাতাকে প্রথমে সংশ্লিষ্ট সার্কেলের উপ কর কমিশনারের নিকট আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর উপ কর কমিশনার করদাতা কর্তৃক উৎসে প্রদত্ত করের পরিমান, করদাতার আয়কর রেকর্ড অনুযায়ী অপরাপর উৎস থেকে সম্ভাব্য আয়ের পরিমান এবং বৎসরের অবশিষ্ট সময়ের জন্য করদাতার সম্ভাব্য আয়ের পরিমান ইত্যাদি বিষয় পর্যালোচনা করে বৎসরের অবশিষ্ট সময়ের জন্য বেতনের উপর প্রযোজ্য কর হার সম্পর্কে প্রত্যয়নপত্র প্রদান করবেন।
  • উপ কর কমিশনারের নিকট হতে এ সংক্রান্ত প্রত্যয়নপত্র পাওয়ার পর তা বেতন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট দাখিল করলে বেতন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ প্রত্যয়নপত্রে বর্ণিত হারে বেতন হতে উৎসে আয়কর কর্তন করবেন।
  • এ বিধান নিয়োগকর্তা নির্বিশেষে সকল বেতনভোগী করদাতার জন্য প্রযোজ্য হবে।
  • বেতন খাতে উৎসে কর্তিত কর সমন্বয়ের পরও যদি কোন করদাতা কর্তৃক আয়কর অধ্যাদেশের বিধানমতে প্রদত্ত কর সম্পূর্ণ সমন্বয়যোগ্য না হয় তাহলে করদাতা যথানিয়মে আয়কর রিটার্নে ফেরতযোগ্য কর প্রদর্শন করে আইনানুগভাবে তা দাবী করতে পারবেন।
  • ১ জুলাই, ২০১৩ এবং তৎপরবর্তীতে প্রদত্ত বেতনের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

উদাহরণঃ জনাব ইসলাম সামরিক বাহিনীতে কর্মরত একজন কর্মকর্তা। তাঁর বেতন আয় থেকে গড় হারে উৎসে আয়কর কর্তন করা হয়ে থাকে। তাঁর অন্য কোন আয়ের উৎস নেই । তিনি একটি ১৩০০ সিসি মোটর গাড়ীর মালিক, যা তিনি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। জানুয়ারী মাসে উক্ত মোটর গাড়ীর ফিটনেস নবায়ন কালে তিনি ১৫,০০০ টাকা আয়কর প্রদান করেছেন। ফলে মোটর গাড়ীর ফিটনেস নবায়নকালে প্রদত্ত আয়কর অন্য কোন উৎসের আয় না থাকায় বিবেচ্য কর বছরের মোট প্রদেয় করের সাথে সম্পূর্ন সমন্বয়যোগ্য হবে না বলে ধরা যায়।
এরূপ ক্ষেত্রে তিনি যে সার্কেলের করদাতা সে সার্কেলের উপ কর কমিশনারের নিকট উৎসে কর্তিত করের তথ্য-প্রমানসহ আবেদন করলে উপ কর কমিশনার উক্ত আয় বছরের অবশিষ্ট ৫ মাসের (ধরা যাক, আবেদনপত্র দাখিল ও প্রত্যয়নপত্র প্রাপ্তির মাস ফেব্রম্নয়ারী) সর্বোচ্চ ১৫,০০০ টাকা কম কর কর্তনের প্রত্যয়নপত্র প্রদান করতে পারেন। জনাব ইসলাম এই প্রত্যয়নপত্র তাঁর বেতন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করলে বেতন প্রদানকারী কর্তৃপক্ষ বেতন আয় হতে উৎসে কর কর্তনের ক্ষেত্রে প্রত্যয়নপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

৯। জ্বালানী তেল বিপণন কোম্পানী কর্তৃক জ্বালানী তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের হার [বিধি16 সংশ্লিষ্ট] হ্রাসকরণঃ

এস আর ও নং ২৬৮-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ৩০ জুলাই, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 52 ধারামতে প্রণীত আয়কর বিধি 16 এ পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত বিধান অনুযায়ী জ্বালানী তেল বিপণন কোম্পানী কর্তৃক জ্বালানী তেল সরবরাহের বিপরীতে ২ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে প্রদত্ত বিলের ক্ষেত্রে উৎসে কর কর্তনের হার ০.৭৫% থেকে হ্রাস করে ০.৬০% করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-১)।

১ জুলাই, ২০১৩ বা তৎপরবর্তীতে পরিশোধযোগ্য বিলের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১০। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর 52A ধারার (3) উপ-ধারা [Professional and Technical ফি সংক্রান্ত]এর সংশোধনঃ

আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর 52A ধারার (3) উপধারা সংশোধন করে টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ফি প্রদানের ক্ষেত্রে যে সকল ফি গ্রহণকারীর টিআইএন আছে তাদের ক্ষেত্রে ১০% উৎসে কর কর্তন বহাল রেখে যে সকল ফি গ্রহণকারীর টিআইএন নেই সে সকল ফি গ্রহণকারীর ক্ষেত্রে ১৫% উৎসে কর কর্তনের বিধান আরোপ করা হয়েছে।

১ জুলাই, ২০১৩ হতে টেকনিক্যাল বা প্রফেশনাল ফি প্রদানের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১১। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর 52AA ধারায় [নির্দিষ্ট সার্ভিস থেকে উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত] Proviso এর সংযোজনঃ

বিদ্যমান আইনে স্টিভেডরিং এজেন্সিকে কমিশন বাবদ এবং প্রাইভেট সিকিউরিটি সার্ভিস অথবা অন্য কোন সার্ভিস প্রদানের জন্য কোন ব্যক্তিকে কোন অর্থ প্রদান করলে প্রদত্ত অর্থ হতে ১০% উৎসে কর কর্তনের বিধান রয়েছে। অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে একটি নতুন Proviso সংযোজন করে উৎস পর্যায়ে কর প্রদানকারী করদাতার আবেদনের ভিত্তিতে কম হারে কর কর্তন করা অথবা কর কর্তন না করা বিষয়ে প্রত্যায়নপত্র প্রদানের ক্ষমতা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে প্রদান করা হয়েছে। উৎসে কর প্রদানকারী ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান এই প্রত্যায়নপত্র সংগ্রহ করে উৎসে কর কর্তনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট উপস্থাপন করলে সংশ্লিষ্ট উৎসে কর কর্তনকারী কর্তৃপক্ষ প্রত্যায়নপত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।
১ জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১২। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 52B [সিগারেটের ব্যান্ড রোলের উপর উৎসে কর সংগ্রহ সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে হাতে তৈরী সিগারেট বা বিড়ির ব্যান্ডরোল বিক্রীর সময় ব্যান্ডরোল মূল্যের উপর উৎসে কর কর্তনের হার ৬% থেকে ১০% এ বৃদ্ধি করা হয়েছে।
১লা জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৩। নতুন ধারা 52S [কোমল পানীয় প্রস্তুতকারক কোম্পানীর কাছ হতে উৎসে আয়কর সংগ্রহ সংক্রান্ত] এর সন্নিবেশঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে প্রবর্তিত এ নতুন ধারার বিধান অনুযায়ী ষ্ট্যাম্প/ব্যান্ডরোল সরবরাহকালে দি সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন (বাংলাদেশ) লিঃ উৎসে আয়কর সংগ্রহ করবে। কোমল পানীয় এর ষ্ট্যাম্প/ব্যান্ডরোলের ক্রেতার নিকট হতে সংশ্লিষ্ট পণ্যের মূল্যের উপর ৩%অগ্রীম আয়কর সংগ্রহ করবে। এক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বলতে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) নির্ধারণের উদ্দেশ্যে নির্ধারিত মূল্যকে বুঝাবে।

১ জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৪। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 53BBB [Stock Exchange এর সদস্যের কাছ থেকে উৎসে কর আদায় সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে ধারা 53BBB এর সংশোধন করে বন্ড হস্তান্তরকালে উৎসে কর কর্তনের বিধান রহিত করা হয়েছে। এ বিধানের ফলে ষ্টক এক্সচেঞ্জ এর একজন সদস্য কর্তৃক বন্ড বাবদ লেনদেনের সময় উৎসে কর কর্তনযোগ্য হবে না। উল্লেখ্য, বন্ড লেনদেনের বিপরীতে উক্ত সদস্যের আয় 82C ধারায় নিরূপনের কোন সুযোগ নেই বিধায় এ খাতের আয় সাধারণ নিয়মেই নিরূপিত হবে। তবে শেয়ার, ডিবেঞ্চার, মিউচুয়াল ফান্ড অথবা সিকিউরিটিজ হস্তান্তরকালে বিদ্যমান উৎসে কর কর্তনের হার ০.০৫% এবং এক্ষেত্রে 82C ধারায় আয় নিরূপনের বিধান অপরিবর্তিত রয়েছে।
১ জুলাই, ২০১৩ হতে লেনদেনকৃত বন্ডের বেলায় এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৫। চা এর নিলাম ক্রয়কারীর নিকট হতে উৎসে কর কর্তনের হার বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিধি 17D সংশোধনঃ

এস আর ও নং ২৬৮-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ৩০ জুলাই ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর 53C ধারামতে প্রণীত আয়কর বিধি 17D এর Proviso তে পরিবর্তন আনা হয়েছে। পরিবর্তিত বিধান অনুযায়ী চা এর নিলাম ক্রয়কারীর নিকট হতে উৎসে কর কর্তনের হার নিলাম মূল্যের ০.৫% হতে বৃদ্ধি করে ১% করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-১০ )।
১ জুলাই, ২০১৩ হতে চা নিলামের ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৬। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 53E এর নতুন উপ-ধারা (2) [পণ্যের পরিবেশকগণের কাছ থেকে উৎসে কর সংগ্রহ সংক্রান্ত] এর সংযোজনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর 53E ধারার বিদ্যমান বিধানকে উপ-ধারা (1)  হিসেবে সংখ্যায়িত করা হয়েছে এবং একই সাথে একটি নতুন উপ-ধারা (2)সংযোজন করা হয়েছে। নতুন সংখ্যায়িত (1)উপধারার বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী কোম্পানী/কর্পোরেশন/সংস্থা তাদের প্রসতুতকৃত পণ্য বিতরণ বা বাজারজাতকরণের জন্য বিতরণকারী ব্যক্তিকে প্রদেয় কমিশন/ফিস অথবা অনুমোদনযোগ্য “discount” এর উপর ১০% উৎসে আয়কর সংগ্রহ করে থাকে। কিন্তু কোন কোন কোম্পানী/কর্পোরেশন/সংস্থা তাদের প্রসতুতকৃত বা বিতরণকৃত পণ্য বাজারজাতকরণ বা বিতরণের জন্য পণ্য বিতরণকারী ব্যক্তিকে কমিশন/ফিস প্রদান অথবা কোন “discount” অনুমোদন না করে বিতরনকারীর নিকট সরাসরি পণ্য বিক্রয় প্রদর্শন করে থাকে। এ ক্ষেত্রে নতুন প্রবর্তিত উপ-ধারা (2) এর বিধান প্রযোজ্য হবে। নতুন প্রবর্তিত এ উপধারার বৈশিষ্ট্যসমূহ নিম্নরূপঃ

  • যে ক্ষেত্রে কোম্পানী নিজে পণ্যের খুচরা মূল্য নির্ধারণ করে কোন পরিবেশক বা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট লিখিত চুক্তির অধীনে বিক্রয় করে সে ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
  • পণ্যের খুচরা মূল্য (গজচ) এবং কোম্পানী কর্তৃক পরিবেশক বা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট বিক্রয় মূল্যের পার্থক্যের উপর ৫% হারে উৎসে আয়কর সংগ্রহ করতে হবে।
  • পরিবেশক বা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট পণ্য বিক্রয়কালে কোম্পানী ঐ পরিবেশক বা ব্যক্তির নিকট হতে এ বাবদ উৎসে আয়কর সংগ্রহ করবেন।
  • এ ধারার অধীন সংগৃহীত কর সংশ্লিষ্ট পরিবেশকের হাতে অগ্রিম আয়কর হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তা ৮২ঈ ধারায় চুড়ান্ত কর দায় পরিশোধিত বলে বিবেচিত হবে না।
  • জ্বালানী তেল বিপণন কোম্পানীর ক্ষেত্রে এ বিধান প্রযোজ্য হবে না।
  • ১ জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

উদাহরণ-১ঃ
ABC মোবাইল টেলিকম্যুনিকেশন কোম্পানী লিঃ ১০০ টাকা মূল্যমানের স্ক্র্যাচ কার্ডের বিক্রয়মূল্যের উপর ৮ টাকা কমিশন গ্রাহ্য (Allow ) করে থাকে । এ ক্ষেত্রে 53E ধারার (1) উপ-ধারার বিধান মতে উক্ত ৮ টাকা কমিশনের উপর উক্ত কোম্পানীকে ১০% অর্থাৎ আলোচ্য ক্ষেত্রে ০.৮০ টাকা উৎসে আয়কর কর্তন/সংগ্রহ করতে হবে।

উদাহরণ-২ঃ
XYZ কোম্পানী লিঃ তার নিয়োজিত এক বা একাধিক পরিবেশক বা অন্য কোন ব্যক্তিকে পণ্যের বাজারজাতকরণের জন্য বিক্রয়মূল্য ১০০ টাকার উপর ১০% কমিশন বা ফি প্রদান করেন অথবা ১০% ডিসকাউন্ট গ্রাহ্য (Allow ) করেন। এ ক্ষেত্রে 53E ধারার (1)  উপ-ধারার বিধান মতে উক্ত কমিশন, ফি, বা ডিসকাউন্ট এর উপর উক্ত কোম্পানীকে ১০% অর্থাৎ আলোচ্য ক্ষেত্রে ১ টাকা উৎসে আয়কর কর্তন/সংগ্রহ করতে হবে।

উদাহরণ-৩ঃ
MNO কোম্পানী লিঃ তার নিয়োজিত এক বা একাধিক পরিবেশক বা অন্য কোন ব্যক্তির নিকট চুক্তির অধীনে পণ্য বিক্রয় করেছেন ৮৫ টাকা মূল্যে। এই পণ্যের সর্বোচ্চ খুচরা মূল্য কোম্পানী নিজেই নির্ধারণ করেছে ১০০ টাকা। কোম্পানী উক্ত পরিবেশককে পণ্য বাজারজাতকরণের জন্য কোন কমিশন, ফি, বা ডিসকাউন্ট প্রদান করে না। নতুন প্রবর্তিত উপ-ধারা (2)  এর বিধান অনুযায়ী উক্ত কোম্পানী তার পরিবেশকের নিকট থেকে উক্ত পরিবেশকের আয়ের বিপরীতে নিম্নোক্ত পদ্ধতিতে উৎস পর্যায়ে অগ্রিম আয়কর হিসাব করে তা সংগ্রহ করবেন ঃ

          ABC কোম্পানী কর্তৃক পণ্যের নির্ধারিত খুচরা মূল্য ১০০ টাকা
বাদঃ ABC কোম্পানী কর্তৃক পরিবেশকের নিকট
          বিক্রিত পণ্যের বিক্রয়মূল্য                            ৮৫ টাকা        
পার্থক্য                                        ১৫ টাকা
সুতরাং ধারা 53E(2) অনুযায়ী উৎসে সংগ্রহযোগ্য করের পরিমাণ এক্ষেত্রে দাড়ায় ১৫ টাকা X ৫% = ০.৭৫ টাকা।

১৭। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা 53FF [Real Estate/Land Development ব্যবসা হতে উৎসে কর কর্তন সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

রিয়েল এষ্টেট ডেভেলপার বা ভূমি উন্নয়ন ব্যবসায় নিয়োজিত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আবাসিক বা বাণিজ্যিক ব্যবহারের উদ্দেশ্যে নির্মিত দালানের বিপরীতে উৎসে কর কর্তনের হার হ্রাস করে নিম্নরূপ পুননির্ধারণ করা হয়েছেঃ


এলাকার বিবরণ

প্রতি বর্গমিটারে কর হার (টাকা)  

আবাসিক

অনাবাসিক

গুলশান মডেল টাউন, বনানী, বারিধারা, মতিঝিল বানিজ্যিক এলাকা এবং দিলকুশা বানিজ্যিক এলাকা

১,৬০০/-

৬,৫০০/-

ধানমন্ডি আ/এ, ডিওএইচএস, মহাখালী, লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি, উত্তরা মডেল টাউন, বসুন্ধরা আ/এ, ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, কারওয়ান বাজার বা/এ, চট্টগ্রামের পাঁচলাইশ আ/এ, খুলশি আ/এ, আগ্রাবাদ ও নাসিরাবাদ এলাকা

১,৫০০/-

৫,০০০/-

অন্যান্য এলাকা 

৬০০/- 

১,৬০০/-

১ জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৮। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 75 এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর অধ্যাদেশের 75 ধারায় উপ-ধারা (2) এর ক্লজ (d) এর সাব-ক্লজ (i) এ নতুন proviso সন্নিবেশ করা হয়েছে। এ নতুন বিধানের আলোকে একজন বৈতনিক করদাতা অথবা ৩ লক্ষ টাকার উর্ধ্বে ব্যবসা আয় নেই এরূপ করদাতার ক্ষেত্রে আয়কর রিটার্নের সাথে জীবন যাত্রার মান সম্পর্কিত তথ্য বিবরণী বা IT 10BB  দাখিল ঐচ্ছিক করা হয়েছে। তবে কোন কোম্পানীর শেয়ার হোল্ডার পরিচালকসহ অন্যান্য করদাতার জন্য জীবন যাত্রার মান সম্পর্কিত তথ্য বিবরণী বা IT 10BB বাধ্যতামূলকভাবে দাখিল করার বিধান যথারীতি বহাল আছে।

২০১৩-২০১৪ কর বছর থেকে পরিবর্তিত এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

১৯। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ধারা 116 এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে ধারা 116 এর উপধারা (1) এ সংশোধনী আনা হয়েছে। পরিবর্তিত বিধান অনুযায়ী মহাপরিচালক, কর পরিদর্শন পরিদপ্তর, কর কমিশনার, মহা পরিচালক, সিআইসি, এবং পরিদর্শী যুগ্ম কর কমিশনার আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর অধীন কর নির্ধারণ যোগ্য যে কোন ব্যক্তির বিরূদ্ধে তদন্ত কার্য পরিচালনা করতে পারবেন বা উক্ত ব্যক্তি বা তদন্ত সংশ্লিষ্ট যে কোন ব্যক্তিকে নির্ধারিত সময় ও স্থানে হাজির হয়ে ইলেক্ট্রনিক তথ্যাদিসহ প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ দাখিলের জন্য বলতে পারবেন।

২০। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এ নতুন ধারা 116A [ আয় ও সম্পদ গোপনকারীর সম্পদ অন্যত্র হস্তান্তর না করার আদেশ সংক্রান্ত] এর সন্নিবেশঃ

অর্থ আইন,২০১৩ এর মাধ্যমে নতুন এ ধারাটি সন্নিবেশিত হয়েছে। এ ধারার বিধান অনুযায়ী কোন করদাতার আয়, বিনিয়োগ ও সম্পদ গোপনের সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া গেলে উক্ত করদাতার সম্পদ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী যে ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে রয়েছে সে ব্যক্তিকে এ সকল সম্পদ ও মূল্যবান সামগ্রী বা তার অংশবিশেষ অন্যত্র স্থানান্তর না করার জন্য মহাপরিচালক সিআইসি বা কর কমিশনার নিম্নবর্ণিত শর্তে লিখিতভাবে আদেশ দিতে পারবেনঃ

  • সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত এ স্থানান্তর বন্ধ করা যাবে।
  • সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে ১ বছর পর্যন্ত এবং পরবর্তীতে রাজস্ব বোর্ডের পূর্বানুমোদন সাপেক্ষে আরো ১ বছর পর্যন্ত স্থানান্তর বন্ধের আদেশ দিতে পারবে।
  • স্থানান্তর বন্ধের সময়কাল গণনাকালে যদি কোন আদালত কর্তৃক স'গিতাদেশ প্রদান করা হয় তাহলে এরূপ স'গিতাদেশের সময়কাল বাদ যাবে।
  • মহাপরিচালক, সিআইসি বা সংশ্লিষ্ট কর কমিশনারের পূর্বানুমতি ব্যতিরেকে এরূপ সম্পদ ও অন্যান্য মূল্যবান সামগ্রী স্থানান্তর করা যাবে না।
  • ১ জুলাই, ২০১৩ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

২১। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 160 [রেফারেন্স দায়েরকালে কর পরিশোধ সংক্রান্ত] এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে মহামান্য হাইকোর্টে রেফারেন্স মামলা দায়েরের ক্ষেত্রে কর পরিশোধ সংক্রান্ত শর্ত সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত বিধান অনুযায়ী নিম্নোক্ত হারে কর পরিশোধের শর্ত আরোপ করা হয়েছে-

  • ট্রাইবুনালের আদেশের প্রেক্ষিতে নিরূপিত আয়ের উপর প্রদেয় কর এবং করদাতার রিটার্নে প্রদর্শিত আয়ের উপর প্রযোজ্য করের পার্র্থক্য ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে পার্থক্যের উপর ২৫% এর পরিবর্তে ১৫% হারে আয়কর প্রদান করতে হবে; এবং
  • ট্রাইবুনালের আদেশের প্রেক্ষিতে নিরূপিত আয়ের উপর প্রদেয় কর এবং করদাতার রিটার্নে প্রদর্শিত আয়ের উপর প্রযোজ্য করের পার্র্থক্য ১০ লক্ষ টাকার অধিক হলে পার্থক্যের উপর ৫০% এর পরিবর্তে ২৫% হারে আয়কর প্রদান করতে হবে।
  • ১ জুলাই, ২০১৩ বা তৎপরবর্তীতে দায়েরকৃত রেফারেন্স মামলার ক্ষেত্রে পরিবর্তিত এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

২২। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা ১৬৪ এর সংশোধনঃ

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১১৬ ধারার উপ-ধারা (1) এর অধীন চাহিত তথ্য প্রদান অথবা ১১৬অ ধারার (1) উপ-ধারার অধীন আয় ও সম্পদ গোপনকারী সম্পদ অন্যত্র স্থানান্তর না করার জন্য প্রদত্ত আদেশ পরিপালনে ব্যর্থ হলে দায়ী ব্যক্তির বিরূদ্ধে prosecution এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাবে।

২৩। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর ধারা 184A এর সংশোধনঃ

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ অনুযায়ী কতিপয় ক্ষেত্রে করদাতা সনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) সনদ দাখিলের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আনীত সংশোধনীর ফলে উপ কর কমিশনার কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যায়নপত্র এবং সর্বশেষ কর বর্ষের আয়কর রিটার্নের প্রাপ্তি স্বীকার পএের পাশাপাশি Computer System এর মাধ্যমে প্রদত্ত Computer Generated সাটিফিকেটও নির্ধারিত এ সকল ক্ষেত্রে দাখিল করা যাবে। তবে একজন পুরাতন করদাতাকে এ ক্ষেত্রে টিআইএন এবং কর নির্ধারণ সম্পন্নের তথ্য সম্বলিত উপ কর কমিশনারের প্রত্যায়নপত্র দাখিল করতে হবে।

উদাহরণ-১ঃ

জনাব হারম্নণ কয়েক বৎসর আগে একটি জমি ক্রয় করেন। জমি ক্রয়কালে তিনি একটি টিআইএন সনদ গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি কোন আয়কর রিটার্ন দাখিল করেননি। এ বছর তিনি ঠিকাদারী কাজ করার জন্য একটি টেন্ডারে অংশ গ্রহণ করেছেন। টেন্ডার দাখিলের সময় তিনি তাঁর কর নির্ধারণ সম্পন্নের তথ্যসহ উপ কর কমিশনারের প্রত্যয়নপত্র দাখিল না করে পুরাতন টিআইএন সনদের কপি দাখিল করেছেন। এক্ষেত্রে তিনি আইন অনুযায়ী সঠিক প্রত্যয়নপত্র দাখিল করেননি।

উদাহরণ-২ঃ

মিসেস রহিমা একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। তাঁর কোন আয়কর নথি বা টিআইএন নেই। অনেক বৎসরের সঞ্চিত অর্থ দিয়ে তিনি পৌরসভার আওতার মধ্যে অবস্থিত একখন্ড জমি ক্রয়ের চুক্তি করেছেন। জমি ক্রয়ের দলিল সম্পাদনের পূর্বে তিনি অন-লাইনে টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করে Computer Generated একটি টিআইএন সনদ সংগ্রহ করেন এবং ক্রয় দলিল রেজিস্ট্রিকালে তিনি এই সনদের কপি দাখিল করেন। এ ক্ষেত্রে তিনি আইন অনুযায়ী সঠিক সনদ দাখিল করেছেন।

২৪। আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর Part A ও Part B এর সংশোধনঃ

(1) আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর Part A এর Paragraph 11A, 35, 39  ও 42 সংশোধনের মাধ্যমে-

  • লভ্যাংশ আয় বাবদ কর অব্যাহতি সীমা ৫ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ১০ হাজার টাকায় উন্নীত করা হয়েছে; কর বছর ২০১৩-২০১৪ থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
  • হস্তশিল্পজাত পণ্য রপ্তানী থেকে প্রাপ্ত আয়ের কর অব্যাহতি সুবিধা ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। ফলে ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত এ শিল্পের রপ্তানী আয়ের উপর কোন কর প্রদেয় হবে না।
  • পণ্য উৎপাদনে নিয়োজিত ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগ (SME) এর আয়ের উপর কর অব্যাহতির জন্য টার্ণ ওভার সীমা ২৪ লক্ষ টাকা হতে ৩০ লক্ষ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। ফলে, ২০১৩-২০১৪ করবর্ষ হতে যে সকল SME এর টার্ন ওভার ৩০ লক্ষ টাকার অধিক হবে না সে সকল SME এর আয় কর অব্যাহতি প্রাপ্ত হবে।
  • হাঁস-মুরগীর খামার থেকে প্রাপ্ত আয় কর অব্যাহতির সুবিধা জুন, ২০১৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ বিধানের ফলে ১ জুলাই, ২০১৩ থেকে ৩০,জুন ২০১৫ পর্যন্ত মেয়াদে উদ্ভূত আয় কর অব্যাহতি প্রাপ্ত হবে। এ সংক্রান্ত অন্যান্য শর্ত পূর্বের ন্যায় অপরিবর্তিত থাকবে।

(2)     আয়কর অধ্যাদেশের Sixth Schedule এর Part B এর Paragraph 10 এর clause (1) এর sub-clause (b)  সংশোধনের মাধ্যমে-

  • আইসিবি ও আইসিবির সাবসিডিয়ারী কোম্পানীর পাশাপাশি কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ইস্যুকৃত ইউনিট সার্টিফিকেট ও মিউচুয়াল ফান্ডে বিনিয়োগকৃত অর্থও বিনিয়োগজনিত কর রেয়াত (Investment Tax Credit) অনুমোদনের উপযুক্ত গণ্য করা হয়েছে । ২০১৩-২০১৪ কর বছর থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

২৫। আয়কর অধ্যাদেশ,১৯৮৪ এর অপরাপর সংশোধনীসমূহঃ

(ক) অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে শেয়ারের প্রিমিয়াম মূল্যের উপর কর র্ধায্য সংক্রান্ত আয়কর অধ্যাদেশের 16E ধারা বিলোপ করা হয়েছে। একই ভাবে এ সংক্রান্ত উৎসে কর কর্তনের ধারা 53L বিলোপ করা হয়েছে। এ বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট ধারা 49 এর উপ-ধারা (1) এর ক্লজ (zu) এবং ধারা 82C এর উপ-ধারা (2) এর ক্লজ (r) বিলুপ্ত করা হয়েছে।
(খ) কোমল পানীয় এর ষ্ট্যাম্প/ব্যান্ডরোলের বিপরীতে উৎসে কর সংগ্রহের নতুন ধারা 52S সন্নিবেশিত হওয়ার প্রেক্ষাপটে ধারা র এর উপ-ধারা (1) এর ক্লজ (zz) এ কোমল পানীয় উৎপাদনকারীকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে।
(গ) সিআইস্থির সাংগঠনিক কাঠামোর পরিবর্তন জনিত কারণে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে আয়কর অধ্যাদেশের 124 ধারার উপ-ধারা (2) এর proviso এর “Deputy Director General” পদবীর পরিবর্তে “Director General” পদবী প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

২৬। কর অব্যাহতি সংক্রান্ত কতিপয় প্রজ্ঞাপনঃ

(ক) পাট জাত দ্রব্যের আয়করের হারঃ       
বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী পাটজাত দ্রব্য উৎপাদনে নিয়োজিত কোন শিল্পের আয়ের ক্ষেত্রে ১৫% হারে কর আরোপিত হয়। এ বিধানের মেয়াদ ৩০ জুন, ২০১৩ এর পরিবর্তে ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এস,আর,ও নং ২০৬-আইন-আয়কর/২০১৩, তারিখ: ১ জুলাই, ২০১৩ জারী করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রজ্ঞাপন এস,আর,ও নং ২০৬-আইন/আয়কর/২০০৮ তারিখ: ৩০ জুন ২০০৮ সংশোধন করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-১ )।

(খ) সূতা উৎপাদনসহ কতিপয় খাতের আয়করের হারঃ
বিদ্যমান বিধান অনুযায়ী সূতা উৎপাদন, সূতা ডাইয়িংসহ কতিপয় খাতের আয়ের ক্ষেত্রে ১৫% হারে কর আরোপিত হয়। এ বিধানের মেয়াদ ৩০ জুন, ২০১৩ এর পরিবর্তে ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ লক্ষ্যে এস,আর,ও নং ২০৭-আইন-আয়কর/২০১৩, তারিখ: ১ জুলাই, ২০১৩ জারী করা হয়েছে এবং প্রজ্ঞাপন এস,আর,ও নং ২০৭-আইন/আয়কর/২০০৮ তারিখ: ৩০ জুন ২০০৮ সংশোধন করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-২)।

(গ) মৎস্য খামার, গবাদি পশুর খামারসহ কিছু আয়ের উপর ৫% হারে করারোপঃ
এস,আর,ও নং ২৩৮-আইন-আয়কর/২০১১, তারিখ: ৬ জুলাই, ২০১১ এর মাধ্যমে ১ জুলাই, ২০১১ থেকে ৩০ জুন ২০১৩ পর্যন্ত মৎস্য খামার এবং গবাদি পশুর খামারসহ কতিপয় নির্দিষ্ট খাতের অর্জিত আয়ের উপর ৫% কর আরোপনের বিধান ছিল। উক্ত এস, আর, ও এর মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধি না করে নতুনভাবে আরো কিছু খাতকে অন্তর্ভূক্ত করে ১ জুলাই, ২০১৩ হতে ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত সময়কালে কতিপয় নির্দিষ্ট খাত হতে অর্জিত আয়ের উপর ৩% কর আরোপনের বিধান করে এস,আর,ও নং ২০৮-আইন-আয়কর/২০১৩, তারিখ: ১ জুলাই, ২০১৩ জারী করা হয়েছে। খাতগুলো নিম্নরূপঃ

  • মৎস্য খামার;
  • pelleted poultry feed উৎপাদন;
  • মাছ, চিংড়ি ও গবাদি পশুর pelleted feed উৎপাদন;
  • বীজ উৎপাদন;
  • স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বীজ বিপণন;
  • গবাদি পশুর খামার;
  • দুগ্ধ এবং দুগ্ধজাত দ্রব্যের খামার;
  • ব্যাঙ উৎপাদন খামার;
  • উদ্যান খামার প্রকল্প (horticulture);
  • তূঁত গাছের চাষ;
  • মৌমাছি চাষ প্রকল্প;
  • রেশম গুটিপোকা পালনের খামার;
  • ছত্রাক (mushroom) উৎপাদন খামার; এবং
  • ফুল ও লতাপাতার চাষ (floriculture) ।

১ জুলাই, ২০১৩ থেকে ৩০ জুন, ২০১৫ পর্যন্ত উপরোক্ত খাতে অর্জিত আয়ের উপর ব্যক্তি, কোম্পানী নির্বিশেষে সকলের উপর প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ৩% কর আরোপিত হবে। অর্থাৎ ২০১৪-২০১৫ কর বছর থেকে ৩% হারে কর আরোপিত হবে (পরিশিষ্ট-৩)।
উল্লেখ্য, উক্ত খাতগুলোর মধ্যে pelleted poultry feed উৎপাদন হতে অর্জিত আয়ের উপর ইতোপূর্বে সাধারণ হারে কর আরোপিত হতো।

(ঘ) একক বা যৌথ মালিকানায় একের অধিক মোটর কার বা জীপের ফিটনেস নবায়ন কালে প্রদেয় আয়করের হার বৃদ্ধিঃ

মোটর কার, জীপ বা মাইক্রোবাসের মালিকগনকে গাড়ী রেজিষ্ট্রেশন বা ফিটনেস নবায়নকালে নির্ধারিত হারে আয়কর পরিশোধ করতে হয়। এস,আর,ও নং-২২০-আইন/আয়কর/২০১২তারিখঃ ২৭ জুন, ২০১২ এর মাধ্যমে এ সংক্রান্ত প্রদেয় আয়করের হার নিম্নরূপ পুননির্ধারণ করা হয়েছিল, যা এখনও বিদ্যমান আছেঃ


ক্রমিক নং

গাড়ীর ধরণ

প্রদেয় আয়করের হার

(ক)

১৫০০ সিসি পর্যন্ত প্রতিটি মোটরকার এর জন্য

টাকা ১৫,০০০.০০

(খ)

২০০০ সিসি পর্যন্ত প্রতিটি মোটরকার এর জন্য

টাকা ৩০,০০০.০০

(গ)

২০০০ সিসির উপরে প্রতিটি মোটরকার এর জন্য

টাকা ৫০,০০০.০০     

(ঘ)

২৮০০ সিসি পর্যন্ত প্রতিটি জীপ এর জন্য

টাকা ৬০,০০০.০০

(ঙ)

২৮০০ সিসির উপরে প্রতিটি জীপ এর জন্য

টাকা ১,০০,০০০.০০

(চ)

মাইক্রোবাস প্রতিটির জন্য

টাকা ১৫,০০০.০০

এস,আর,ও নং-২০৯-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ১ জুলাই, ২০১৩ এর মাধ্যমে এস, আর, ও নং ১৮৭-আইন/২০০৯ তারিখঃ ১ জুলাই, ২০০৯ অধিকতর সংশোধন পূর্বক একক বা যৌথ মালিকানায় একের অধিক মোটর কার বা জীপ বা মাইক্রোবাস থাকলে, দ্বিতীয় বা তদূর্ধ্ব গাড়ীর ক্ষেত্রে প্রতিটির জন্য উপরোক্ত নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ৫০% হারে আয়কর প্রদানের বিধান করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-৪)।

  • ১ জুলাই, ২০১৩ থেকে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

উদাহরণ-১ঃ জনাব লতিফের একটি ২০০০ সিসি মোটর কার থাকা অবস্থায় তিনি একটি ২৮০০ সিসি জীপ ক্রয় করেছেন। তাঁর একক নামে একাধিক গাড়ী থাকায় গাড়ী দুইটির ফিটনেস নবায়নকালে তাঁকে ২০০০ সিসি মোটর কারের জন্য ৩০,০০০/-টাকা এবং ২৮০০ সিসি জীপের জন্য ( ৬০,০০০/-+৩০,০০০/-) = ৯০,০০০/- অর্থাৎ দু’টি গাড়ীর জন্য মোট ( ৩০,০০০/-+ ৯০,০০০/-) = ১,২০,০০০/- টাকা আয়কর প্রদান করতে হবে।

          উদাহরণ-২ ঃ জনাব তাহমিদ ও মিসেস তাহমিদের যৌথ নামে একটি ২০০০ সিসি মোটর কার থাকা অবস্থায় মিসেস তাহমিদ নিজ নামে আরো একটি ২০০০ সিসি মোটর কার ক্রয় করেছেন। মিসেস তাহমিদের যৌথ ও একক নামে একাধিক গাড়ী থাকায় গাড়ী দুইটির ফিটনেস নবায়নকালে যৌথ মালিকানাধীন ২০০০ সিসি মোটর কারের জন্য ৩০,০০০/-টাকা এবং একক মালিকানাধীন ২০০০ সিসি মোটর কারের জন্য ( ৩০,০০০/-+১৫,০০০/-) = ৪৫,০০০/-টাকা অর্থাৎ দু’টি গাড়ীর জন্য মোট ( ৩০,০০০/-+ ৪৫,০০০/-) = ৭৫,০০০/- টাকা আয়কর প্রদান করতে হবে।

(ঙ) বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠনের আয়ের উপর করারোপঃ
দেশের বিভিন্ন বাণিজ্য সংগঠন বা বণিক সমিতি বা শিল্প সমিতির আয়ের উপর করারোপ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন নং এস.আর.ও. নং-২১৬-আইন/আয়কর/২০১২, তারিখঃ ২৭ জুন, ২০১২ রহিতক্রমে নতুন এস.আর.ও. নং-২১০-আইন/আয়কর, তারিখঃ ১ জুলাই, ২০১৩ জারী করা হয়েছে। এর মাধ্যমে এ সকল সংগঠনের সুদ বা মুনাফা আয় এবং ব্যবসা আয় ব্যতীত অন্যান্য সকল আয়কে করমুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে এ সকল সংগঠনের শুধুমাত্র সুদ বা মুনাফা আয় এবং ব্যবসা আয় থাকলে তার উপর প্রযোজ্য হারে কর প্রদান করতে হবে (পরিশিষ্ট-৫)।

১ জুলাই, ২০১৩ থেকে উদ্ভূত আয়ের ক্ষেত্রে অর্থাৎ ২০১৪-২০১৫ কর বছর থেকে এ প্রজ্ঞাপনের বিধান প্রযোজ্য হবে। অন্যদিকে ২০১৩-২০১৪ কর বর্ষের জন্য বাণিজ্যিক সংগঠনগুলোর আয়ের ক্ষেত্রে এস.আর.ও. নং-২১৬-আইন-আয়কর/২০১২, তারিখঃ ২৭ জুন, ২০১২ এর বিধান প্রযোজ্য হবে।

(চ) প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর আয়ঃ
করমুক্ত।
প্রজ্ঞাপন এস, আর, ও নং ২৩৫-আইন/আয়কর/২০১১, তারিখঃ ৬ জুলাই, ২০১১ এর মাধ্যমে এস,আর,ও নং ১৮৮-আইন/আয়কর/২০০৯ তারিখ: ০১/০৭/২০০৯ এ এর মেয়াদ ৩০ জুন, ২০১২ এর পরিবর্তে ৩০ জুন, ২০১৩ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছিল। এই মেয়াদ পরবর্তীতে বৃদ্ধি না করে তদস'লে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী এবং কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানীর জন্য দুটি পৃথক এস,আর,ও জারী করা হয়েছে, যা নিম্নরূপঃ

  •  কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানীঃ এস,আর,ও নং ২১১-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ১ জুলাই, ২০১৩ এর মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী ব্যতীত অন্যান্য প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিপরীতে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যান্য শর্তের সঙ্গে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৪ এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্নর শর্ত আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী ব্যতীত অপরাপর প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীকে কর অব্যাহতির সুবিধা পেতে হলে ৩১ ডিসেম্বর, ২০১৪ এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্ন করতে হবে (পরিশিষ্ট-৬)।
  • কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানীঃ এস,আর,ও নং ২১৩-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ১ জুলাই, ২০১৩ এর মাধ্যমে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর শুধুমাত্র বিদ্যুৎ উৎপাদনের বিপরীতে কর অব্যাহতি সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অন্যান্য শর্তের সঙ্গে ৩০ জুন ২০২০ এর মধ্যে বিদ্যূৎ পস্নান্ট স্থাপনে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার শর্ত এবং ৩০ জুন ২০২৩ এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্নর শর্ত আরোপ করা হয়েছে। অর্থাৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীকে কর অব্যাহতির সুবিধা পেতে হলে ৩০ জুন, ২০২০ এর মধ্যে বিদ্যুৎ পস্নান্ট স্থাপনে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে এবং ৩০ জুন, ২০২৩ এর মধ্যে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরম্ন করতে হবে (পরিশিষ্ট-৮)।

          কর অবকাশপ্রাপ্তঃ অন্যদিকে ১ জানুয়ারী, ২০১৫ থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদনে যাবে এ জাতীয় কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানী ব্যতীত অপরাপর প্রাইভেট পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানীর আয় শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছরের জন্য কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়েছে। এ সকল কোম্পানীর

  • প্রথম ৫ বছরের আয় ১০০% করমুক্ত;
  • পরবর্তী ৩ বছরের আয় ৫০% করমুক্ত; এবং
  • পরবর্তী ২ বছরের আয় ২৫% করমুক্ত।

এ লক্ষ্যে এস, আর, ও নং ২৩৬-আইন/আয়কর/২০১১, তারিখ: ৬ জুলাই, ২০১১ রহিতক্রমে এস, আর, ও নং ২১২-আইন/আয়কর/২০১৩, তারিখ: ১ জুলাই, ২০১১ জারী করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-৭)।

২৭। আয়কর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (পদ্ধতি) বিধিমালা, ২০১২ এর অধিকতর সংশোধনঃ

প্রজ্ঞাপন এস, আর, ও নং ২০৫-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ১ জুলাই ২০১৩ এর মাধ্যমে ”আয়কর বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি (পদ্ধতি) বিধিমালা, ২০১২” এর অধিকতর সংশোধন করা হয়েছে। অন্যান্য সংশোধনী ছাড়াও উক্ত এস, আর, ও এর মাধ্যমে-

  • বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ বা আপীল বিভাগে বিচারাধীন মামলায় বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কোর্টের অনুমতির জন্য আবেদন দাখিলের বিধান করা হয়েছে; এবং
  • সংশ্লিষ্ট কোর্টের অনুমতি লাভের পর জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের দ্বিতীয় সচিব ( ট্যাক্সেস লিগ্যাল ) এর নিকট বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির আবেদন দাখিলের বিধান করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-৯)।

২৮। আয়কর বিধিমালা সংশোধনঃ

প্রজ্ঞাপন এস, আর, ও নং ২৬৮-আইন/আয়কর/২০১৩ তারিখঃ ৩০ জুলাই, ২০১৩ এর মাধ্যমে আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর কতিপয় বিধি নিম্নরূপ সংশোধন করা হয়েছে (পরিশিষ্ট-১০) ঃ

(ক) উৎসে কর কর্তন/আদায়ঃ বিধি 16 ও 17D সংশোধনপূর্বক যথাক্রমে জ্বালানী তেল সরবরাহের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর কর্তনের হার হ্রাস এবং চা নিলামের ক্ষেত্রে উৎসে আয়কর আদায়ের হার বৃদ্ধি করা হয়েছে, যা ইতিপূর্বে অনুচ্ছেদ ৯ ও ১৫ তে উল্লেখ করা হয়েছে।

 (খ) আয়কর রিটার্ন ও সম্পদ বিবরণী সহজীকরণঃ

  • বিধি ২৪ সংশোধনপূর্বক যে সকল ব্যক্তি করদাতার ব্যবসা বা পেশাখাতে আয় রয়েছে ও এরূপ আয়ের পরিমাণ ৩ লক্ষ টাকার বেশী নয় সে সকল করদাতার জন্য একটি আয়কর রিটার্ন ফরম (IT-11CHA) এবং যে সকল ব্যক্তি করদাতার বেতন খাত হতে আয় রয়েছে সে সকল করদাতার জন্য পৃথক আরেকটি আয়কর রিটার্ন ফরম (IT-11UMA) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি আয়কর রিটার্ন ১ পাতা বিশিষ্ট। উভয় ধরণের করদাতা ইচ্ছা করলে পূর্বের প্রচলিত আয়কর রিটার্ন ফরম (IT-11GAGA) ব্যবহার করতে পারবেন।
  • একইভাবে যে সকল ব্যক্তি করদাতার ব্যবসা বা পেশাখাতে আয় রয়েছে ও এরূপ আয়ের পরিমাণ ৩ লক্ষ টাকার বেশী নয় সে সকল করদাতার জন্য একটি সম্পদ ও দায়ের বিবরণী (IT-10BBBB) এবং যে সকল ব্যক্তি করদাতার বেতন খাত হতে আয় রয়েছে সে সকল করদাতার জন্য পৃথক আরেকটি সম্পদ ও দায়ের বিবরণী (IT-10BBB) প্রণয়ন করা হয়েছে। প্রত্যেকটি সম্পদ ও দায়ের বিবরণী ১ পাতা বিশিষ্ট। উভয় ধরণের করদাতা ইচ্ছা করলে পূর্বের প্রচলিত অপর সম্পদ ও দায়ের বিবরণী (IT-10B) ব্যবহার করতে পারেন।

(গ) স্পট এ্যাসেসমেন্টঃ
আয়কর বিধিমালার বিধি 38B এর উপবিধি (2) সংশোধনের মাধ্যমে স্পট এ্যাসেস্‌মেন্টের করহার সংশোধন করা হয়েছে। পরিবর্তিত বিধান অনুযায়ী কর হার নিম্নরূপঃ

  • ব্যবসার ক্ষেত্রেঃ

প্রারম্ভিক পুঁজির পরিমাণ

আয়করের পরিমাণ (টাকা)

প্রযোজ্য এলাকা

৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

১,০০০/-

সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা ব্যতীত অন্যান্য এলাকা 

৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

২,০০০/-

জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশ ব্যতীত অন্যান্য এলাকা

৮ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

৩,০০০/-

যে কোন এলাকা

১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

৫,০০০/-

যে কোন এলাকা

১৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত

১০,০০০/-

যে কোন এলাকা

  • পেশার ক্ষেত্রেঃ

পেশায় নিয়োজিত থাকার সময়কাল

করের পরিমাণ

প্রযোজ্য এলাকা

৩ বৎসর পর্যন্ত

১,০০০/-

সিটি কর্পোরেশন ও জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা ব্যতীত অন্যান্য এলাকা 

৪ বৎসর পর্যন্ত

২,০০০/-

জেলা সদরে অবস্থিত পৌরসভা এবং সিটি কর্পোরেশন ব্যতীত অন্যান্য এলাকা       

৫ বৎসর পর্যন্ত

৩,০০০/-

যে কোন এলাকা

১০ বৎসর পর্যন্ত

৫,০০০/-

যে কোন এলাকা

  • পরিবর্তিত এ হার ২০১৩-২০১৪ কর বছর হতে প্রযোজ্য হবে।
  • অন্যদিকে, বিধি ২৪(১ধধধ) সংশোধনের মাধ্যমে স্পট এ্যসেসমেন্টের আয়কর রিটার্নে অনুরূপ কর হার সংশোধন করা হয়েছে।
  • যে সকল করদাতা ইতোপূর্বে স্পট এ্যাসেসমেন্টের সুযোগ গ্রহণ করেছেন কিন্তু এখনও পরবর্তী ২ বছর অতিক্রান্ত হয়নি সে সকল করদাতা তাদের ব্যবসার প্রারম্ভিক পুঁজি এবং পেশায় নিয়োজিত থাকার সময়কালের ভিত্তিতে উক্ত ২ বছর অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত পরিবর্তিত কর হার অনুযায়ী কর পরিশোধ করতে পারবেন।

(ঘ) বেতন খাতে আয় নিরূপনের ক্ষেত্রে করমুক্ত বাড়ীভাড়া ভাতার অংক এবং যাতায়াত ভাতার সীমা বৃদ্ধি করে আয়কর বিধি 33A ও 33C সংশোধনঃ

  • আয়কর বিধি ৩৩অ সংশোধন করে বেতন খাতে আয় নিরূপনে বাড়ীভাড়া ভাতার অব্যাহতি সীমা মাসিক ১৫ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ২০ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে এ সীমা মূল বেতনের ৫০% এর অধিক হবে না এরূপ বিধান পূর্বের ন্যায় বহাল আছে। কর বছর ২০১৩-২০১৪ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।
  • আয়কর বিধি ৩৩ঈ সংশোধন করে বেতন খাতে আয় নিরূপনে যাতায়াত ভাতার অব্যাহতি সীমা বাৎসরিক ২৪ হাজার টাকা হতে বৃদ্ধি করে ৩০ হাজার টাকায় নির্ধারণ করা হয়েছে। কর বছর ২০১৩-২০১৪ হতে এ বিধান প্রযোজ্য হবে।

(ঙ)TIN সংক্রান্ত বিধি 64B এর সংশোধনঃ
আয়কর বিধি 64B সংশোধনের মাধ্যমে TIN আবেদন সংক্রান্ত পদ্ধতিতে নিম্নরূপ উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা হয়েছেঃ

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে আবেদন করার বিধান করা হয়েছে (ওয়েব সাইটের ঠিকানাঃ WWW.incometax.gov.bd)
  • আবেদনকারীকে ওয়েবসাইটে বর্ণিত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে।
  • পাশাপাশি নির্ধারিত ফরমে উপ কর কমিশনারের নিকটও আবেদন দাখিল করা যাবে।
  • আবেদন পত্রের ফরমেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে।

          পরিবর্তিত ফরমটি পরিশিষ্ট- ১০ এ দেখানো হয়েছে।

অর্থ আইন, ২০১৩ এর মাধ্যমে আনীত আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ ও আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এর সংশোধনী/পরিবর্তনসমূহ এবং নতুন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনসমূহ স্পষ্টীকরণের উদ্দেশ্যে এ পরিপত্র প্রণয়ন করা হয়েছে। এ পরিপত্রের কোন বক্তব্য বা উপস্থাপন আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪, আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এবং নতুন জারীকৃত প্রজ্ঞাপনের সাথে সাংঘর্ষিক হলে বা কোন মুদ্রণজনিত ত্রম্নটির কারণে অস্পষ্টতা দেখা দিলে আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪, আয়কর বিধিমালা, ১৯৮৪ এবং মূল প্রজ্ঞাপনসমূহ প্রাধান্য পাবে।

  ( মোঃ ইকবাল হোসেন )
প্রথম সচিব ( কর নীতি )