বিনিয়োগের হার, সীমা এবং অনুমোদনের ক্ষাতসমূহ

আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর কর রেয়াত ধারা-৪৪(২)(বি) অনুযায়ী (তফসিল ৩ ও নতুন ফর্মে Schedule-24D অনুসারে)
একজন করদাতা নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে বিনিয়োগ কিংবা দান করলে তিনি বিনিয়োগ ও দানকৃত অংকের ১৫% সরাসরি আয়কর রেয়াত পাবেন। রেয়াত পাওয়ার যোগ্য বিনিয়োগ বা দান প্রচলিত রিটার্ন ফরম আইটি-১১গ এর তফসিল-৩ এ উল্লেখ করতে হবে। কর রেয়াতের জন্য এরকম বিনিয়োগ ও দানের পরিমাণ মোট আয়ের (স্বীকৃত ভবিষ্যৎ তহবিলে নিয়োগকর্তার দান, ৮২সি ধারায় নির্ণিত চুড়ান্ত করদায় এবং হ্রাসকৃত করহার প্রযোজ্য এমন আয় থাকলে তা বাদে) ২৫% অথবা ১,৫০,০০,০০০/- টাকা অথবা প্রকৃত বিনিয়োগ এ তিনটির মধ্যে যেটি কম তার বেশী হতে পারবে না। উল্লেখ্য,যে সকল করদাতা বেতন আয়ের ক্ষেত্রে আইটি-১১ঙ অথবা ব্যবসা বা পেশার আয়ের ক্ষেত্রে আইটি-১১চ ব্যবহার করবেন তাঁদের এরূপ কোন তফসিল পূরণ করতে হবে না। তবে বিনিয়োগ বা দানের প্রমাণপত্র রিটার্নের সাথে সংযুক্ত করতে হবে।

বিনিয়োগের খাতঃ একজন করদাতার বিনিয়োগ ও দানের সম্ভাব্য খাতের তালিকা নীচে দেয়া হলোঃ

* জীবন বীমার প্রিমিয়াম।
* সরকারি কর্মকর্তার প্রভিডেন্ট ফান্ডে চাঁদা।
* স্বীকৃত ভবিষ্য তহবিলে নিয়োগকর্তা ও কর্মকর্তার চাঁদা।
* কল্যাণ তহবিল ও গোষ্ঠী বীমা তহবিলে চাঁদা।
* যেকোন তফসিলি ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ডিপোজিট পেনশন স্কীমে
 বার্ষিক সর্বোচ্চ ৬০,০০০/- টাকা বিনিয়োগ।
* সঞ্চয়পত্র ক্রয়ে বিনিয়োগ।
* বাংলাদেশের ষ্টক এক্সচেঞ্জে তালিকাভূক্ত কোম্পানীর শেয়ার, স্টক,  মিউচ্যুয়াল ফান্ড বা ডিবেঞ্চারে বিনিয়োগ;
* বাংলাদেশ সরকার ট্রেজারী বন্ডে বিনিয়োগ;
* নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে একটি কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ক্রয়ে বিনিয়োগ। এক্ষেত্রে ডেস্কটপ ৫০,০০০/- টাকা এবং ল্যাপটপ ১,০০,০০০/- টাকার যেন বেশি না হয়।
দানঃ
* যাকাত তহবিলে দান।
* জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কোন দাতব্য হাসপাতালে দান।
* প্রতিবন্ধীদের কল্যাণে স্থাপিত প্রতিষ্ঠানে দান।

* মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরে প্রদত্ত দান।
* আগাঁ খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কে দান।
* আহসানিয়া ক্যান্সার হাসপাতালে দান।
* ICDDRB তে প্রদত্ত দান।
* CRP, সাভার এ প্রদত্ত দান।
* সরকার কর্তৃক অনুমোদিত জনকল্যাণমূলক বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দান।
* এশিয়াটিক সোসাইটি, বাংলাদেশ এ দান।
* ঢাকা আহসানিয়া মিশন ক্যান্সার হাসপাতালে দান।
* মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের কোন প্রতিষ্ঠানে অনুদান;
* জাতির জনকের স্মৃতি রক্ষার্থে নিয়োজিত জাতীয় পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে অনুদান;

উদাহরণের সাহায্যে অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগ ভাতার পরিমাণ এবং কর রেয়াত কিভাবে পরিগণনা করা হবে তা নিম্নে দেখানো হলোঃ
(১). ধরা যাক, জনাব সালাউদ্দিন একজন সরকারি বেতনভোগী করদাতা। তাঁর বেতন খাত, গৃহ সম্পত্তি ও সঞ্চয়পত্রের সুদ খাতে আয় রয়েছে। ২০১৬-১৭ কর বছরে উক্ত আয়ের পরিমাণ নিম্নরূপ:

আয়ের খাত পরিমাণ ৳
(ক) বেতন খাতে আয় ৭,১৮,২০০
(খ) ব্যাংক সুদ আয় ১,২০,০০০    
নিয়মিত উৎসের আয় ৮,৩৮,২০০   
(গ) সঞ্চয়পত্রের সুদ খাতে আয় (৮২সি ধারায়) ৫০,০০০
(সঞ্চয়পত্রের সুদ হতে ৫% হারে উৎসে কর কর্তনের  ২,৫০০/-)     
মোট আয় ৮,৮৮,২০০

 

জনাব সালাউদ্দিনের রেয়াত পাওয়ার যোগ্য খাতে মোট প্রকৃত বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল নিম্নরূপ:

ক্রম বিনিয়োগ পরিমাণ (৳)
১. ভবিষ্য তহবিবলে আইন, ১৯২৫ অনুযায়ী প্রযোজ্য ভবিষ্য তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা ৯৬,০০০
২. কল্যাণ তহবিলে প্রদত্ত চাঁদা এবং গোষ্ঠি বীমা স্কীমের কিস্তি ১,০৮০
৩. নতুন সঞ্চয়পত্র ক্রয় ১,০০,০০০
৪. জীবন বীমার কিস্তি প্রদান ১২,০০০
৫. ষ্টক এক্সচেঞ্জ তালিকাভূক্ত কোম্পানীর শেয়ারে বিনিয়োগ ৫,০০০
৬. মোট প্রকৃত বিনিয়োগ, দান ইত্যাদি ২,১৪,০৮০

 

রেয়াত পূর্ববর্তী করদায় হবে নিম্নরূপ:

মোট আয় করের পরিমাণ (৳)
সঞ্চয়পত্রের সুদ বাদে নিয়মিত উৎসের আয় ৮,৩৮,২০০/- এর উপর প্রযোজ্য আয়কর:  
প্রথম ২,৫০,০০০/- টাকা পর্যন্ত মোট আয়ের উপর শূন্য
পরবর্তী ৪,০০,০০০/- টাকার উপর ১০% ৪০,০০০
অবশিষ্ট ১,৮৮,২০০/- টাকা আয়ের উপর ১৫% ২৮,২৩০
সঞ্চয়পত্রের সুদ আয়ের জন্য প্রদেয় কর:  
সঞ্চয়পত্রের সুদ আয় ৫০,০০০/- উপর উৎসে কর্তিত কর ২,৫০০
রেয়াত পূর্ববর্তী করদায় ৭০,৭৩০

 

জনাব সালাউদ্দিনের তথ্য অনুযায়ী রেয়াতের জন্য অনুমোদযোগ্য অংক (eligible amount) হবে:

(ক) মোট অনুমোদনযোগ্য বিনিয়োগ, দান ইত্যাদি ২,১৪,০৮০  
(খ) সঞ্চয়পত্রের সুদ ৮২সি ধারার আয় হওয়ায় উক্ত আয় বিনিয়োগ রেয়াতের অনুমোদনযোগ্য সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ পর্যায়ে বিবেচিত হবে না। তাই অনুমোদনযোগ্য অংক বিবেচনার জন্য উক্ত আয় ব্যতীত মোট আয় দাঁড়ায় (৮,৮৮,২০০-৫০,০০০) = ৮,৩৮,২০০/- টাকা যার উপর ২৫% হারে

 

 

২,০৯,৫৫০

(গ)   ১,৫০,০০,০০০
  অনুমোদনযোগ্য অংক (eligible amount) [(ক) বা (খ) বা (গ), এ তিনটির মধ্যে যেটি কম]   ২,০৯,৫৫০

 

 

About Author

Profile Picture

Golden Bangladesh

Golden Bangladesh is a point of access to information.We present information from diverse sources in a unified way. It is the leading web portal, e-Directory and business guide in Bangladesh.

Leave a Comment