আয়কর আইনে কি ধরনের আয় হিসেবে আনতে হবে অর্থাৎ আয়ের খাতসমূহ : ব্যবসা বা পেশা হতে আয়

আয়কর অধ্যাদেশের ধারা-২০ মোতাবেক আয়কর ধার্য্যরে জন্য এবং মোট আয় নির্ণয়ের জন্য সকল আয়কে নিম্নেবর্ণিত খাতে বিভক্ত করে হিসাবে করতে হবে, যথাঃ

(১) বেতন

(২) নিরাপত্তা (সিকিউরিটির) উপর সুদ
(৩) গৃহ সম্পত্তি হতে  আয়
(৪) কৃষি আয়

(৫) ব্যবসা বা পেশা হতে আয়ঃ
ব্যক্তি করদাতা ব্যবসার জন্য হিসাবের খাতাপত্র রাখলে হিসাব বিবরণী অনুযায়ী আয়  দেখাতে হবে। অন্যথায়, আয় ব্যয় বিবরণী অনুযায়ী আয় দেখাতে হবে। আয়কর  রিটার্নের  সাথে  ব্যবসা  বা  পেশা  আয়ের  উৎপাদন  হিসাব,  বাণিজ্যিক হিসাব, লাভ ও ক্ষতি হিসাব এবং স্থিতিপত্র বা আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণী (যা প্রযোজ্য) সংযোজন করতে হবে। ব্যবসা বা পেশার গ্রস প্রাপ্তি বা বিক্রয় হতে ব্যবসা  সংশ্লিষ্ট সকল খরচ বাদ দিয়ে নীট আয় নির্ণয় করতে হয়। উল্লেখ্য যে, করদাতার ব্যক্তিগত খরচ বা ব্যবসা বহির্ভূত ব্যয় এক্ষেত্রে খরচ হিসেবে বাদ দেয়া যাবে না। তাছাড়া ব্যবসার মূলধনী প্রকৃতির খরচও নীট আয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে খরচ হিসেবে বাদ দেয়া যাবে না। নতুন ফরমে তফসিল ২৪সি পূরণ পূর্বক মূল রিটার্নের সাথে সংযুক্ত বা পেশার ধরণ (যেমন, ব্যবসায়ের ক্ষেত্রে গ্রোসারী ব্যবসা, কমিশন ব্যবসা, জুয়েলারী ব্যবসা ইত্যাদি এবং পেশার ক্ষেত্রে  চিকিৎসা, আইন, কনসাল্টেন্সি ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে। ক্রমিক নং-০৪ এ ব্যবসা বা পেশার নাম  (ট্রেড লাইসেন্স অনুযায়ী) উল্লেখ করতে হবে। ক্রমিক নং-০৫ এ ব্যবসা বা পেশার ঠিকানা উল্লেখ করতে হবে। ক্রমিক নং-০৬ হতে ০৯ এ ব্যবসা বা পেশার আয়ের বিবরণ (লাভ ও ক্ষতি হিসাব) উল্লেখ করতে হবে। ব্যবসা বা পেশার গ্রস প্রাপ্তি বা বিক্রয় হতে ব্যবসা সংশ্লিষ্ট সকল খরচ বাদ দিয়ে নীট আয় নির্ণয় করতে হবে। উল্লেখ্য, করদাতার ব্যক্তিগত খরচ বা ব্যবসা বহির্ভূত খরচ গ্রস প্রাপ্তি বা বিক্রয় হতে বাদ দেয়া যাবে না। তাছাড়া ব্যবসার মূলধনী প্রকৃতির খরচও নীট আয় নির্ণয়ের ক্ষেত্রে খরচ হিসেবে বাদ দেয়া যাবে না।
ক্রমিক নং-১০ হতে ২০ এ ব্যবসা বা পেশার স্থিতিপত্র বা আয়-ব্যয়ের হিসাব বিবরণীর তথ্য প্রদান করতে হবে।
করদাতার ব্যবসা বা পেশা খাতে আয় না থাকলে মূল রিটার্নের সাথে তফসিল ২৪সি সংযুক্ত করার প্রয়োজন নেই।
করদাতা  স্টেশনারী  ক্রয়-বিক্রয়ের  ব্যবসায়  নিয়োজিত। ০১/৭/২০১৫ তারিখ হতে ৩০/৬/২০১৬ তারিখ পর্যন্ত তাঁর মোট বিক্রয়ের পরিমাণ ৩০,০০,০০০/-টাকা।  বিক্রিত  মালামালের  ক্রয়মূল্য  ২৪,০০,০০০/-  টাকা,  কর্মচারীর  বেতন ৬০,০০০/-  টাকা, ইলেট্রিক বিল, দোকান ভাড়া, ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন ফিস ও পরিবহন খরচ এর সমষ্টি ১,০০,০০০/- টাকা। তাছাড়া  ফার্নিচার ক্রয় বাবদ ব্যয়
৪০,০০০/- টাকা।
ব্যবসা খাতে নীট আয় পরিগণনা ও করদায় হবে নিম্নরূপঃ
মোট বিক্রয়ের পরিমাণ                                                                                    ৩০,০০,০০০/-
বাদঃ বিক্রিত মালামালের ক্রয়মূল্য --------                                                            ২৪,০০,০০০/-
গ্রস মুনাফা                                                                                                  ৬,০০,০০০/-
বাদঃ অন্যান্য খরচ
কর্মচারীর বেতন -------------------                                                     ৬০,০০০/-
ইলেট্রিক  বিল,  দোকান  ভাড়া,  ট্রেড       
লাইসেন্স নবায়ন ফিস ও পরিবহন খরচ এর সমষ্টি -----------------------        ১,০০,০০০/-
বাদ: অবচয় (depreciation)
ব্যবসায় ব্যবহৃত হবার কারণে ফর্নিচার মূল্য ৪০,০০০/- টাকার
উপর তৃতীয় তফসিল অনুযায়ী ১০% হারে ৪,০০০/- টাকা অবচয়
ভাতা প্রাপ্য হবেন                     ৪,০০০/-
    ব্যবসা খাতে নীট আয় =                                                                               ৪,৩৬,০০০/-

করদাতার নিরূপিত মোট আয় ৪,৩৬,০০০/-  টাকার বিপরীতে ধার্য্যকৃত করের পরিমাণ নিম্নে  পরিগণনা করা হলোঃ

মোট আয় করহার করের পরিমাণ
প্রথম ২,৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত  মোট আয়ের উপর --- শূন্য শূন্য
অবশিষ্ট ১,৮৬,০০০/- টাকা আয়ের উপর- ১০% ১৮,৬০০/-
মোট = ১৮,৬০০/-

অর্থাৎ করদাতাকে প্রদেয় কর  ১৮,৬০০/-  টাকা রিটার্ন দাখিলের  পূর্বে পরিশোধ করতে হবে। ৪৭ নং পৃষ্ঠায় বিবিধ মালের ব্যবসায়ের একটি উদাহরণ উল্লেখ করা হয়েছে।

(৬) ফার্মের আয়ের অংশ
(৭) অন্যান্য উৎস হতে আয়
(৮) মূলধনী আয়
(৯) স্বামী/স্ত্রী বা অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্তানের আয়

About Author

Profile Picture

Md. Jahangir Alam

Leave a Comment